মানিকছড়ির ইউএনও তামান্না মাহমুদ’র বিদায় সংবর্ধনা
॥ মোঃ ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি ॥
আনুষ্ঠানিক ভাবে মানিকছড়ি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ’কে। বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছরে ধরে মানিকছড়ি উপজেলায় তার কর্মজীবনের নিজের বাস্তাব অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন ইইউএনও তামান্না মাহমুদ। তার কান্না বিজড়িত কণ্ঠস্বরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে নেমে আসে নিস্তবদ্ধ-নিরবতা। তাই ইউএনওর বিদায়ে যেমনি নিজে কাঁদলে, তেমনি সকলকে কাঁদালেন।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ইউএনও তামান্না মাহমুদকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীন, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম বাবুল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডলী চৌধুরানী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুপা ঘোষ, ওসি মোঃ শাহানূর আলম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ রাজ্জাক, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, ক্যয়জরী মহাজন, উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম, যুবলীগ সভাপতি মোঃ সামায়উন ফরাজী সামু, ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ জামাল হোসেনসহ উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, বাজার ব্যবসায়ী, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
বিদায়ী বক্তব্যে ইউএনও তামান্না মাহমুদ বলেন, আমি ইউএনও হিসেবে মানিকছড়ি আসার পর থেকে উপজেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের পাশাপাশি স্বর্বস্থারের মানুষের সহযোগিতা ও ভালোবাসা পেয়েছি। পরিষদরে যেকোনো কাজে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সকলেই আমার কাজটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এখানে দীর্ঘ কর্মজীবনে কারো সাথে মতানৈক্য হয়নি। আমার কাছে অন্যায় কোনো তৎবির করতে উপজেলার কেনো ব্যক্তি আসেনি। সকলেই আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাই আপনাদের আন্তরিকতায় সত্যি আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের কথা কোনোদিন ভূলতে পারবে না। সরকারি চাকুরীতে বদলির নিয়মটি একটি নিয়মিত বিষয়। যারা সরকারি চাকরি করেন তারা বিষয়টি খুব ভালো করেই জানে। তিনি আরো বলেন, আমি এর পূর্বে যেখানে ছিলাম সেখানেও আপনাদের মত ভালোবাসা পেয়ে বিদায় নিয়েছিলাম। আজও আপনারা যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তা কখনও ভূলার মত নয় আর ভূলবও না। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। বাকি কর্মজীবনেও যেন এই ভালোবাসা নিয়ে কাজ করে যেতে পারি।
সমাপনী বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, উপজেলা পরিষদ আর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে মতানৈক্য থাকে শুনেছি কিন্তু এই ইউএনওর সাথে কাজ করতে গিয়ে কোনো দিন মতানৈক্য ঘটেনি। যেকোনো সময়ে যেকোনো বিষয়ে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সর্বত্মক সহযোগিতার মনমানসিকতা দেখিয়েন ইউএনও তামান্না মাহমুদ। বিশেষ করে করোনাকালিন সমেয় ঘরে ছোট বাচ্চা রেখে দিনরাত যেভাবে মানুষের পাশে থেকে উপজেলার সকল মানুষকে এক সাথে কাজ করে গেছেন তা হয়তো অন্য কারো পক্ষে সম্ভব হতো না। আমি কখনও কোনো বিষয়ে তার কাছ থেকে অসহযোগিতামূলক আচরণ লক্ষ করিনি। সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেয়েছি। তাই উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে আপকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। যেখানেই থাকেন না কেন আপনার এমন আন্তরিকতার কথা উপজেলাবাসী কোনোদিন ভূলবে না বলে আমি মনে করি।