[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

জ্ঞানময় চাকমা’র ফেইসবুকে স্ট্যাটাস

বরকলে দূর্গম রামুক্যাছড়ি মৌজায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের দাবি

৪৪৪

॥ নিরত বরন চাকমা,বরকল ॥

রাঙ্গামাটির বরকলে আইমাছড়া ইউনিয়নে ৯নম্বর ওয়ার্ডে দূর্গম এলাকা ১৭৪নং রামুক্যাছড়ি মৌজায় শিক্ষার সুব্যবস্থার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপদ জীবনের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের দাবি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এ স্ট্যাটাস দেন জ্ঞানময় চাকমা নামে এক যুবক। তিনি একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।

তিনি ফেইসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন বরকল উপজেলার ১৭৪ নং রামুক্যাছড়ি বৈচিত্রময় মোজাটি অতি দূর্গম এলাকা। এখানে দেখার ও জানার অনেক কিছু আছে। পার্বত্য ডায়েরী রিপোর্ট অনুযায়ী চাকমা সার্কেলে সর্বমোট ১৭৭টি মৌজা রয়েছ। তারমধ্যে ১৭৪ নং রামুক্যাছড়ি মৌজা ১টি। আমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী ও সীমিত। কিন্তু জ্ঞানের কোন সীমা পরিসীমা নেই। এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের সংক্ষিপ্ত সময়ে যার যত বেশি তথ্য জানা থাকে তারা ততই বেশি উন্নত। আগে ছিল জ্ঞানই শক্তি। কিন্তু এখন হচ্ছে তথ্যই শক্তি। এই চলমান বিশ্বের প্রায় প্রতিদিনই ইতিহাসের নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমাদের সামনে খুলে যাচ্ছে জ্ঞানের নতুন নতুন দুয়ার। তাই যুগের সাথেই তাল মিলিয়ে সমাজ ও দেশ অগ্রসর হচ্ছে, উন্নত হচ্ছে বিশ্ব। কিন্তু এগোতে পারচ্ছে না ১৭৪ নং রামুক্যাছড়ি মৌজাটি এবং ৩নং আইমাছড়া ইউনিয়নের, ৯নং ওয়ার্ডের এলাকাবাসীরা।

এছাড়াও তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাঙ্গামাটি পাবর্ত্য জেলায়,বরকল উপজেলাধীন,৩নং আইমাছড়া ইউনিয়নের,৯নং ওয়ার্ডের এবং ১৭৪ নং রামুক্ষ্যাছড়ি মৌজায় খুঁটিনাটি তথ্য ও ভৌগোলিক অবস্থাঃ মৌজাটি ১৫টি পাড়া ও ৪টি প্রধান গ্রাম নিয়ে গঠিত। গ্রামগুলো হলো ১. গৌইহাটছড়া ২. নোয়াপাড়া ৩. মেম্বারপাড়া ও ৪. গুইছড়ি বা রামুক্যাছড়ি এবং সমগ্র মৌজাটির রয়েছে ১টি ওয়ার্ড। বরকল উপজেলায় সদর হতে কম হলে ৮০ থেকে ৯০কি.মি.হবে মোজাটি দূরত্ব। মৌজাটির যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হলো পায়ে হাঁটা ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা নেই।
পেশাঃ প্রায় লোক কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। কৃষি কাজ এই মৌজাবাসীর মূল পেশা কৃষি কাজ বলতেই এখানে নেই সমতল চাষাবাদ যোগ্য ধান্যজমি (ভূঁই)। পাহাড়ের ঢালু জায়গায় জুম চাষ করে কষ্টের সহিত জীবিকা নির্বাহ করে। সেখানে কদুছড়া এবং নোয়াপাড়ার কিছুটা চাষাবাদ যোগ্য ধান্যজমি থাকলেও বাকিরা জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। তাই এই মৌজায় ১০০% লোকের কৃষি উপর নির্ভর, নেই আধুনিকতা ছোঁয়া ও আধুনিকতার চাষাবাদ ব্যবস্থা। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো যে, মৌজায় স্থানীয় জনসাধারণ থেকে একজনও সরকারি চাকরিজীবি নেই। জানিনা,পার্বত্য জেলায় আমাদের মত সরকারি চাকরিজীবি বিহীন ওয়ার্ড বা মৌজা আছে কিনা?

শিক্ষাঃ মৌজাটি শিক্ষায় ব্যবস্থা একেবারে নাজুক। সব মিলিয়ে পুরো মৌজা ৫০ থেকে ৬০ জন এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি সনদ অর্জনকারী থাকতে পারে। বিএ পাশ আছে মাত্র দু,জন। এই মৌজায় পাড়া কেন্দ্র আছে মাত্র ৪টি, সেগুলো হলো ১.ডলুছড়ি পাড়া কেন্দ্র,২.মেম্বারপাড়া পাড়া কেন্দ্র,৩. পাত্তরমনি কাব্বারী পাড়া কেন্দ্র ও ৪.কমলাচরন কাব্বারী পাড়া কেন্দ্র। মৌজাটির বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে মাত্র ৩টি। বিদ্যালয়গুলো হলো ১.কদুছড়া দোসরীপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,২.রামুক্যাছড়ি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩. নোয়াপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। চারটি পাড়া কেন্দ্র আর তিনটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বাদে একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই মৌজাটির। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়,বিজিবি ক্যাম্প বাদে একটিও সরকারি প্রতিষ্ঠান নেই, রামুক্যাছড়ি মৌজায়। জানিনা,চাকমা সার্কেলে বা পার্বত্য জেলায় আরো আমাদের মত শিক্ষা বিহীন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান বিহীন মৌজা আছে কিনা?

চিকিৎসাঃ চিকিৎসার কথা বলতে দু, চোখে আছে বোবা কান্না। শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। সামান্য অসুস্থতার কারণে প্রাণহানি হতেও দেখেছি। সম্মখীন হতে হয়েছে ৫/১০ টাকা দামে একটা ওষুধের অভাবেও তরতাজা প্রাণ হারাতে। নারীরাই জাতির রক্ষা করে। নারী না হলে পৃথিবী কত অসহায় হত। ৫/১০টাকায় ওষুধের অভাবে যদি প্রাণ ঝড়ে। এখন একটু ভাবা যাক,গর্ভবতী নারীদের ডেলিভারির কথা। সেই নারী ডেলিভারি সময় স্বাভাবিক হলে প্রাণে বেঁচে গেল, আর একটু এদিক সেদিক হলে কিছু করার থাকে না। শুধু দু,চোখরে জল ফেলা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। আমাদের এলাকায় ঝড়ে যায় তরুণ তরতাজা প্রাণ। এখানে নেই কোনো কমিউনিটি ক্লীনিক। সকল স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত মৌজাবাসীরা।

পরিশেষে কী বলব, দু’চোখ মুছতে মুছতে উদয় হলো মৌলিক অধিকারের কথা। যদি আমাদের মৌজায় ১টি কমিউনিটি ক্লিনিক হতো কিছুটা হলেও স্বাস্থ্য সেবা পেত, একটু নিরাপদ জীবন যাত্রা মান বৃদ্ধি পেতো। আর যদি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয় হতো, শিক্ষা ক্ষেত্রে আরো অগ্রগতি বাড়তো আমাদের মৌজাটি। জানিনা তিন পার্বত্য জেলায় আমাদের মতো শিক্ষায় পিছিয়ে, সুবিধা বঞ্চিত মৌজা বা আছে কিনা।