সংখ্যালঘু জাতিসত্তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে
খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ ভিক্ষুক হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
খাগড়াছড়ি সদর গুগড়াছড়ি ধর্মসুখ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বিশুদ্ধা মহাথেরোকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা, বিহারে লুটপাট এবং চট্টগ্রামে জুম্ম চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষকে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে এবং ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম। গত শুক্রবার বিকাল ৩ টায় চট্টগ্রাম নগরীর সিনেমা প্লেস এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি চেরাগাী পাহাড়, ডিসি হিল ঘুরে নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারের সামনে গিয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অমিত চাকমার সঞ্চালনায় এবং গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সহ-সভাপতি শুভ চাকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের শিক্ষক ডক্টর জিনবোধি ভিক্ষু, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মিটন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী রিতা চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে যখন দেশের জনমানুষের জীবনযাত্রা বিপদসংকুল হয়ে উঠেছে। নৈরাজ্যবাদী, ধর্মান্ধ ও উগ্র জাতীয়তাবাদী একটা গোষ্ঠীর সহায়তায় জারি রেখেছে ফ্যাসিবাদী শাসন। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনমানুষের উপর দমন-পীড়ন, জেল-জুলুম ও বন্দুকযুদ্ধের নামে নিরীহ পাহাড়িদের ব্রাশফায়ারে নির্বিচার হত্যা তার সাক্ষ্য বহন করে।
বক্তারা খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যা ও চট্টগ্রামে অপর এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যা চেষ্টার ঘটনা তুলে ধরে বলেন, গত ৩০ জানুয়ারি ২০২২ দিবাগত গভীর রাতে খাগড়াছড়ি গুগড়াছড়ির ধর্মসুখ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বিশুদ্ধা মহাথেরকে কুপিয়ে হত্যা, বিহারের জিনিসপত্র লুটপাট এবং পরদিন একই কায়দায় চট্টগ্রামস্থ জুম্ম চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। এর পূর্বেও আমরা দেখেছি ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার রামুতে বৌদ্ধ পল্লীতে অগ্নিসংযোগ, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের উপর অতর্কিত হামলা, গত বছর কুমিল্লায় পূজাম-পে মূর্তি ভাঙচুর এবং ধর্মীয় অবমাননার দায়ে পীরগঞ্জে হিন্দু পল্লীতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। যার কোনটির বিচার এখনো আমরা পাইনি। এমনকি অপরাধীরা চিহ্নিত হওয়ার পরও সরকার তাদের গ্রেফতার করেনি। পরবর্তীতে দেখা গেছে হামলাকারীরা প্রশাসনের নাকের ডগায় দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বক্তারা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে পুঁজি করে সংখ্যালঘু জনগণের উপর শাসকগোষ্ঠীর এমন পরিকল্পিত হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে দেশে বসবাসরত সকল সংখ্যালঘু জাতিসত্তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। সমাবেশ থেকে বক্তারা বৌদ্ধ ভিক্ষুকে নৃশংসভাবে হত্যাসহ এ যাবৎ সংখ্যালঘুদের উপর যে সকল হত্যাকা- ঘটেছে প্রত্যেকটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় এনে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি-