[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে জশনে জুলুস, মিলাদ ও পুরস্কার বিতরণপানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) পালিতকাপ্তাইয়ে জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা ও ভিক্টিম সাপোর্ট বিষয়ক সভারাজস্থলীতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উদযাপনথানচিতে বংয়ক হেডম্যান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনচন্দ্রঘোনায় ধ্রব সংস্কৃতি পরিষদের বিজয়ীদের মাঝে সনদ বিতরণহুন্ডা আর গুন্ডা ভাড়া করে নির্বাচন ঠান্ডা করার চিন্তা বাদ দেন: অ্যাড. মোখতারমাইনীমুখ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি- হাসেম, সম্পাদক- আলাউদ্দিনকাপ্তাই-এ ২২৭জন কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণ১৭২ কোটি টাকায় লামায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের কাজ শুরু
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বান্দরবানের লামায় বীর মুক্তিযোদ্ধার শেষসম্বল কেড়ে নিতে চায় ওরা

৭৯

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥

ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা খালেদা বেগম। বার্ধক্যের ভারে নুয়ে পড়েছেন। মৃত স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম গোলাম নবী অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে দেড় বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। দেশ স্বাধীনের পরে ১৯৮২-৮৩ সালে সরকার যখন দুস্থ অসহায় মানুষকে পাহাড়ে পুনর্বাসন করেন, সে সময় ৫ একর জমি বন্ধোবস্ত পেয়ে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে নিয়ে পাহাড়ে আসেন গোলাম নবী। সরকার কর্তৃক বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২৯৪নং দরদরী মৌজার আর/৫৯ হোল্ডিং মুলে ৫ একর তৃতীয় শ্রেণির জমির মালিক হন। সে থেকে রূপসীপাড়া বাজারে বসবাস শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নবীর পরিবার।

মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নবীর স্ত্রী খালেদা বেগম (৬৫) বলেন, অভাবের কারণে আমার স্বামী পাহাড়টি সম্পূর্ণ বনায়ন করতে পারেনি। তার স্বল্প আয়ে কোনমতে পরিবারের ভরণপোষণ ও সন্তানদের লেখাপড়া করিয়েছেন। ৫ একর পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট গাছপালা ও বাঁশ বিক্রি করে কিছু আয় হত। আমাদের এই একখন্ড জমি ছাড়া আর কোন সম্পদ নাই। সম্প্রতি সময়ে চিংকুম পাড়ার কয়েকজন মুরুং লোকজন আমাদের ৫ একর পাহাড় কেড়ে নিতে চাচ্ছে। তারা আমাদের অজান্তে পাহাড় থেকে কয়েকদফা গাছ কেটে নিয়ে গেছে। আমার সন্তানরা প্রতিবাদ করলে তারা বন্দুক, দা, ছুরি ও লাঠি দিয়ে মারতে আসে। এই বিষয়ে বিচার দিয়েও আমরা বিচান পাইনি। তারা আমাদের কিছু টাকা নিয়ে সরে আসতে বলে। এই একখন্ড জমি চলে গেলে আমার সন্তানরা ভূমিহীন হয়ে যাবো। ওরা আমাদের শেষসম্বল কেড়ে নিতে চায়।

মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নবীর সন্তান মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে আমি ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দিয়েছি। আমার পিতা বেঁচে থাকার সময় পাহাড়ে এক হাজার সেগুন গাছ রোপন করেন। রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড চিংকুম পাড়ার মৃত আহই মুরুং এর ছেলে রেংয়ং মুরুং, মাংপুং মুরুং, থুমলুং মুরুং সহ ৯/১০ জন লোক লাগানো চারা চুরি করে উপড়ে নিয়ে যায়। এছাড়া বিবাদীরা আমার পিতা মারা যাওয়ার সুযোগে উক্ত জমির সম্পূর্ণ জায়গার গাদা, গুটিয়া, গামারি, সিরাজী গাছ কেটে ও পাহাড়ে আগুন দিয়ে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ক্ষতিসাধন করে। আমরা গাছ ও বাঁশের চারা লাগালে তারা উপড়ে ফেলে। তারা বলে আমরা জমিতে গেলে আমাদের জানে মেরে ফেরবে। বিবাদী রেংয়ং মুরুং গাদা বন্দুক নিয়ে সামনে এসে সন্ত্রাসী কায়দায় হুমকি প্রদান করে। বর্তমান আমার পরিবারের সবাই জমিতে গাছ রোপন সহ সমস্ত কাজকর্ম করতে আতঙ্কে জীবন যাপন করছি।

মিজানুর রহমান আরো বলেন, গত ২৯ মার্চ মঙ্গলবার আমি পাহাড়ে গেলে রেংয়ং মুরুং, মাংপুং মুরুং, থুমলুং মুরুং সহ ৯/১০ জন লোক বন্দুক, দা, ছুরি ও লাঠি দিয়ে হামলা চালায় এবং আমাকে মারধর করে। আমাদের পাহাড়ে স্থানীয় বাসিন্দা হিসাবে ও নিজেদের পরিচয়ের জন্য এই জায়গা আমাদের অস্তিত্ব।

এই বিষয়ে রেংয়ং মুরুং ও নাম প্রকাশ না করা শর্তে চিংকুম পাড়ার আরেকজন বলেন, পাহাড়টি দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের দখলে আছি। বংশপরমপরা এই জায়গায় আমাদের দখল আছে। যদিও আমাদের কোন কাগজ নেই। আমরা এই জায়গা ছাড়বোনা।

রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, আমরা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করতে চেষ্টা করছি। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নবীর ওয়ারিশদের ১ লাখ টাকা নিয়ে জায়গার স্বত্ত্ব ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল। মুরুং লোকজন মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নবীর আরেক ছেলে আনিছুর রহমান থেকে পার্শ্ববর্তী আর/৫৮ হোল্ডিংটি ক্রয় করে সেখানে বাগান সৃজন করে দখলে আছে।