পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালরেয় দপ্তরীর আঁকুতি
আমার মৃত্যুর আগে পেনশনের টাকাটা পাবো তো ?
॥ মোঃ ইসমাইল, পানছড়ি ॥
খাগড়াছড়ির পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালরেয় দপ্তরী অবসরে যাওয়ার দুই বছরের অধিক সময় পার হলেও অবসর সুবিধার কিছুই পায়নি বৃদ্ধ মিজানুর রহমান। শেষ বয়সে এসে বিছানাতেই কাতরাচ্ছেন তিনি। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও জিপি ফান্ড মিলে প্রায় দশ/পনের লক্ষাধিক টাকা জমা রয়েছে তাঁর। তিনি পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (দপ্তরী)। এখন হতাশায় ভুগছেন খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার বাসিন্দা বয়োবৃদ্ধ পাঁচ সন্তানের জনক মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, কোন গ্যাড়াকলে বিগত আড়াই বছর ধরে তার ফাইলটি অচল রয়েছে তার পরিবারের সদস্যদের মাঝেও অজানা। বয়োবৃদ্ধ মিজানুর রহমান টাকার অভাবে চিকিৎসা তো দুরের কথা বাজার থেকে ঔষধ কিনে সেবন করবে সে সামর্থ্যটুকুও নেই। এখন বয়োবৃদ্ধ মিজানের ঝরছে দু’চোখের অশ্রু। মিজানুর রহমান উপজেলার দমদম মাস্টার টিলার মৃত আবদুল মান্নানের সন্তান। তাঁর একটাই আকুতি মৃত্যুর আগে পেনশনের টাকাটা পাবো তো ? তাঁর মেঝো সন্তান মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, বাবা এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সরকারি বিধি মোতাবেক কাগজ পত্রগুলি ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর ডাকযোগে ও ই-মেইলে পাঠানো হয়েছিল। বছর খানেক ধরে কোন খোঁজ খবর নাই দেখে ঢাকা নীলক্ষেত বে-সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট অবসর ভবনে সরেজমিনে গিয়ে যোগাযোগ করি। এ সময় দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন, ডাকযোগে ও ই-মেইলে হবেনা। সব কাগজ পত্রাদি অন লাইনে করতে হবে। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট অন লাইনে আবেদন করেছি। যার আবেদন আইডি এস-৬৫৯২০২২৩৮। কিন্তু আজ একটি বছর পার হলেও কোন খোঁজ খবর নাই। আমার অসুস্থ বাবার একটাই আকুতি অবসর ভাতার টাকাটা যেন দ্রুত পান। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন মিজানুর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
এবিষয়ে পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালরেয় প্রধান শিক্ষক অলি আহমেদ জানান, ১৯৮৭ সালে অত্র প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (দপ্তরী) পদে নিয়োগ পান মিজানুর রহমান। ১৯৯৩ সাল থেকে এমপিও ভুক্ত হন। যার ইনডেক্স নং ২৬৯৯২৯। ২০২০ সালের মার্চ মাসে তিনি অবসরে যান। অবসরে যাওয়ার পর পরই সুবিধা প্রাপ্তির প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রাদি প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু কি কারণে তাঁর পেনশনের টাকা এখনো পাচ্ছেনা তা আমরাও বুঝতে পারছিনা। তিনি খুবই কষ্টে রয়েছেন বলে তাঁর পরিবারও জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট নিবেদন যে তাঁর প্রাপ্যটুকু বেঁচে থাকতে যেন পায়, সেক্ষেত্রে আমরাও দায়মূক্ত হবো।