খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন
খাদ্য মানবজীবনে অন্যমত একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ। শুধু তাই নয় খাদ্য ছাড়া জীবন চলেই না। মানুষ বেঁচে থাকার জন্যই খায়। কিন্তু সেই খাদ্যে যদি ভেজাল হয়, জেনেশুনে ভেজাল মিশ্রণ করা হয় তাহা হলে মানুষের জীবন দূর্বিসহ করে তোলা হয়। সত্যি হলো যে আমাদে দেশে খাদ্য উৎপাদনকারী ৫২টি প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু পন্যে ভেজাল চিহ্নিত হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টেরও ভেজাল খাদ্যগুলো বাজার হতে তুলে নেয়ারও আদেশ রয়েছে। কিন্তু হাইকোর্ট এর এ আদেশ পালনে দেখা যাচ্ছে ঢিমেতালে। অথচ মানবদেহে রোগ সৃষ্টিকারী এসব পন্য বাজারে বিক্রি হচ্ছেই। এছাড়াও স্থানীয় হোটেল রেস্তোঁরায় বর্তমানে যেভাবে ভেজাল ও বাসী খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে তাতে মানুষের মাঝে নানান রোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে মহামারি করোনাকালেও অনেক ব্যবসায়ী অপরিচ্ছন্ন খাবার পরিবেশন এবং খাবারে ভেজাল মিশাচ্ছে এতে ভোক্তা সাধারন সার্বিক দিক দিয়েই ক্ষতির সন্মুক্ষিণ হচ্ছেন। দেশের খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগসহ ভেজাল খাদ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সচেতন করে ভেজালের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সরকারি প্রচার প্রচারনাকে আরো এগিয়ে নেয়া উচিত। নিয়মিত ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে খাদ্যে ভেজাল দেয়া ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কঠোর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা এখন জরুরী।
খাদ্য অধিদপ্তর সুত্রগুলো জানিয়েছেন, ক্ষতিকর রাসানিক পদার্থ সনাক্তকরণের জন্য দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত ‘টেষ্ট কিট’ তেমন নেই। তাই ভেজাল চিহ্নিত করনের জন্য জরুরীভাবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। পৃথিবীর সবকটি রাষ্ট্র কৃষি খাতের উপর নির্ভরশীল। কৃষিকে বাদ দিয়ে কোন পরিকল্পনা সফল করা যায় না। কৃষির উন্নয়নে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। বর্তমান দুনিয়ায় যা কিছু উৎপন্ন হচ্ছে সব কাচাঁমাল কিন্তু সংগ্রহ করা হয় কৃষি থেকে। এ দেশের কৃষিকে কিভাবে আরও উন্নত করা যায় তা নিয়ে ভাবা দরকার।
দেখা যাচ্ছে সব চেয়ে ক্ষতিকর হচ্ছে শিশু খাদ্যে। সরকারের অনুমতিবিহীন নিত্য নতুন নামে খাদ্য পন্য বাজারে সয়লাব। মানুষের চাহিদা বাড়ার কারনে দেশে পন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগীতায় নেমে রসায়নিক মিশ্রণ করতে গিয়ে মানবদেহে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। এ সব খাদ্য খেয়ে শিশু থেকে সকল শ্রেণীর মানুষ ধীরে ধীরে বিভিন্ন রোগে আক্রন্ত হয়ে আকালে মৃত্যুবরণ করছে। সম্প্রতি দেশের মাহমান্য হাইকোর্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি পন্যের ভেজাল খাদ্য হিসেবে চিহ্নিত করে তা বাজার থেকে জরুরীভাবে সরিয়ে নিতে আদেশ দিয়েছেন। সেই সাথে আদালত দুধ-দই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকাও চেয়েছেন। মাহমান্য হাইকোর্টের আদেশ পালন করা জরুরী বলে বিজ্ঞজনেরও অভিমত।
খাদ্য পন্যে ভেজাল এখন নিত্য হয়ে পড়েছে। যে যার ইচ্ছেমত করে খাদ্য তৈরী করছে। কোন প্রকার ল্যাবরেটরি টেস্ট, স্থায়ীত্ব ও গুনগমমান ছাড়াই বাজারে সরবরাহ করছে। রসায়নিকযুক্ত খাবার খেয়ে মানব দেহে সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন রোগের। প্রকৃতভাবে জাতির উন্নয়নে মানুষের বেঁচে থাকার অন্যমত অংশ খাদ্য। তাই খাদ্য হতে হবে নির্ভেজাল এবং রসায়মিনকমুক্ত। মানব জাতিকে রক্ষায় খাদ্যে ভেজালকারীদের বিষয়ে দেশবাসীকে যেমন সচেতন করতে হবে তেমন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচারও করতে হবে।