[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফ এর শান্তি চুক্তির নতুন প্রস্তাব ও সময়ের বাস্তব কথন

১২৫

॥ মোঃ সিরাজুল হক (সিরাজ) ॥

নিজ বাড়ীতে গভীর ঘুমে বিভোর লক্ষ্মী চন্দ্র চাকমা (৫০)। প্রতি রাতের মতো আজো নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু এই ঘুম যে তার শেষ ঘুম, এই নিদ্রা যে তার চির নিদ্রা তা কি তিনি জানতেন? অন্যান্য রাতের শেষে অনাবিল শান্তির তন্দ্রার পর ভোরের আলোর স্নিগ্ধ পরশে আজ তিনি নিজেকে রাঙাতে পারেনি। বৃষ্টির মতো গুলি চালিয়ে প্রতিপক্ষরা তাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা করেছে। তিনি ঘুমন্ত তাই অসহায় অতঃপর এই মানুষটির উপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল প্রতিপক্ষ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সাম্প্রতিক সময়ে বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের শিলছড়ি (উখছড়ি) এলাকায় গভীর রাতে নিষ্ঠুর এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছিল।

লক্ষ্মী চন্দ্র চাকমা এক সময় পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের কর্মী ছিলেন বলে গনমাধ্যমে জেনেছি। আরো জেনেছি যে তিনি সকল অকুশল কর্ম ছেড়ে এক পর্যায়ে মুক্ত হয়ে সততার সহিত জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাই তিনি যেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তেমনী বাস্তবায়নেও তাই। ফলত মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে পারিবারিক কৃষি কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু না, নিষ্ঠুর-নির্দয় নিয়তি আর হায়েনারা তাকে বাচঁতে দিলো না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের সাথে যোগাযোগ করার অভিযোগ এনে চুক্তি পক্ষ পি.সি.জে.এস.এস এর সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের কমান্ডার চিনু মারমার নেতৃত্বে ১৫-১৬ জনের দল তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে বলে গনমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। একজন মানুষ সৎ পথে ফিরে এসেছেন, সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পর নিজ গৃহে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন। অনাবিল শান্তির সাধারণ নিদ্রা যখন চির নিদ্রায় পরিণত হয়, তখন সাধারণের কাছে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, নিজ গৃহে নিশ্চিন্তে সাধারণ নিদ্রার নিরাপত্তা দেবে কে? কোথায় পাওয়া যাবে নিরাপদ আশ্রয়? এই প্রশ্ন আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বত্রই।

মূলত সুদীর্ঘ কাল ধরে পাহাড়ের সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা কোন না কোন ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছেই। দিনের পর দিন পাহাড় আবারো উতপ্ত হয়ে উঠেছে। চুক্তি স্বাক্ষরকারী পি.সি.জে.এস.এস ছাড়াও নব-সৃষ্ট কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কে.এন.এফ)-সহ বর্তমানে পাহাড়ে ৬টি আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা বেড়েই চলেছে। গত ১১ জুন/২০২২ইং তারিখ রাঙ্গামাটির রাজস্থলীর বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের ০৭নং ওয়ার্ডের কাকড়াছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত খোকা মোহন তঞ্চঙ্গ্যা (৪০) বান্দরবান জেলার সদর ইউনিয়নের রাজভিলা গ্রামের মৃত বিরো কুমার তঞ্চঙ্গ্যার ছেলে ও সুমন চাকমা (৩৫) রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাট ভাইবোনছড়া গ্রামের মৃত ছুরা মেরিয়া চাকমার ছেলে বলে জানা গেছে। এ সময় আটককৃতদের কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরি ১৫.৫ ইঞ্চি এলজি কাঠের বাট ও ৪ রাউন্ড কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের পি.সি.জে.এস.এস (সন্তু) এর গ্রুপের সন্ত্রাসী বলে চন্দ্রঘোনা থানার পুলিশ জানিয়েছিলেন।

অপরদিকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কে.এন.এফ) এর হামলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর চার সমর্থক নিহত হয়েছে বলে দাবী করেছেন কে.এন.এফ এর হেড-কোয়াটার্স’র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সলোমন। কে.এন.এফ তাদের নিজস্ব ফেইসবুক পেইজে এ হত্যাকান্ডের ঘটনার বিবরণ প্রকাশ করেন। কে.এন.এফ তাদের নিজস্ব ফেইসবুক পেইজে ২১ জুন/২০২২ইং তারিখ সন্ধ্যায় বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম বড়তলী ইউনিয়নের সাইজাম পাড়ায় পি.সি.জে.এস.এস এর নতুন সৃষ্ট সশস্ত্র বেসমেন্ট ক্যাম্পে কে.এন.এফ এর স্পেশাল কমান্ডো ফোর্স হেড-হান্টার টিম সফলভাবে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন। হামলায় প্রথমে চুক্তি পক্ষ পি.সি.জে.এস.এস এর তিনজন সদস্য ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে আরো একজন মারা যায়, এছাড়াও পি.সি.জে.এস.এস এর সশস্ত্র আহত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলেও দবি করে কেএনএফ। অবশ্য পি.সি.জে.এস.এস (সন্তু) এর সমর্থিত বিভিন্ন ফেইসবুক পেইজে নিহতের কথা স্বীকার করে নিলেও তাদেরকে নিরীহ গ্রামবাসী বলে দাবী করে পরে গনমাধ্যমেও প্রেস বিবৃতি দেয়।

