মানিকছড়ি ও লক্ষীছড়ির ছয় ইউপিতে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী চূড়ান্ত, রামগড়েও আলোচনা চলছে

॥ খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি ॥

আগামী ২৩ ডিসেম্বর দেশের ৮৪০টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চতুর্থ ধাপে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে ভোট হবে নবম ধাপের তিন পৌরসভায়। পৌরসভার ক্ষেত্রেও মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ সময় ইউনিয় পরিষদের সাথে মিল রেখে একই রকম রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব। এছাড়াও চতুর্থ ধাপের ৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বাকিগুলো হবে প্রচলিত ব্যালট পেপারের মাধ্যমে। গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে ইসি সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।

এ দিকে চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী, তিনটহরী ও মানিকছড়ি সদর ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া রামগড় উপজেলার সদর ইউপি ও পাতাছাড়া এবং লক্ষীছড়ি উপজেলার দূল্যাতলী, বর্মাছড়ি ও লক্ষীছড়ি সদর ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাবে মানিকছড়ি সদর ও লক্ষীছড়ি সদর ইউপিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও বাকি ইউপিতে হবে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে।
১০ ডিসেম্বর তফসীল ঘোষণার পর থেকেই দলীয় প্রার্থীদের মনোনয় প্রত্যাশীদের আনাগোনা লক্ষ করা যায় উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের আশপাশে। যেহেতু এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না সেহেতু দলীয় টিকিট পেলেই নির্বাচনে নির্বাচিত হতে পারবেন প্রার্থীরা এমটাই ধারণা করছেন তারা। ইতোমধ্যে সম্ভব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কে পাচ্ছেন চেয়ারম্যান পদে দলীয় টিকিট আর ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে কারা পাচ্ছে দলীয় মৌন সমর্থন। দোকান পাটের চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে চুলছেড়া বিশ্লেষণ করছেন উপজেলা পর্যায়ে থাকা নীতিনির্ধারকরা। তবে দলীয় ভাবে যাকে সমর্থন বা টিকিট দেয়া হবে তাকে বিজয়ী করতে মাঠ পর্যায়ে দিনরাত ভোটারদের ধারে ধারে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত থাকবেন দলীয় নেতাকর্মী এমনটা প্রত্যাশা আওয়ামীগের উপজেলার শীর্ষ নেতাদের।

লক্ষীছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তালাত মাহমুদ শিশির জানান, আসন্ন ২৩ ডিসেম্বর লক্ষীছড়ি উপজেলার তিনটি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে লক্ষে গত ১৫ নভেম্বর সদর ইউনিয়নের মেজপাড়া মাঠে কর্মী সভায় গণ সমর্থনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১নং লক্ষীছড়ি সদর ইউপিতে উষাজাই চৌধুরী, ২নং দুল্যাতলী ইউপিতে উচাইপ্রু মারমা ও ৩নং বর্মাছড়ি ইউপিতে নীলবর্ণ চাকমাকে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফলে দলীয় সিদ্ধান্ত মতে যাদেরকে নৌকার মাঝি হিসেবে মনোনিত করা হয়েছে তাদেরকে নির্বাচিত করতে উপজেলা আ.লীগ ও সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা এক সাথে কাজ করবে। তবে দলের বিপক্ষে যদি কেউ অবস্থান নেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।

মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মো. মাঈন উদ্দীন জানান, মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ খাগড়াছড়ি জেলার মধ্যে সবচাইতে সুসংগঠিত। শৃঙ্খলা ও দলীয় সিদ্ধান্তে এক ও অভিন্ন। যা কিনা খাগড়াছড়ি জেলার রাজনৈতিক অঙ্গণে আইডল হিসেবে কাজ করছে। জেলা জুড়ে সুনাম রয়েছে। সু-সংগঠিত ও যোগ্য নেতৃতের কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। ইতোমধ্যে গত ১২ নভেম্বর তিনটহরী ইউনিয়ন পরিষদে বর্ধিত সভায় উপস্থিত সকল নেতাকর্মীদের সমর্থনে একক প্রার্থী হিসেবে মোঃ আবুল কালাম আজাদ, ১৩ নভেম্বর বাটনাতলী ইউনিয়ন পরিষদে ভোটারদের প্রত্যেক্ষ ভোটে মোঃ আব্দুর রহিমকে ও ১৪ নভেম্বর উপজেলা টাউন হলে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে পুনরায় বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুর রহমান ফারুককে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাবে দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সকল নেতাকর্মীরা ভেদাভেদ ভূলে নৌকার প্রার্থীকে ২৩ ডিসেম্বর বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অন্যদিকে রামগড় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তফা হোসেন জানান, রামগড় সদর ও পাতাছাড় ইউপিতে কাকে নৌকার একক প্রার্থী হিসেবে মনোনিত করা যায় সে লক্ষে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের সাথে আলা-আলোচনা চলিয়ে যাচ্ছে তারা। আশা করছেন এক সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন তারা। তবে নৌকা প্রতিককে বিজয়ী করতে সকলে কাজ করবেন বলেও তিনি আশাবাধ ব্যক্ত করেন।