বাল্য বিবাহ নারীকে চরম বিপদে ফেলে দেয়া হচ্ছে
দেশের এমন কোন জেলা উপজেলা নাই যে বাল্য বিবাহ হচ্ছে না। প্রতিনয়ত এসব চিত্র পত্র-পত্রিকা এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াগুলোতে ফলাওভাবে প্রকাশ হয়ে আসছে। বাল্য বিবাহ একদিকে নারীকে যেমন চরম বিপদে ফেলে দেয়া হচ্ছে তেমনি কোন কোন বিপদ নারী জাতির উন্নয়নেও চরম বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বর্তমানে বাল্য বিবাহকে অনেকে সামাজিক ব্যাধি হিসেবে দেখছেন। কিন্তু এ বাল্য বিবাহ রোধ করতে প্রত্যেককেই এক যোগে কাজ করতে হবে এটার কোন বিকল্প নেই।
আমরা দেখতে পাচ্ছি বাল্য বিবাহের কারনে শুধু নারী সমাজ নয় পরিবারের মাঝেও নানান সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। যে বয়সে মেয়েরা স্কুলে পড়ার কথা অথচ সে বয়সে তাদের বিয়ে দিয়ে একদিকে তাদের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ন এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেয়া হচ্ছে তেমনি অনগত শিশুরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভুমিষ্টও হচ্ছে। সম্প্রতি নানিয়ারচরে কিশোরীদের বাল্যবিবাহ এবং বিলম্বিত গর্ভধারণ বিষয়ে ধর্মীয় গুরু, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে কর্মশালা আয়োজন করেছে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে নারীর শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা থাকতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষায় নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবেই শিক্ষিত মেয়েরা সচেতন হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করে কন্যাশিশুদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলা হলে তারা যোগ্য ও দক্ষ হয়ে গড়ে উঠবে এবং তারা পরিবার তথা রাষ্ট্রের সম্পদে পরিণত হবে। তাই দেশের সব নাগরিকের কর্তব্য হবে, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের লক্ষ্যে সামাজিক, পারিবারিক ও কিশোর/কিশোরীদের মধ্যে সচেতনতাবোধ জাগ্রত করা এবং কন্যাশিশুর শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। অবশ্যই কিশোর/কিশোরীদের ইচ্ছেকে প্রধান্য দিতে হবে।
আমরা আরো দেখছি দেশের কোথাও কোথাও স্থানে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করতে কিশোরীরাই এগিয়ে আসছে। তাদের পরিবার অথবা বাবা-মা মেয়ের ইচ্ছেকে গুরুত্ব না দিয়ে এক প্রকার জোর করেই বিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠে। সচেতনতার কারনে এবং কোথাও কোথাও অভাব অনঠনের কারনেও এমটি হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করা হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও স্থানীয় প্রশাসন কোন এলাকায় বাল্য বিবাহ হচ্ছে এমন সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই সেখানে হাজির হচ্ছেন এবং বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে যে কোন পরামর্শ এবং উদ্যোগ গ্রহনও করছেন। এতে প্রশাসন বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তার প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু তার পরেও বাল্য বিবাহ যেন থামছেই না। এটি অনেকটা সামাজিক ব্যধি হিসেবেই দেখা দিয়েছে। তাই বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে শুধুমাত্র সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হলেও হবে না, এটি বন্ধ করতে হলে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।