[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

থানচিতে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আনবে ১০ শয্যার হাসপাতাল

১১৭

॥ চিংথোয়াই অং মার্মা, থানচি ॥

বান্দরবানে থানচিতে দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়া প্রকোপের নিয়ন্ত্রণে আনতে (ম্রংওয়া জি) আন্ধারমানিক বাজারে এলাকায় জেলা পরিষদের অর্থায়নে ১০ শয্যার ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল চালু করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকালে বৃষ্টির উপেক্ষা করে থানচির রেমাক্রী দুর্গম এলাকায় ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়া প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে মেডিকেল টিম নিয়ে পরিদর্শনে যান উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মারমা। শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল চালু করলে দুর্গম এলাকায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ২৬ জন রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসার সেবা প্রদান করেছে মেডিকেল টিম। ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়া প্রকোপের নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত চালু থাকবে এ হাসপাতাল।

ঙারেসা পাড়া বাসিন্দা ডায়রিয়া প্রকোপে দুই মেয়ে হারার ইরচং ম্রোঃ (৩০) বলেন, দুর্গম এলাকার কয়েকটি পাড়ায় ডায়রিয়া সচেতনতা অভাবে ব্যাপকভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহে মধ্যে আমার দুই মেয়েসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭জনের মারা গেছেন। এর মধ্যে একজন পাড়া প্রধানও রয়েছে।
আন্ধারমানিক পাড়া প্রধান য়ংনং ম্রো (৫০) বলেন, ডায়রিয়া হয়ে আমার পাড়ার একজন মারা গেছে। পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় গরম এবং শুষ্ক মৌসুমে খাল, ঝিরি ও ছড়ার দূষিত পানি পান করায় লোকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, এ ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়া আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যক বেশি। এ কয়েকদিনের আক্রান্ত রোগীর সাথে তাদের পালিত কুকুরগুলো একত্রে থাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছেন। এবং পালিত কুকুরগুলো আলাদা রাখার সাথে সাথে কয়েকজন কিছুটা সুস্থ দেখা দেয়।

এদিকে স্থানীয়রা বলেন, বর্ষার প্রথম পানি পাহাড়ের বিভিন্ন জীবাণু বহন করে নদী বা ঝিরিতে মিশে তাদের ব্যবহারের পানির উৎসগুলো দূষিত হচ্ছে। এ দূষিত পানি পান ও ব্যবহার করায় ওই এলাকার বাসিন্দারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। দুর্গম এলাকা হওয়ায় প্রথম সপ্তাহের ওষুধ ও চিকিৎসার সেবা অভাবে রোগীরা মারা যাচ্ছেন।
তাঁরা আরো বলেন, এরই মধ্যে গত প্রথম সপ্তাহের ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়া রোগের আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৭জন মারা গেছে। এরই মধ্যে ঙারেসা পাড়ায় ৫জন রয়েছে। তারা হলেন, ঙারেসা পাড়ার বাসিন্দা কারনী ম্রোঃ (৩২) ছেলে পাইপং ম্রোঃ (৩), মেনতুই ম্রোঃ (৬৮) ছেলে লংঙি ম্রোঃ (৩০), য়ইচু ম্রোঃ (৪৭) স্ত্রীর পাইলিং ম্রোঃ (৩৫), একই পাড়ার বাসিন্দা ইরচং ম্রোঃ (৩০) দুই মেয়ে চংদং ম্রোঃ (৪) ও য়াংওয়াই ম্রোঃ (২) এবং য়ংনং পাড়ার ক্রাইয়ং ম্রোঃ (৫৩) ও মাইতাং (৬০) পাড়া প্রধান মারা গেছেন।

ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য অস্থায়ী ১০ শয্যার ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল স্থাপনে শেষে রোগীদের ভর্তি করে মেডিকেল টিম চিকিৎসার সেবা প্রদানে পরিদর্শন করে উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মারমা বলেন, রেমাক্রী ইউনিয়নের বড় মদক দুর্গম আন্ধারমানিক এলাকায় ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাব এ ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালে চিকিৎসার মাধ্যমে পুরো ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবে। ভর্তিকৃত ২৬জনের মধ্যে কয়েকজন সুস্থতা অবস্থা দেখা দিয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।

এদিকে মোবাইল মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে ডায়রিয়া আক্রান্ত কিছুটা সুস্থতাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ ও স্যালাইন দেয়ার হয়েছে। এবং ব্রাংকের মশারী বিতরণ করা হয়। এ মেডিকেল ক্যাম্পের প্রত্যেক রোগীর অভিভাবকদের কিভাবে স্যালাইন তৈরী ও ব্যবহারে করবেন তা শিখিয়ে দিয়ে মেডিকেল অফিসার ডাঃ রায়হানুল কাদের বলেন, ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। পাহাড়ে দূষিত পানি পান করার জন্য এ রোগ হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন, যেখানে-সেখানে ও পানির উৎসের কাছে মলত্যাগ, সঠিক উপায়ে হাত না ধোয়া, অপরিচ্ছন্ন উপায়ে খাদ্য সংরক্ষণের ডায়রিয়া হয়ে থাকে। আতঙ্কিত নয়, সচেতনতা বৃদ্ধির গড়ে তুলতে সকলে কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মারমা, মেডিকেল টিমের ডাঃ রায়হানুল কাদের, ডাঃ মিহরাব আল রহমান, আলিকদম ব্যাটালিয়ন (৫৭ বিজিবি) মদক কোম্পানি কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোঃ রেজোয়ান আহম্মেদ, মেম্বার মাংচং ম্রোঃ, মেডিকেল টিমের উসিং মারমা, জ্যোতিপ্রিয় চাকমা প্রমূখ। এছাড়াও আন্ধারমানিক পাড়া প্রধান য়ংনং ম্রোঃসহ অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।