আদিবাসীদের জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে
পার্বত্য চুক্তির ২যুগ পূর্তি উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে সংবাদ সম্মেলন
॥ খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি ॥
চুক্তির ২৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশন আইনের বিধিমালা প্রণয়ন পূর্বক কার্যক্রম শুরু করার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) দলের নেতৃবৃন্দ ।
মঙ্গলবার (৩০নভেম্বর) দুপুরে খাগড়াছড়ির জেলা শহরের এফএনএফ রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বিভুরঞ্জন চাকমা।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আরাধ্য পাল খীসা, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিন্ধু কুমার চাকমা, কেন্দ্রীয় মহিলা সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ববিতা চাকমা, খাগড়াছড়ি সদর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুষ্মিতা চাকমা প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর কেটে গেছে ২৪টি বছর। কিন্তু সুদীর্ঘ এসময়েও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই তৃতীয়াংশ ধারাগুলোই অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরকারী আওযামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সাল থেকে এক যুগের অধিক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো পূর্বের মতোই অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে ভূমি সমস্যা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ’ঘ’ খন্ডের ৪ ধারায় ‘‘জায়গা-জমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে একজন অবসর প্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ভূমি কমিশন’’ গঠনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচলিত আইন, রীতি, প্রথা ও পদ্ধতি অনুসারে পার্বত্য অঞ্চলের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করা। কিন্তু ২৪বছরে একটি ভূমিও বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা । পরে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিমোক্ত দাবীসমূহ তুলে ধরেন: দাবিগুলো হচ্ছে- চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়নপূর্বক দ্রুত বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি কার্যকর রাখা, চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সাধারণ প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, উপজাতীয় আইন ও সামাজিক বিচার কার্যাবলী ও ক্ষমতা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে হস্তান্তর করা, চুক্তি মোতাবেক স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়নপূর্বক তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন করা, চুক্তি মোতাবেক প্রত্যাগত জনসংহতি সমিতির সদস্যদের যথাযথ পুনর্বাসন করা, ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরনার্থী ও আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় উদ্বাস্তদের যথাযথ পুনবর্বাসন করা, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমতলের আদিবাসীদের জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা।