খাগড়াছড়িতে শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত, অভিভাবকদের অভিযোগ
॥ খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি ॥
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো শিক্ষক সংকট রয়েছে। এরমধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের রামগড়ের মানিকচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি। এখানে রয়েছে বিষয় ভিত্তিকসহ মাতৃভাষা শিক্ষক সংকট। শিক্ষক সংকটের ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে ভাষাগত সমস্যার কারণে। অধিকাংশই শিক্ষার্থীরা ভাষাগত সমস্যা কারণে লেখাপড়া সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বলে দাবি অভিভাবকদের। সম্প্রতি বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে মোট ৪৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তারমধ্যে সহকারি শিক্ষকের প্রায় ১৫টির অধিক পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
শিক্ষক সংকটের ব্যাপারে শিক্ষার্থীর অভিভাবক এন্টি বিকাশ ত্রিপুরা জানান, বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সংকট রয়েছে। শিক্ষকের অভাবে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। এক বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে অন্য বিষয়ের ক্লাস চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রভাংশু ত্রিপুরা বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে স্কুলে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সময় একজন শিক্ষককে পর পর একাধিক ক্লাস নিতে হয়। এতে শিক্ষার মান স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিরানন্দ ত্রিপুরা জানান, শিক্ষক সংকট ব্যাপারে আমরা অবগত। কিন্তু এসব কার্যক্রম তো আর এসএমসির পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। তাই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃপক্ষের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবলু রায় বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যার কোটা ৫ জনে উন্নীত করা হলেও অদ্যাবধি এই কোটা পূরণ হয়নি এখনো। শিক্ষক সংকটের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদানে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন বর্তমান শিক্ষকরা। এজন্য অধিকাংশ শিক্ষকদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তারপরও আমরা নিয়ম মোতাবেক পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের রামগড় উপজেলা শাখার সভাপতি হরি সাধন বৈঞ্চব ত্রিপুরা বলেন, শিক্ষক সংকটের ব্যাপারে শুনেছি। এ ব্যাপারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অবগত করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস হোসেন জানান, শিক্ষকের পদ শুন্য সংক্রান্ত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সহকারী শিক্ষকের পদগুলো সরকারি বিধিমতে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হলে পর্যায়ক্রমে শূন্য পদ পূরণ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।