[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
বান্দরবানের থানচিতে ১৩মাস পর পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহারজিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কাপ্তাইয়ে দুস্থদের মাঝে চাল বিতরণবান্দরবানে খুলে দেয়া হয়েছে লামা উপজেলার সকল রিসোর্টসীমান্তে পুশইন ও চোরাচালান ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বাঘাইহাট বিজিবিলংগদু উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবির টহল জোরদার: লে. কর্ণেল নাহিদ হাসানরাঙ্গামাটিতে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় যুবক আটকপুশইন ও চামড়া পাচার রোধে রামগড় ৪৩ বিজিবির নিরাপত্তা জোরদাররাজস্থলীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালনচামড়া পাচার ও সীমান্ত দিয়ে পুশইন ঠেকাতে বিজিবি টহল বাড়িয়েছেমাটিরাঙ্গা সেনা জোন কর্তৃক ঈদ উপহার ও মানবিক সহায়তা প্রদান
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

এডমিট-রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছিল ভূয়া, পাশ করিয়ে দেয়ার আশ্বাস!

মাদ্রাসা সুপারের প্রতারণায় পরীক্ষা দিতে পারেনি ১৬জন দাখিল পরীক্ষার্থী

১৭১

॥ মোঃ ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি ॥

মানিকছড়ি উপজেলার গাড়ীটানা নেছারিয়া ইসলামি দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাহমুদুল হাসানের প্রতারণার শিকার হয়ে পরীক্ষা দিতে পারেনি ১৬ জন দাখিল পরীক্ষার্থী! তাদের পরিবার এ অভিযোগ করেন। পরীক্ষার দিন সকালে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে নিজের মায়ের বাসায় পরীক্ষার নির্ধারিত দেড় ঘন্টা বসিয়ে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও ভূয়া এডমিড কার্ড ধরিয়ে অটোপাস করানোর কথা বলে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠিয়েদেন তিনি। উপজেলার সর্বস্থরের মানুষের মাঝে ঘটনা জানাজানির পর সমালোচনার ঝড়!

শনিবার (২০ নভেম্বর) সরেজমিনে পরীক্ষার্থী ও মাদরাসায় গিয়ে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে খাগড়াছড়ি জেলায় প্রথম প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা এটি। অভিজ্ঞ ও দায়িত্বশীল সুপার না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি এখনও এমপিওর মুখ দেখেনি। তবে ইতোপূর্বে দায়িত্বে ছিলেন যারা তারা সকলেই এই প্রতিষ্ঠানের আয়ের অংশে নিজেদের পকেট ভারি করেছেন অথবা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন পিছিয়ে থাকলেও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীনসহ স্থানীয় নেতৃত্বাধীন ব্যক্তিদের সার্বিক সহয়োগিতা ও দিক নির্দেশনায় বর্তামান সময়ে বেশ ভালোই চলছিল প্রতিষ্ঠানটি।

তবে গেল ২০১৮ সালে মাও. মোঃ মাহমুদুল হাসান (আলিম) নামের এক শিক্ষককে সুপার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন কমিটি। প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক স্বীকৃতির জন্য এফডিআর’সহ বিভিন্ন কাজে তাকে টাকা-পয়সা দিয়ে অফিসিয়ালী প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতির দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। কিন্তু ওই প্রতারক সুপার গত ৪ বছরে প্রতিষ্ঠানের কোন অগ্রগতি না করে বরং চলতি ২০২০ সালের ১৬ জন দাখিল পরীক্ষার্থীর ফরম ফিলাপের টাকা আত্মোসাত করে তাদের সাথে প্রতারণা করতেও দ্বিধা করেনি!