পার্বত্য চুক্তির পর এমনিতেই পিসিজেএসএস ভেঙ্গে ইউপিডিএফ (প্রসিত) পরে উভয়ই ভেঙ্গে গিয়ে চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে পিসিজেএসএস (সংস্কার), ইউপিডিএফ (গনতান্ত্রিক), পরে মাঝখানে মাথাচাড়া দেয় মারমা লিবারেশন পার্টি (এম.এল.পি) বা সংক্ষেপে মগ পার্টি এবং নতুন করে যোগ হলো কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদের প্রশ্নটি যখন সামনে এসে যায়, তখন তারা এক সুরে কথা বলছে বলেই মনে হয়। সর্বপরি দেশী বিদেশী অস্ত্রের ঝনঝনানি আর পাহাড়ের বাতাসে বারুদ ও লাশের গন্ধের মাঝে আত্ম প্রকাশ করে কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট। এই আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনের প্রধান নাথান বম ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান থেকে প্রতিদ্ব›দ্ধীতা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এই ছাত্র যতদুর জানি তিনি ছবি অংকনেও খুব দক্ষ ছিলেন। এই বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামে চুক্তি স্বাক্ষরকারী পিসিজেএসএসকে পাশ কেটে ৫টি সংগঠন এর মধ্যে তিনটি সংগঠন আঞ্চলিক দল দাবি করে আসছে তবে বাকী দুটি দলের বিষয় অস্পস্ট। তাই এখানে বলতে পারি কি অরক্ষিত গনতন্ত্রের আড়ালে কেউ কেউ আঞ্চলিক দল দাবি করলেও বাকীরা কি বিচ্ছিন্নতাবাদী, নাকি তাদের দিয়ে কলকাঠি নাড়ানো হচ্ছে ? এখানে চুক্তি স্বাক্ষরকারী পিসিজেএসএস এর ব্যর্থতার বিষয় যেমন সরকারকে পরিস্কার করতে হবে তেমনি জনগনের প্রাণ হননকারী সংগঠনগুলোর বিষয়ে কতটুকু কঠোরতা তাও পরিস্কার করতে হবে রাষ্ট্রের গনতন্ত্রের স্বার্থে. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি তথা বম, পাংখোয়া, লুসাই, খুমি, ম্রো ও খিয়াং সম্প্রদায়ের মধ্যে যারা বর্তমানে সব দিক থেকে এগিয়ে, এসব এগিয়ে থাকা মানুষ গুলোর মধ্যে থেকে কে.এন.এফ গঠিত হয়েছে বলে তাদের নিজস্ব প্রচার রয়েছে। পাহাড়ের ০৯ টি উপজেলা নিয়ে পৃথক অঞ্চল বা রাজ্য গড়ার স্বপ্নের মধ্য দিয়ে তাদের অপতৎপরতা শুরু হয়েছে। এরা রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, লামা ও থানচি উপজেলা নিয়ে পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠার অলীক দুঃস্বপ্নে বিভোর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কে.এন.এফ প্রচার-প্রচারনাও চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটও রয়েছে। কে.এন.এফ তাদের কল্পিত পৃথক রাজ্যের জন্য আলাদা পতাকা, মুদ্রা এবং সংগঠনের লোগো চুড়ান্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। কে.এন.এফ এর অভিযোগ, বিভিন্ন মহল তাদের ভূমিতে অরাজকতা সৃষ্টি করছে এবং চুক্তি স্বাক্ষরকারী পি.সি.জে.এস.এস (সন্তু)-সহ অন্যান্য আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো কুকি-চীন জনগোষ্ঠির ভূমি ব্যবহার করে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিনত করে চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুমসহ নিরীহ মানুষদের ভীতির মধ্যে রেখেছে। ইতিমধ্যে কে.এন.এফ এর অপতৎপরতা নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ভারতের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পাহাড়ের স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রক্তপাত বন্ধে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পি.সি.জে.এস.এস এর প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা’র সাথে সকল অধিবাসীদের অধিকার রক্ষায় তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন করেন।

চুক্তির পূর্বে পাহাড়ে পিসিজেএসএস (তৎকালীন শান্তিবাহিনী) ছাড়া অন্য কোন বিচ্ছিন্ন সশস্ত্র আঞ্চলিক সংগঠন ছিল না। কিন্তু আজ পাহাড়ে চুক্তি স্বাক্ষরকারী পক্ষ ছাড়াও চুক্তি বিরোধীতাকারী পক্ষ ও নবসৃষ্ট কে.এন.এফসহ ০৫ টি সশস্ত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠিত বলেই তাদের কর্মকান্ডেই মনে হয়। চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি থাকবে আর রক্তপাত ঘটবে না। কিন্তু বিপরীতে লক্ষ্য করলে দেখা যায় মানুষের অধিকার হননকারী একের পর দলের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ পার্বত্য চুক্তির সুদীর্ঘ ২৫ বৎসর পরও পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, বন্ধ হয়নি রক্তপাত। এমতাবস্থায় পাহাড়ে শান্তি চুক্তির নতুন এক প্রস্তাব দিয়েছে পার্বত্য চুক্তির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে আত্ম প্রকাশকারী আঞ্চলিক সংগঠন দাবিদার ইউপিডিএফ (প্রসিত)। গনমাধ্যমে দেয়া তাদের ভাষ্যমতে বিগত কয়েক বছর যাবৎ কয়েক দফা সরকারের সাথে আলোচনার পর নতুন শান্তি চুক্তির এই লিখিত প্রস্তাব সরকারের নিকট প্রেরণ করে ০৯ই জুন/২০২২ইং তারিখে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ২নং চেঙ্গী ইউনিয়নের বড়কলক এলাকায় এক অনুষ্ঠানে ইউপিডিএফ এর পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতা উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা ৬৬ পৃষ্ঠার এক দাবীনামা মধ্যস্থতাকারী অবসরপ্রাপ্ত শ্রদ্ধেয় মেজর মোঃ এমদাদুল ইসলামের নিকট হস্তান্তর করেন। তাদের এই প্রস্তাব শীঘ্রই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাছে পৌঁছানো হবে বলে মধ্যস্থতাকারী সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাও উল্লেখ করেছেন।

কিন্তু বিগত ২৫ বছর আগে পাহাড়ের তৎকালীন এক মাত্র আঞ্চলিক সংগঠন পিসিজেএসএস এর সাথে সরকারের পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তি দেশে এবং বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রসংশিত হয়েছে। এখন স্বাভবিকভাবে প্রশ্ন জাগে যে, ইউপিডিএফ আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল দাবি করতেও পারে, কিন্তু সরকারের তালিকাভুক্ত বা অনুমোদিত দল কিনা। তাই ইউপিডিএফ এর প্রদত্ত দাবিনামা বা প্রস্তাবিত মধ্যস্ততাকারীর মাধ্যমে আলোচনা সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে কিংবা নির্বাহী আদেশের মধ্যে পড়ছে কিনা বা আমার সরকার শ্রদ্ধেয় সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে কোন দায়িত্ব দিয়েছেন কিনা ? এখন পাহাড়ে চুক্তি স্বাক্ষরকারী পিসিজেএসএস ছাড়া তিনটি দল অর্থাৎ পিসিজেএসএস (সংস্কার), ইউপিডিএফ (প্রসিত) ইউপিডিএফ (গনতান্ত্রিক) তারা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল দাবি করে তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু এ মুহুর্তে ঐ তিনটি দলের দাবির বিপরীতে পার্বত্য চট্টগ্রামে কেএনএফ এবং মগ পার্টির অবস্থান কি? এর পরেও সরকার ইউপিডিএফ এর মতো দাবিদার বাকী সংগঠনগুলোর সাথেও কি আবার চুক্তি করবেন?

মানুষ শান্তি চায়, অত্যাচার থেকে মুক্তি চায়, সেই সুবাধে হলেও ইউপিডিএফ এর ৮৭টি দাবীনামা প্রসংশারও বলা যায় আবার হাস্যকরও হতে পারে কি? কেননা এখানে শান্তির জন্য ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের পক্ষে সরকারের সাথে পিসিজেএসএস এর প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। কিন্তু ইউপিডিএফ এর দাবীনামা বা চুক্তির নতুন এই প্রস্তাব পূর্বের স্বাক্ষরকারী দুটি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পাহাড়ের শুভবুদ্ধির সকল অধিবাসীদের গ্রহনযোগ্য না হয় তবে এটি হাস্যকরেই পরিণত হবে। আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি ইস্যুতে কোন বিতর্ক সৃষ্টি না হোক। কারণ বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে সকল সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে না-পারলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠাও সম্ভব নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যালোচনা পূর্বক মনে হয় যে, রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, গনতান্ত্রিক অধিকার, উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত এখানে প্রয়োজন, তা না হলে জনগন পিষ্ট হতেই থাকবে অনন্তকাল।

লেখক:- মোঃ সিরাজুল হক (সিরাজ)
কবি, কলামিষ্ট ও সাংস্কৃতিক কর্মী