[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

সত্য বাক্যের প্রভাবে আপনাদের মঙ্গলই হবে

বান্দরবান আর্যগুহা ধুতাঙ্গ বিমুক্তি বিহারে প্রথমবার কঠিন চীবর তৈরী ও পরে দান

৮৪

॥ মিলটন বড়ুয়া, বান্দরবান থেকে ফিরে ॥

দেব-মানব পুজ্য ড. এফ দীপংকর মহাথের (ধুতাঙ্গ ভান্তে) একক ধর্ম দেশনায় বলেছেন, আমি সব কিছুকেই ত্যাগ করে বহুজনের কল্যাণে জঙ্গল জীবন গ্রহন করেছি। আমার কোন দুরভিসন্ধি, জাতি দেশ ও সমাজ বিরোধী কাজের পরিকল্পনা ছিল না। আমার এ সত্য বাক্যের প্রভাবে আপনাদের মঙ্গলই হবে। গত শুক্রবার বিকালে বান্দরবান আর্যগুহা ধুতাঙ্গ বিমুক্তি বিহারে দু’দিন ব্যাপী দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে সমাপী দিনে মানব কল্যাণে একক ধর্মদেশনায় এ আর্যপুরুষ এ কথা বলেন।

আর্যনগরস্থ বিহার মাঠ প্রাঙ্গনে বিহারের প্রধান দায়ক ও ১০ম কঠিন চীবর দানোৎসব-২১ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক শ্রী প্রসন্ন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা এর সভাপতিত্বে আয়োজিত কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মং সার্কেল রাজার ছোট ভাই সাচ প্রু, তাঁর সহধর্মিনী ডোনাং প্রু, কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব, শ্রী বেশান্ত বড়ুয়া, চট্টগ্রামের দায়ক শ্রী অনক বড়ুয়া, বিহারের প্রধান সেবিকা শ্রীমতি হ্যাপী চাকমা সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন।

ড. এফ দীপংকর মহাথের ধর্ম উপদেশে আরো বলেছেন, আমি মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান সহ অন্যান্য সকল জাতিগোষ্টির কাছে কৃতজ্ঞ। আমি গণমাধ্যমের প্রতিও কৃতজ্ঞ। স্বধর্ম এবং মানবতা রক্ষায় আপনাদের যে ত্যাগ স্বীকার তা দুঃখ মুক্তি এবং চিত্ত সুদ্ধিকেও সুরক্ষা করবে। আপনারা আমার জ্ঞাতিও বটে। তিনি ধর্ম উপদেশে বলেন, আকাশ স্বচ্ছল এবং নীরব থাকে, কিন্তু আকাশ নীলই থাকবে। আকাশও তার রূপ দেখাতে পারে না ‘মেঘের’ই জন্য। মানুষের মনে হিংসা উৎপন্ন হয়ে স্বভাব এবং ধর্ম হারিয়ে ফেলে। কচ্ছপ আহার সংগ্রহে ডাঙ্গায় উঠলে বুঝতে পারে না তাকে শিয়ালে শিকার ধরেছে। যখন বুঝতে পারে তখন তার অঙ্গগুলো শক্ত খোলসেই লুকিয়ে ফেলে। ধর্মও মানব জাতির শক্ত খোলস। তিনি আরো বলেছেন, বনের গাছ এবং তার শাখা প্রশাখাগুলো বনের প্রাণী বানরের আশ্রয়স্থল, তাই বানরের গুণ হলো সে গাছের শাখা প্রশাখাগুলো ভাঙ্গে না। স্বধর্ম রক্ষা এবং মানব কল্যাণে মানুষের মধ্যে বানরের মতোও গুণ থাকা দরকার। বাড়িটা যখন অন্ধকার হয় তখন বাড়িতে বাতিই দিতে হয়। তিনি ধর্ম দেশনায় বলেছেন, বুদ্ধের শিক্ষা ছিল সবার জন্য। তাই ধর্ম এবং কল্যাণে শুধু নিজের জন্য নয়, আপনারা সহ আমাদেরকেও অপরের জন্য বেঁচে থাকতে হবে। তাই বুদ্ধ বলেছেন, পারমী পূর্ন করো একদিন নির্বাণ হয়ে যাবে।

এদিকে, বুদ্ধের অন্যতম উপাসিকা বিশাখা আড়াই হাজার বছর পূর্বে তুলা থেকে সুতা পরে রং এবং বুননের পর বুদ্ধ সহ তাঁর সংঘকে চীবর দান করেছিলেন বিশাকা। তাই বিশাখা পবর্তিত নিয়মে বান্দরবান আর্যগুহা দুতাঙ্গ বিমুক্তি বিহারে কঠিন চীবর দান উপলক্ষ্যে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি, বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকা, বিলাইছড়ি ও ফারুয়া থেকে বৃহৎ একটি দল তুলা থেকে সুতা পরে রং করে এবং বুননের পর তা সেলাই করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই প্রথম বার তৈরী করা কঠিন চীবর ভিক্ষু সংঘকে দান করেন উপাসক উপাসিকা এবং দায়ক-দায়িকাগণ। বৃহস্পতি ও শুক্রবার এ দান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বৃহস্পতিবার প্রবারণা পূর্ণিমাও অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাতে বুদ্ধ কীর্তনে অংশ গ্রহন করেন বুদ্ধ কীর্তন গায়ক সুমন বড়ুয়া ও তাঁর দল। পূর্ণ্যানুষ্ঠানে হাজারো ধর্মাবলম্বীর সমাগম ঘটে বিহার প্রাঙ্গনে।

অনুষ্ঠানে ধর্মীয় শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন, বিহারের প্রধান দায়ক ও ১০ম কঠিন চীবর দানোৎসব-২১ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক শ্রী প্রসন্ন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, সদস্য সচিব শ্রী বেশান্ত বড়ুয়া ও চট্টগ্রামের দায়ক শ্রী অনক বড়ুয়া প্রমুখ।