বর্তমানে শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন পার্বত্য চট্টগ্রামের হেডম্যান সমাজ
পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ বহাল রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ আইন বহাল রাখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের হেডম্যানবৃন্দ (মৌজা প্রধান)। বুধবার রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর পাঠানো এক স্মারকলিপিতে এ দাবী জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য রাঙ্গামাটি হেডম্যান এসোসিয়েশেনের সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, সহ সভাপতি এড. ভবতোষ দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক কেরোল চাকমা, যুগ্ম সম্পাদক থোয়াই অং মারমা, সাংগঠনিক সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা, দপ্তর সম্পাদক দীপন দেওয়ান টিটুসহ অন্যান্য হেডম্যানরা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা প্রদানসহ এদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সনাতনী, রীতি, প্রথাসমুহ সংরক্ষণের জন্য বৃটিশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ প্রনয়ন করে। এ আইনের আলোকে ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিও সম্পাদিত হয়। চুক্তির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি) জেলা পরিষদ সংশোধন হয়। পার্বত্য চুক্তিতে অবিচ্ছেদ্য অংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০।
২০০৩ সনে তৎকালীন সরকার ক্ষমতাসীন থাকাকালে হাইকোর্ট বিভাগে Rangamati Food Products Ltd. V. Commissioner of Customs and Others, 10 BLC (2005), 525 মামলায় তৎকালীন এটর্নি জেনারেলের বিদ্বেষপ্রসূত, ত্রুটিপূর্ণ, পক্ষপাতদুষ্ট ও বৈষম্যমুলক অবস্থান এবং উপস্থাপনার জের ধরে আদালত ১৯০০ সনের রেগুলেশনকে Dead Law (‘মৃত আইন’) মর্মে ঘোষণা দেওয়ার প্রয়াশ পান। তবে, পরবর্তীতে দেশে আপনার নেতৃত্বাধীনে সরকার গঠিত হলে আপনার সরকারের নির্দেশে এটর্নি জেনারেল কর্তৃক যথাযথ ভূমিকা পালনের ফলে ২০১৭ সনে মহামান্য আপিল বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হাইকোর্টের রায়কে খারিজ করে ১৯০০ সনের রেগুলেশনকে বৈধ ও কার্যকর আইন মর্মে ঘোষণা প্রদান করেন।
আপীল বিভাগেরে এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে ২৫ অক্টোবর মোঃ আব্দুল আজিজ আপীল বিভাগে পুনরায় রিভিউ আবেদন করেন। আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া বিষয়টি পুনরায় উত্থাপিত হওয়ায় বর্তমানে শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন পার্বত্য চট্টগ্রামের হেডম্যান সমাজ।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, এ রিভিউ এর উদ্দেশ্য হল বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক, ধর্ম নিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী প্রগতিশীল চরিত্রকে ব্যহত করা। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিন্ন ভিন্ন পাহাড়ি জাতিসত্তার স্বতন্ত্র সত্তা, পরিচয়, স্বকীয়তা, ঐতিহ্য, জীবনাচার ও মৌলিক অধিকারকে ভুলুন্ঠিত করা যা অবশ্যই সংবিধানের পরিপন্থী।