রামগড়ের ছাত্রীর শ্লীলতাহানির মামলায় শিক্ষক বরখাস্ত, গ্রেফতারের দাবি
॥ খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি ॥
খাগড়াছড়ির রামগড়ে থানা চন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে সহকারি শিক্ষক মোঃ বেলায়েত হোসেন (৪২)কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার (১৪ মে) খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমীনের স্বাক্ষরে ‘ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে নৈতিক স্থলনের গুরুতর অভিযোগে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ বিধি ২ (খ) অনুচ্ছেদ মোতাবেক অফিস আদেশ মূলে সাময়িক বহিস্কারের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন রামগড় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ। শিক্ষক একই ইউনিয়নের লামকুপাড়ার নুরুল হুদার ছেলে এবং থানাচন্দ্র পাড়া সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
অনুসন্ধান ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১২মে) বিদ্যালয় ছুটির পর অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেন বাড়ির কাজ দেখানোর কথা বলে ঐ ছাত্রীসহ অপর এক ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষে থাকতে বলে। পরবর্তীতে ঐ শিক্ষক দুই ছাত্রীকে শ্রেণীকক্ষে ডেকে নিয়ে একজনকে ১ম বেঞ্চে এবং অপরজনকে পিছনের বেঞ্চে বসিয়ে হাতের লেখা লিখতে বলেন।
এসময় পিছনের বেঞ্চে বসা ছাত্রীর পাশে বসে তার শরীরের র্স্পশকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। ছাত্রীটি শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকায় এবং পরবর্তীতে এ বিষয়ে কাউকে যাতে না বলে সে কৌশল নিয়ে ছাত্রীকে বাহিরে এনে শিক্ষক ছাত্রীটির হাতে ১শত টাকা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। শিক্ষক বেলায়েত হোসেন ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন করলেও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায় ।
এদিকে পলাতক মোঃ বেলায়েত হোসেনকে গ্রেফতারের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে সোমবার (১৬মে) সকালে সচেতন ছাত্র সমাজের ব্যানারে রামগড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে। রামগড় লেকপার্কের বিজয় ভাস্কর্য চত্ত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বাজার এলাকায় গিয়ে মানববন্ধন করেন। বিক্ষোভকারীরা শিক্ষক বেলায়েত হোসেন ও সাজেকে অপর এক কিশোরীর ধর্ষণকারীকে দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
অন্যদিকে ঘটনার পর শনিবার (১৪মে) থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি নেই বলে জানা যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইতিপূর্বেও প্রায় ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব সহ শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিল।
এ বিষয়ে অভিভাবকরা জানতে পারলেও পরিবাবের মান সম্মান-লোক-লজ্জায় প্রকাশ করতে পারেনি। বারবার এমন ঘটনায় ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎতের কথা চিন্তা রেখে স্কুলে পাঠানো বন্ধ করা হয়েছে বলেও জানান অভিভাবকরা।
উল্লেখ্য, মামলার বাদী ছাত্রীর মা মেয়ের কাজ থেকে এ বিষয়ে জানতে পেরে তাৎক্ষনিক এলাকাবাসী ও বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের রামগড় আঞ্চলিক শাখাকে জানালে তাদের সহযোগিতায় ১৩ মে শিক্ষক বেলায়েতে হোসেনের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে রামগড় থানার মামলা দায়ের করেন। শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকসহ সচেতন মহল।