মাটিরাঙ্গার বিশ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব
॥ আবুল হাসেম,মাটিরাঙ্গা ॥
সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণে পাহাড়ী ঢলে ভেঙে গেছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ধলিয়া খালের উপর স্থানীয় জনগণের উদ্যোগ ও অর্থায়নে নির্মিত কাঠের ঝুলন্ত সেতু। টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোতে কাঠের ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির নিম্ন আয়ের জনগণ। চরম দুর্ভোগে পড়ে মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের পিছিয়েপড়া বিশ গ্রামের কৃষিজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হলে জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয়দের স্বপ্নের কাঠের ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের দায়িত্ব নেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। দ্রুত সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব প্রদান করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহি অফিসার (অ.দা) মো. হেদায়েত উল্যাহ কে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসনের নির্দেশ ও অর্থায়নে ভেঙে পড়া কাঠের ঝুলন্ত সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ.দা) মো. হেদায়েত উল্যাহ। দায়িত্ব গ্রহণের চারদিনের মাথায় নির্মিত হলো মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের বিশ গ্রামের কৃষিজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের স্বপ্নের কাঠের ঝুলন্ত সেতু। সেতুটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে বিশ গ্রামের দশ হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হলো। নির্মাণ শেষে মঙ্গলবার (৩১ আগষ্ট) দুপুরের দিকে সেতুটি আবারো জনগনের ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
স্বপ্নের সেতুটি নির্মিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত পিছিয়েপড়া পাহাড়ী বিশ গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির জনগণ। এতো দ্রুত সেতুটি নির্মাণ হবে বিশ্বাস করতে পারেননি জানিয়ে মাটিরাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য অমৃত কুমার ত্রিপুরা বলেন, সেতুটি নির্মাণের মাধ্যমে তিনটি ওয়ার্ডের বিশ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেল।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ.দা) মো. হেদায়েত উল্যাহ বলেন, সেতুটি ভেঙে পড়ায় তিনটি ওয়ার্ডের বিশ গ্রামের মানুষের জীবন ও জীবিকা যখন থমকে দাঁড়ায় তখন জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশ ও অর্থায়নে চারদিনের মাথায় সেতুটি পুনরায় নির্মাণ শেষে জনগণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। বিশ গ্রামের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সেতুটি নির্মাণের ফলে দূর্গম এলাকার দূর্ভোগ লাগব হলো।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে মাটিরাঙ্গা উপজেলার তপ্তমাস্টার পাড়া এলাকায় ধলিয়া খালের উপর ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের জিপেবল সেতুটি নির্মাণ করে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ। ২০১৮ সালের দিকে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সেতুটি নদীতে ভেঙে পড়ে। এরপর ২০১৯ সালের দিকে নিজেদের ঘাম আর শ্রমেই ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৫ ফুট প্রস্থ কাঠের ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করে স্থানীয়রা। যা সাম্প্রতিক টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভেঙে পড়ে।