খাগড়াছড়িতে বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন
॥ দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ॥
পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এই দিন তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর তার মুক্তি ও দেশে প্রত্যাবর্তন নিয়ে সারা দেশেই উৎকণ্ঠা বিরাজ করছিল। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের আনন্দ অপূর্ণ রয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরার মধ্য দিয়ে মানুষ যেন পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের দেখা পেয়েছিল সেদিন। বঙ্গবন্ধু তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে।
বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি যখন তেজগাঁও বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করে, তখন ঢাকার রাস্তায় আনন্দাশ্রুতে উদ্বেলিত হতে থাকে লাখ লাখ জনতা। এর আগে ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করেন তিনি। সেদিনই তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডনে যান। সেখানে দুই দিন অবস্থান করে ১০ জানুয়ারি দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফেরেন বঙ্গবন্ধু।
দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (১০জানুয়ারি) সকালে খাগড়াছড়িতে জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে র্যালী ও আলোচনা সভাসহ পালিত হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। শুরুতে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পার্ঘ্য অর্পন ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে র্যালী আকারে চেতনা মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে র্যালিটি দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ করে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
আলোচনা সভায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানির বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান বঙ্গবন্ধু। তাঁর ডাকে বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তি সংগ্রামে। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও কৌশলগত দক্ষতার কারণে আজ আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি।
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর বিশ্ব জনমতের চাপে ১৯৭২ সালে ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। সেখান থেকে ১০ জানুয়ারি দিল্লি হয়ে পৌঁছান ঢাকায়। লাখো জনতা সেইদিন তাদের প্রিয় নেতাকে তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে খোলা ট্রাকে করে তৎকালীন রেসকোর্স (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী ) নিয়ে যায়।
এসময় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে মক্যচিং চৌধুরী, এডভোকেট আশুতোষ চাকমা, নিলোৎপল খীসা, পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সনজীব ত্রিপুরা ও সাধারন সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়, জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক উবিক মোহন ত্রিপুরাসহ আওয়ামী লীগের জেলা শাখা ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।