তিন পার্বত্য জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালগুলোর দিকে নজর দিন
পার্বত্য তিন জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের বিরুদ্ধে নানান বিষয়ে ভুক্তোভুগি জনসাধারনের অভিযোগ যেন নিত্য লেগেই রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নিয়মিত সমন্বয় না রাখার কারনে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা যা-ইচ্ছে যেন তাই করছে বলে অভিযোগ করছেন জনসাধারন। দায়িত্বে অবহেলার কারনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ তাদের প্রাপ্য চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলাগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রসুতি মা’দের যেন বিপদ সাথে সাথেই লেগে থাকে। সন্তান জন্ম দেয়ার সময় সঠিক চিকিৎসা বা সেবার জন্য আসলেও দুঃশ্চিন্তায় পড়েন। এভাবে চলতে থাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষের দিন দিন তাদের ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে স্থানীয় প্রশাসনের উপর তাদের আস্থা হারাচ্ছেন।
আমাদের জেলা উপজেলার সাংবাদিকবৃন্দরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালগুলোর নানান অনিয়মের বিষয়ে গনমাধ্যমে তুলে ধরছেন। সেখানে দেখা যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালগুলোতে যেমনি লোকবলের সংকট তেমনি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার কোথাও কোথাও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকলেও সেখানের অনেক কর্মচারী উপজেলা না থেকে তাদের সুবিধামত স্থানে থাকতে গিয়ে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগী ও সুবিধাভোগীরা। আবার অনেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালগুলোতে কর্মরত অনেক কর্মচারী জেলা সদরে নিজ ব্যবসাপাতি বসিয়ে দেদারসে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। প্রতিমাসের প্রথম সপ্তাহে তাদের বেতন ভাতাগুলো উত্তোলনের পর আর চাকরীর স্থানে যাচ্ছেন না। কর্মস্থলে উপস্থিতও থাকেন না এমনকি উপস্থিতি খাতায় তার স্বাক্ষরও শূন্য থেকে যায়। কিন্তু মাস শেষ হলে ঠিকই তারা তাঁদের বেতন ভাতাগুলোও বুঝে নিচ্ছেন। তবে লক্ষ করা গেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালগুলোর অনেক কর্মচারী প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের সাথে যোগসাজস করে কর্মস্থলে ফাঁকি দিয়ে নিজের ব্যবসাপাতি খুলে বসেছেন।
আবার বেশ কিছু উপজেলায় দেখা গেছে, লোকবলের সংকট অনেক, ফলে সরকারি সকল ব্যবস্থা থাকার পরও দুরদুরান্ত থেকে আসা রোগীগুলো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ি ফিরছে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা জেলা শহর কিংবা যেখানে সুকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানেই যাচ্ছেন। কিন্তু হত দরিদ্র জনসাধারণ রোগ ও রোগী নিয়ে চরম অবহেলায় দিন কাটাচ্ছেন। আবার অনেক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লোডশেডিং হলে, হাসপাতালে বিদ্যুৎ না থাকলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং রোগীদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। দেখা গেছে, হাসপাতালেগুলো নিজস্ব উদ্যোগে আলোর ব্যবস্থা থাকে না, পানির ব্যবস্থাও থাকে না। নানান ভোগান্তির মধ্যে দিন কাটাতে হয় কর্তব্যরত চিকিৎসক ও রোগীদের। কোথাও কোথাও দায়িত্বরতরা জানিয়েছেন সমস্যাগুলো উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও গুরুত্ব দেয়া হয় না। পার্বত্য চট্টগ্রামের এখনো অনেক স্থান অতিদূর্গম। অনেক স্থানে এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থা সেরকম হয়ে আসেনি। যার কারনে প্রত্যন্ত এসব অঞ্চলের জনসাধারণ অসুখ বিসুখের কথা চিন্তা করে সবসময় তাদের মনটাও ছোট থাকে। গুরুতর কোন রোগী তাৎক্ষনিক হাসপাতালের সেবা না পাওয়াতে বড়ধরনের ঘটনাও ঘটে যাচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য বিভাগ, তিন পার্বত্য জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালগুলোর দিকে নজর দিন।