খাগড়াছড়িতে আশ্রয়ন প্রকল্প ঘর দেওয়ার নামে প্রতারনা অভিযোগে দুই যুবক আটক
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
খাগড়াছড়ির গুইমারায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার (আশ্রয়ন প্রকল্প)’র ঘর দেওয়ার নামে অসহায়দের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুই প্রতারককে আটক করে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) গুইমারা উপজেলার লুন্দুক্যাপাড়ার হাড়ভাংগা নামক এলাকা থেকে ঘর দেওয়ার নামে টাকা চাইলে এলাকাবাসী হাতেনাতে ধরে পুলিশে খবর দেয়। এসময় তাদের কাছে তৈরিকৃত আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের ফরম, লিফলেট সহ বিভিন্ন লোকের জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) কার্ড সহ ছবি পাওয়া যায়।
আটক দুই যুবক পার্শ্ববর্তী মাটিরাংগা উপজেলার সদর এলাকায় বসবাস করে এবং প্রতারক চক্রের সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছে বলে স্বীকার করেছে। প্রতারক ব্যক্তিরা হচ্ছে মাটিরাঙ্গা উপজেলার হেলাল উদ্দিনের ছেলে নাঈম উদ্দিন সাকিব এবং একই উপজেলার ৪নং আর্দশগ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে মোঃ সালমান। তারা নিজেরদের পার্বত্য জেলা পরিষদের অফিস সহায়ক বলে পরিচয় দেয়।
আবার গুইমারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্মল নারায়ন ত্রিপুরা ষাট হাজার টাকায় ঘর গুলো তাদের কাছ থেকে কিনতে চায় এমন উদ্ভব কথা বলেও সাধারন জনগনকে বিব্রতকর করে। আটককৃতদের নামে কৌশল অবলম্বন করে ঘর পাইয়ে দেওয়ার অজুহাতে স্থানীয়দের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে আত্মাসাতের অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তাদের দাবি এরা দুই জন মূলত প্রতারক চক্রের সদস্য।
ভুক্তভোগী রাসনা বেগম জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার কথা বলে মাটিরাঙ্গা উপজেলার এই দুই প্রতারক টাকা দাবী করে। অর্থ না দিলে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলে জানান তারা। তিনি বিষয়টি শুরুতে বুজতে না পেরে বিশ হাজার টাকা দিয়েছেন তাদের। এছাড়াও ইতিমধ্যেই সাইফুল ইসলাম, হোসেন আহাম্মদ ভুইয়া, শান্তা আক্তার, হোসনা বানুসহ হতদরিদ্র নিরীহ মানুষের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে তারা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নির্মল নারায়ণ ত্রিপুরা, ইউপি সদস্য দিদারুল আলম, উশ্যেপ্রু মারমা, ইখতেয়ার উদ্দিন পলাশ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনন্দ সৌম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সর্দার, সাংবাদিকরা উপস্থিত হন। পরে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ঘটনার সাথে জড়িত প্রতারক চক্রের সদস্যদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। তারা সামাজিক ভাবে বিষয়টি মিমাংসা করতে জোর প্রচেষ্টা চালান।
এ বিষয়ে গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রশিদ জানান, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মৎসাতের কারনে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের নামে মামলা হয়েছে।
গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) রক্তিম চৌধুরী জানান, আশ্রয়ন প্রকল্পের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুই প্রতারককে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।