প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ১৬ জন শিক্ষার্থীর( ছাত্র-৮,ছাত্রী-৮) রেজিস্ট্রেশন ফি, ফরম ফিলাপ ফি ও কেন্দ্র ফি সবকিছু নিয়ে বিদায় অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছে সুপার! ঈরীক্ষার আগের দিন রেজিস্ট্রেশন ও এডমিট কার্ড দেয়ার কথা থাকলেও তিনি পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে প্রদানের আশ্বাস দেন। পরীক্ষার দিন ১৪ নভেম্বর সকালে সকল শিক্ষার্থীদের উপজেলা সদরস্থ দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছলে তাদের হতে কাগজপত্র ধরিয়ে দেন তিনি। কিন্তু সেই সব যে ছিল ভূয়া সেটি জানা ছিলনা কোনো পরীক্ষার্থীর। পরে তাঁর মায়ের বাসায় অবস্থান করতে বলে। তাদেরকে পরীক্ষা দিতে হবে না বলে বসিয়ে রাখেন। তিনি আরো বলেন, পরীক্ষা না দিয়ে তোমাদের অটোপাস করিয়ে দেয়া হবে! আর আমি সার্টিফিকেট এনে দেব। পরে পরীক্ষার নির্ধারিত সময় শেষ হলে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পরে শুক্রবার পরীক্ষার্থীরা জানতে পারেন, তাদেরকে দেওয়া এডমিট কার্ড ভূয়া এবং তাদের রেজিস্ট্রেশন কার্ডও ভূয়া ! এ ঘটনা জানাজানি হলে গা ঢাকা দেন অভিযুক্ত সুপার মাও. মোঃ মাহমুদুল হাসান।

মাদরাসায় বর্তমানে কর্মরত সহকারি শিক্ষক ফিরোজ হাসান, ঝর্ণা আক্তার এবং মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, মাদরাসার ব্যানব্যইজ পাসওয়ার্ড, উপবৃত্তির পাসওয়ার্ড, রেজিস্ট্রেশন পাসওয়ার্ডসহ সকল কিছুই সুপারের দায়িত্বে রয়েছে। তিনি কোনো কিছুই কখনও আমাদের সাথে শেয়ার করেননি। তাছাড়া (মাও. মো. মাহমুদুল হাসান) সুপার সুপার নিজেই এসাইনমেন্টের সকল কাজও নিজেই করেছেন। যা কিনা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সহকারি শিক্ষকদের দিয়ে করিয়ে থাকেন। বিশেষ করে সুপার (মাও. মোঃ মাহমুদুল হাসান) আইটি এক্সপার্ট হওয়ায় রেজিস্ট্রেশনসহ অনলাইনের সকল কাজ নিজেই করতেন। আমাদের দিয়ে উনি কিছুই করাতেন না। আমাদের যে ১৬ পরীক্ষার্থীর যে রেজিস্ট্রেশন হয়নি সেটিও আমাদের জানা ছিলনা। আমরা ভেবেছি সে (মাও. মোঃ মাহমুদুল হাসান) যেহেতু আইটি এক্সপার্ট সেহেতু নিশ্চই ঠিক ঠাক করে নিয়েছে। কিন্তু এখন জানতে পারলাম শিক্ষার্থীদের সাথে উনি প্রতারণা করেছেন। যেটি শিক্ষক সমাজ হিসেবে সত্যি লজ্জাজনক!

এ ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক মন্তব্য করে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, মাদরাসা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ ধরণে অনাকাঙ্খিত ঘটনা আর কোনোদিন ঘটেনি। ১৬জন পরীক্ষার্থী যে পরীক্ষা দিতে পারেনি এ বিষয়টি আমাদের খুব হতাশ করেছে। একজন আলেম সমাজের কাছ থেকে যেটি মোটেও কাম্য নয়। তবে পূনরায় মাদরাসা কিভাবে পরিচালনা করা যায় সে ব্যাপারে আমরা খুব শীগ্রই ম্যানেজিং কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নিব।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল মতিন বলেন, সুপারকে বিশ্বাস করে মাদরাসার আয়-ব্যয়ের সকল হিসেব নিকেশের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং সকল হিসেব নিকেশ তার কাছে রয়েছে। কিন্তু চলমান দাখিল পরীক্ষায় মাদরাসার ১৬জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করতে পারা বা তাদের হাতে ভূয়া কাগজপত্র ধরিয়ে দিয়ে প্রতারণা করা মোটেই উচিত হয়নি। এমন অমানবিক কর্মকান্ডের জন্য তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীও করেন তিনি।

এ ব্যাপরে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ জানান, প্রতিষ্ঠানের সভাপতির মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হয়েছি। তবে এ ধরণের ঘটনা সত্যিই দুঃজনক। একজন প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাজ থেকে এমনটা আশা করিনি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।