রাঙ্গামাটি আওয়ামীলীগের তৃণমূলেই ডাক অবৈধ অস্ত্র নিপাত যাক
রাষ্ট্রের সাথে সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা করবেন না স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন: হানিফ
॥ মিলটন বড়ুয়া ॥
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, এমপি বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির বীজ বপন করা হয়েছিল জিয়াউর রহমানের সময়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আওয়ামীলীগ করা যাবে না কিন্তু বিএনপি-জামায়াত করা যাবে এমন কথার অর্থই হলো এখানে অশান্তি সৃষ্টির পিছনে তাদের ইন্ধন রয়েছে। রাষ্ট্রের সাথে সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা করবেন না বরং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন। সোমবার (২১মার্চ) রাঙ্গামাটিতে জেলা আওয়ামীলীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ এর আয়োজিত এ সম্মেলন সকাল সাড়ে ১০ টায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনষ্টিটিউিট এর উন্মুক্ত সভামঞ্চের প্রতিনিধি সম্মেলনে দীপংকর তালুকদার, এমপি এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্ত ছিলেন, জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ মোহাম্মদ স্বপন, এমপি, এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা, এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, আমিনুল ইসলাম আমীন, কেন্দ্রীয় প্রচার উপ-সম্পাদক। বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ফিরোজা বেগম চিনু, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনছুর আলী সহ তৃণমূল পর্যায়ের ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ। এসময় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমরা চাকমা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, জেরা াাওয়ামীলগের সহ সভাপতি রুহুল আমনি সহ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ। বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত পুরো দেশের মানুষ। মেঘা উন্নয়নে কমতি নেই। কিন্তু বিএনপির নেতারা দেশের উন্নয়ন দেখে না। তারা শুধু মিথ্রাচার করেই চলে, মানুষকে বিভ্রান্তর করার চেষ্টা করে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাস কার্যক্রম দিতে পৃথিবীতে কোথাও শান্তি আসেনি। যারা অস্ত্রবাজী করছেন তাদের লক্ষ্যটাই বাকি। এ ধরনের কর্মকান্ড কোন রাজনৈতিক দলে হতে পারে না। পাহোড়ের অশান্তির বীজ বপন করেছিল জিয়াউর রহমানের আমলে। তিনি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, রাষ্ট্রের সাথে সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা করবেন না। যারা চাঁদাবাজী, অস্ত্রবাজী, হুমকী দিচ্ছেন তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন না হয় আমরা অভিযান চালাবো। তিনি কুষ্টিয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, সেখানেও নানান বাহিনীর কাছে মানুষ জিম্মি ছিল কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সব দমন করেছেন। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে আওয়ামীলীগ করা যাবে না কিন্তু বিএনপি-জামায়াত করা যাবে এমন কথার অর্থই হলো এখানে অশান্তি সৃষ্টির পিছনে তাদের ইন্ধন রয়েছে। পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সরকারকে জানানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সভায় তিনি আগামী ২৪ মে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন ঘোষণাও করেন।
অপর দিকে প্রধান বক্তা জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ মোহাম্মদ স্বপন, এমপি, বলেছেন, সভা সমাবেশে দেখা যায় নেতাদের এমন ভাব যে তাঁরা গাছে উঠে গেছেন। ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ছোট হয়ে গেছে অথচ তাদের বড় বড় ছবি আবার তার নীচে ভুমি দস্যু, মাদক কারবারীর ছবিও থাকে। তিনি নেতাদের উদ্দেশে বলে আমাকে নৌকা দিয়েছেন বলে আমি এমপি, চেয়ারম্যান বা নেতা হয়েছি। ঐসব নেতাদের অনেককে নির্বাচনে দেখা যায় জামানত নিয়েও ফিরে আসতে পারে না। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ চির যৌবনের রাজনৈতিক দল তার ভাটাও পড়ে না, তাকে সঙ্কুচিতও করা যাবে না।
দীপংকর তালুকদার, এমপি সভাপতির বক্তব্যে বলেছেন, এখানে আওয়ামীলীগকে মরা গাছ বলা হয়েছিল, কিন্তু এখানের ছাত্র সমাজ আর মা-বোনেরা কখনই তা হতে দেয় নি। বান্দরবানে সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা নিহত সহ আওয়মীলীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলে গত ১৭ মার্চ ছাত্রীলগের উপ প্রচার সম্পাদক জয় ত্রিপুরাকে যারাই হত্যা করুক তদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ছাত্ররা ক্ষোভে রয়েছে এখানকার পরিস্থিতি অন্যরকমও হতে পারে।
এর আগে তৃণমূল পর্যায়ের নেত্রীবৃন্দরা বলেছেন, অনেক ত্যাগ ও কষ্টের বিনিময়ে দলের হাল ধরেছি। অস্ত্র বুলেটের ভয় উপেক্ষা করেই আমরা নেতৃত্ব দিচ্ছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তাহাতে আমাদের প্রান এই আছে এই নাই অবস্থা। আমরা ১০ উপজেলার ৫০ ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা ভয়ের সাথে লড়াই করেই টিকে আছি। এখানে উন্নয়ন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু ভোট নৌকার ঘরে আসবে তার নিশ্চয়তা কম। তাই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের উৎখাত করতেই হবে। আওয়ামীলীগের তৃণমূলেই ডাক অবৈধ অস্ত্র নিপাত যাক।
এর আগে সভাশুরুতেই সবাই দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সহ সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা। তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে দশ উপজেলাসহ ইউনিয়ন এবং জেলা পর্যায়ের হাজারো নেতা-কর্মী অংশ গ্রহন করেন। সম্মেলন শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।