[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ (মূল) দলের সদস্য আটকখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনলুটেরার দল আচমকা গন্ডোগোল আবোল তাবোল দল বাঁধাইয়া হগ্গল হাতাইয়া নিতে গোল পাকাইয়াছে, চিন্তায় আছি….দিন-মাস বছর ধরেই অবৈধ দখলে সংকুচিত কাপ্তাই হ্রদ, মুক্ত করতে হবেদেশে বর্তমানে যথেষ্ট খাদ্য মজুদ রয়েছে: উপদেষ্টা আলী ইমামমানুষের জীবন-কর্ম জ্ঞান, মৃত্যু, পুনঃর্জন্ম সবকিছুই ন্যাচারাল: পার্বত্য উপদেষ্টাগৌতম বুদ্ধের ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত প্রধান ঘটনাই হলো ‘বুদ্ধপূর্ণিমা’বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে দুর্বৃত্তের আগুনে এক পরিবার খোলা আকাশের নীচেবান্দরবানের লামায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হাটহাজারী যুবকের মৃত্যুখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বেওয়ারিশ হিসেবে তিন সন্ত্রাসীর লাশ বৌদ্ধ শ্মশানে দাফন

বান্দরবানের রুমায় সন্ত্রাসী ও সেনাসদস্যের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গুলি এক কর্মকর্তাসহ নিহত ৪

৬৩

॥ আকাশ মার্মা মংসিং, বান্দরবান ॥

বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার বথিচন্দ্র পাড়া এলাকায় সেনা সদস্য এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা সহ তিন সন্ত্রাসী নিহত সহ এক সেনা সদস্য গুরতর আহত হয়েছে। গত বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ ও থানা সুত্র নিশ্চিত করেছে। ঘটনার পর বর্তমানে সেখানে আইনসৃংখলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। নিহত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় না পাওয়ায় শুক্রবার বিকালে বান্দরবানের স্থানীয় বৌদ্ধ শ্মশানে দাফন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুদ্দুস ফরাজী।

পুলিশ ও সেনা সুত্র জানায়, নিয়মিত টহল অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার রুমা জোনের রাইক্ষ্যয়াং লেক ২৮ বীর আর্মি ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিব এর নেতৃত্বে বথিচন্দ্র পাড়া নামক এলাকায় অভিযান চালায়। সেনা অভিযানের সময় সেখানে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে সেনা সদস্যরা পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির এক পর্যায়ে ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান (৪৫) মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় এসময় অস্ত্রধারী তিন সন্ত্রাসীও নিহত হয় এবং সেনা সদস্য মোঃ ফিরোজ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। গোলাগুলির এক পর্যায়ে আস্ত্রধারী বাকী সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। সেনা সুত্র জানায়, নিহত ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান এর বাড়ি বরিশাল এবং আহত সদস্য ফিরোজ এর বাড়ি সাতক্ষিরা বলে জানান।

এ দিকে স্থানীয় সুত্রগুলো জানায়, ঘটনার পর রুমার বথিপাড়া সহ আশপাশ এলাকায় সেনা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহত অস্ত্রধারী তিন সন্ত্রাসীর নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি। সন্ত্রাসীদের মরদেহ শুক্রবারও বান্দরবানের হাসপাতাল মর্গে পড়ে ছিল। তাদের লাশ কেউ গ্রহন না করলে সরকারিভাবে কবরস্থ করা হবে বলে হাসপাতাল সুত্র জানিয়েছে। পরে শুক্রবারও তাদের লাশ গ্রহন করতেও কেউ না আসায় বিকালে পৌরসভার মাধ্যমে বান্দরবানের বৌদ্ধ শ্মশানে নিহত তিন সন্ত্রাসীকে দাফন করা হয়েছে বলে হাসপাতাল ও থানা সুত্র জানিয়েছে।

অপরদিকে সেনা বাহিনীর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিয়মিত টহল পরিচালনার উদ্দেশ্যে গত ২ ফেব্রুয়ারী বুধবার ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান নেতৃত্বে সেনা সদস্যরা পাখইপাড়া এলাকায় গমন করে। পরে বথিপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের অবস্থান স্থানীয় সোর্স নিশ্চিত করলে সেনাবাহিনীর টহল দল সেখানে পৌঁছলে রাত ১০.২০ঘটিকার সময় পাড়ার নিকটস্থ একটি জুমঘর থেকে শন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস এর সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর টহল দলের উপর গুলি বর্ষণ করে। এসময় হাবিবও জীবন রক্ষার্থে টহল দলকে নিয়ে পাল্টা গুলি চালায়। পরে ৩জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এসময় বাকি ৭/৮ জন পালানোর চেষ্টা করলে সেনা টহল ধাওয়া করে পরে সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে হাবিবের মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহাদাত বরণ করেন এসময় সৈনিক ফিরোজ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসার জন্য ফিরোজকে চট্টগ্রামস্থ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়।

এসময় সন্ত্রাসী দল কর্তৃক ব্যবহৃত ১টি সাব মেশিন গান (এসএমজি) ২৭৫ রাউন্ড গুলি, ৩টি ম্যাগাজিন, ৩টি গাদা বন্দুকসহ ৩ রাউন্ড গুলি, ৫টি মোবাইল ফোন, ২টি বান্ডুলিয়ার, জলপাই রং এর ৪ জোড়া ইউনিফর্ম, নগদ ৫২ হাজার ৯শত জব্দ করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, বর্তমানে উক্ত এলাকায় ব্যাপক তল্লাসী জারি রেখেছে সেনা টহল এবং জনগনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা শান্তি চুক্তি লংঘন করছে। এ ধরনের অপতৎপরতার সমুচিৎ জবাব প্রদানে প্রস্তুত সেনাবাহিনী। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, সম্প্রীতি এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমানসহ অন্য সকল বীর সেনাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগ জাতি কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ করছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুদ্দুস ফরাজী জনিয়েছেন, তিন সন্ত্রাসীর কোন নাম ঠিকানা তথ্য পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্ত শেষে তিন জনের লাশ পৌরসভার সহযোগীতায় বেওয়ারিশ হিসেবে বৌদ্ধ শ্মশানে দাফন করা হয়েছে।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল কাসেম চৌধুরী নিশ্চিত করে বলেন, লাশগুলো থানায় হস্তান্তর করা হলে পরে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে নেয়া। বর্তমানে ঘটনাস্থল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার রয়েছে। শুক্রবার বিকালে তিনি জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশগুলো বৌদ্ধ শ্মশানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনা একটি মামলা হয়েছে।