জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি
খাগড়াছড়িতে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়, সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা হতাশ
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
খাগড়াছড়ির বাসস্ট্যান্ডে বেকার পড়ে আছে কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস। অন্যান্য দিনের তুলনায় (৬আগস্ট) শনিবার সকাল থেকে সড়কে বাসের সংখ্যা কম ছিল। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারিত হওয়ায় সেই প্রভাব পড়েছে পরিবহন খাতে। এতে পরিবহনের মালিক-শ্রমিক-চালকেরা তাঁদের যানবাহন সড়কে না নামিয়ে বন্ধ রেখেছেন। সড়কে বাস কম থাকায় সকাল থেকে যানজট কিছুটা কম লক্ষ করা গেছে।
দূরপাল্লার গণপরিবহনের পাশাপাশি জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় চলাচল করা পিকআপ, সিএনজি-মাহিন্দ্র ভাড়া বাড়িয়েছে। খাগড়াছড়ির তিনটি বাসস্ট্যান্ডে ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন জীপ মালিক সমিতির যৌথ সভার মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকে লোকাল ভাড়া বৃদ্ধি ও সাজেকের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে জানানো হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা (পিকআপ ও মাহিন্দ্রতে ৮০, সিএনজিতে ১০০), খাগড়াছড়ি টু মহালছড়ি (পিকআপ গাড়িতে ৮০, মাহিন্দ্রতে ৯০, সিএনজিতে ১২০), খাগড়াছড়ি থেকে পানছড়িতে (পিকআপ গাড়ি ও মাহিন্দ্রতে ৮০, সিএনজিতে ১০০) অন্যদিকে খাগড়াছড়ি টু সাজেক ( প্যাকেজ প্রতি পিকআপ, সাফারী, জীপ গাড়িতে ১৭০০, মাহিন্দ্রতে ১০০০ ও সিএনজিতে ১২০০টাকা) বৃদ্ধি করা হয়েছে।
পার্বত্য যানবাহন সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক ভবতোষ চাকমা, জীপ মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি দাশ, সিএনজি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসীম উদ্দিন ও
মাহিন্দ্র মালিক সমিতির সভাপতি সুমতি রঞ্জন চাকমার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সাধারণ যাত্রী জুলি ত্রিপুরা জানান, আগে যেখানে ৮০টাকা দিয়ে আসা-যাওয়া করা যায়, আজকে তা দ্বিগুণের বেশি নেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মাথা কেটে ফেলার সমান।
খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী পরেশ ত্রিপুরা জানান, পানছড়ি টু খাগড়াছড়ি সিএনজির ভাড়া ১০০টাকা। তারমানে একজন সাধারণ গরিব ছাত্রের পক্ষে প্রতিদিন ২০০টাকা ভাড়া দিয়ে কলেজে আসা যাওয়া অসম্ভব।
পানছড়ি সরকারি কলেজের আরেক শিক্ষার্থী হমেন ত্রিপুরা জানান, আগে যেখানে ১০০টাকা দিয়ে কলেজে আসা-যাওয়া করা হয়। সেখানে আজকে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়েছে। এরকম হলে আমাদের মতো গরিব শিক্ষার্থীদের কি হবে?
সরকারি অফিসে কর্মরত জবানিকা ত্রিপুরা জানান, আমার মত এক বেতনের চাকরী, গাড়ি ভেঙে ভেঙে ১৭কিঃ মিঃ অফিসে যাওয়া করাটা, পথে বসা ছাড়া আর উপায় নাই।
রামগড় বাসস্ট্যান্ডের টিকিট বিক্রেতা মোঃ হানিফ বলেন, ‘আমরা এখনো আগের ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করছি। ভাড়া বাড়ানো হয়নি। যাত্রীদের সঙ্গেও ঝামেলা হচ্ছে না। তবে আজকের মধ্যে ভাড়া না বাড়ালে গাড়ি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, যাত্রীবাহী বাসগুলো যাচ্ছে। তবে আগের তুলনায় স্ট্যান্ডে কিছুটা কম আসছে।