বিয়ের ৭ মাস না যেতেই অন্তঃস্বত্তা স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য মারধর লামায়
॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥
বিয়ে হয়েছে ৭ মাস। দুই মাসের গর্ভবতী গৃহবধূ ইসফাক জাহান ইসমা (১৮)। ৭ লাখ টাকা খরচ করে ধুমধাম করে বিয়ে দিয়েছেন বাবা মা। মেয়ের সুখের আশায় যখন যা সম্ভব তার চাহিদা মিঠানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতেও হলোনা মেয়ের সুখের সংসার। মেয়ের বিয়ের সময় দেয়া ২ ভরি স্বর্ণ মহাজনের দোকানে বন্ধক দিয়েছে শশুর বাড়ির লোকজন। সেই স্বর্ণ ছাড়াতেই মেয়ের মাধ্যমে তার বাবার বাড়ির কাছে দাবি করা হয়েছে আরো ৭০ হাজার টাকা। সোমবার (০৩ অক্টোবর) সেই ৭০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে না পারায় শাশুড়ি শিউলী বেগম, ননদ তামান্না ও মৌসুমী মিলে মেরেছে গৃহবধূ ইসফাক জাহান ইসমা কে।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় লামা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড মধুঝিরি বউবাজার এলাকার মৃত মনির হোসেনের ছেলে আরিয়ান সুমনের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে গৃহবধূ ইসমা’র মা শহর বানু ও ভাই মোঃ ইমাম হোসেন লামা থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে তাদের মেয়েকে উদ্ধার করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মুমূর্ষ ও অজ্ঞান অবস্থায় ইসমা কে লামা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লামা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ বিবি ফাতেমা বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে তার জ্ঞান ফিরে আসে। শরীরে আঘাতে চিহ্ন, বুক ও মাথা ব্যথা থাকায় তাকে ভর্তি দেয়া হয়েছে।
গৃহবধূ ইসমা’র মা শহর বানু কান্নারত অবস্থায় বলেন, এতটাকা খরচ করে মেয়ে বিয়ে দিলাম, তাও মেয়ের সংসার সুখের হলোনা। বিয়ের সময় দেয়া স্বর্ণ বন্ধক দিয়ে, সেই স্বর্ণ ছাড়াতে আজ ৭০ হাজার টাকার জন্য মেয়ে আমার বাড়িতে পাঠায় তারা। আমি টাকা দিতে না পারায় আমার বেয়াইন ও তার দুই মেয়ে মিলে আমার মেয়েকে মারধর করেছে। মেয়ের জামাইয়ের নাম্বারে ফোন করলে সে জানান কক্সবাজারে আছে।
গৃহবধূ ইসমা জানান, আমাকে মারধর ও গলা চিপে ধরলে আমার ছোট ভাই নিষেধ করে। তারা আমার ছোট্ট ভাইটাকেও মারধর করেছে। যৌতুকের টাকার জন্য আমাকে আমার শাশুড়ি ও ননদরা মেরেছে। সোমবার বাবার বাড়ি থেকে এসে দেখি আমার রুমে কোন ফার্ণিচার নেই। শশুর বাড়ির লোকজন আমার রুমের সব ফার্ণিচার গুলো সরিয়ে ফেরেছে। অথচ বিয়ের সময় আমার বাবা-মা ফার্ণিচার বাবদ ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছে।
লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে লামা পৌরসভার মধুঝিরি বউবাজার এলাকা হতে শাশুড়ি ননদের নির্যাতন থেকে গৃহবধূ ইসফাক জাহান ইসমা কে উদ্ধার করি। চিকিৎসা শেষে তাদের আইনী সহায়তার জন্য থানায় আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।