পার্বত্য চট্টগ্রামেও সম্ভাবনার পর্যটন খাত থেকে মানুষের অর্থনৈতিক কষ্ট দুর হোক
করোনা-১৯ এর ভয় কেটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের পদচারণায় মুখর রাঙ্গামাটি। সপ্তাহের বন্ধের দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো পর্যটক ভিড় জমাচ্ছে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। প্রতিনিয়ত রাঙ্গামাটিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু মানুষের সমাগম বাড়ছেই। খালি নেই আবাসিক হোটেল মোটেলের কক্ষ গুলোও। জমে উঠেছে পর্যটক সম্পর্কিত ব্যবসা-বাণিজ্যও। পর্যটকদের আগম বেড়ে যাওয়ায় তাদের নির্ভির সকল আয়ের স্থানগুলো যেন বাড়তি আয়ের স্বপ্ন পুরণ করছে। কেটে যাচ্ছে অর্থনৈতিক লোকসানের অংকটাও।
দেখা যায়, প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড়। রাঙ্গামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স ও পলওয়েল পার্কে শিশু, বৃদ্ধ, যুবক-যুবতিরা তাদের প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দর্শনীয় স্থান গুলোতে। কেউ কেউ পানি পথে ছুটে যাচ্ছেন সুবলং ঝর্ণা সহ বিভিন্ন স্পটে। মনের আনন্দে মিশে যাচ্ছে সকলের সাথেও। কিশোরগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক কাউছার পরিবারকে নিয়ে রূপের রাণী রাঙ্গামাটিকে দেখতে এসেছেন। বেশ উপভোগ করেছেন পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। যশোর জেলার মাগুরা থেকে আসা আরেক পর্যটক বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরেছেন। পাহাড়-পর্বত নিয়ে দারুন একটি অনুভূতি তৈরি হলো তাঁর মধ্যে। তিনি আরো জানান, রাঙ্গামাটি পর্যটন গুলো আরো উন্নতমানের হলে রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের প্রচুর সমাগম ঘটবে। সেই সাথে এর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীক আয়ের পরিধিও বাড়বে। রাঙ্গামাটি রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি মনে করেন করোনা-১৯’র কারণে রাঙ্গামাটি ছিল পর্যটক শূন্য। করোনার ভয় কেটে দেশ বিদেশের মানুষ এবার রাঙ্গামাটিতে রের্কড সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটায় খুশি আবাসিক হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকরা। ট্যুরিষ্ট বোট-মালিক কল্যাণ সমিতি ও বলছেন তাদের বোটগুলোও খালি যাচ্ছে না। করোনার কারণে বন্ধ থাকার পর এই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পর্যটক বাড়ায় আগের ক্ষতি পুষিয়ে ভালো লাভবান বোট চালক-মালিকরা।
রাঙ্গামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতি জানান, করোনা কারণে হোটেল-মোটেল বন্ধ থাকার পর এবার বিপদ কাটছে। জেলায় মোট ৪৫টি হোটেল-মোটেল রয়েছে। সবগুলোই প্রায় শতকরা ৮০ ভাগই বুকিং থাকছে। রাঙ্গামাটিতে নির্দিষ্ট বাস গাড়ি ছাড়া বিলাসবহুল কোন এসি বাস প্রবেশ করতে না পারায় পর্যটক কম হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। তাই বিলাশ বহুল গাড়িগুলো রাঙ্গামাটি প্রবেশে প্রশাসনে ভালো উদ্যোগ নেওয়া দরকার। রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশন সুত্রগুলো জানান, পর্যটকের প্রচুর সমাগম হওয়ায় আবাসিক হোটেল গুলোর শতভাগ কক্ষই বুকিং থাকছে। পর্যটক বাড়ার কারণে সরকারি রাজস্ব খাতে অধিক আয় হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। রাঙ্গামাটি ট্যুরিষ্ট পুলিশ পরিদর্শক জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্র অতিরিক্ত ট্যুরিষ্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং কাপ্তাই হ্রদে বেশ কয়েকটিও মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করছে। পর্যটকেরা নির্বিঘ্নে সব পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে বেড়াতে পারছেন। পর্যটন খাতের উন্নয়নে স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অপার সম্ভাবনার পর্যটন খাত থেকেও মানুষের অর্থনৈতিক কষ্ট দুর হোক।