॥ খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি ॥
জেলার মহালছড়ি উপজেলার বাবুপাড়া গ্রামের নুও পাড়া বাসিন্দাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার সেই প্রতিকূল অবস্থায়ই রয়ে গেছে। কাজেও আসেনি এলজিইডির করে দেয়া কালভার্ট। বর্তমানে এই বর্ষা মৌসুমে তাদের কষ্ট যেন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রশ্ন রেখেছে আর কতো কষ্ট তাদের সইতে হবে।
স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার কাছের বাবুপাড়ার নুও পাড়া গ্রাম। এখানে প্রায় শতের মতো পরিবার বসবাস করছেন। তাদের যায়াতের কোন পাকা বা সলিং করা রাস্তাও নেই। সদর উপজেলায় আসতে বা সার্বক্ষনিক যোগাযোগের একমাত্র ব্যবস্থা হলো বাঁশের সাঁকো, তাও আবার নিজেদের দ্বা তৈরী। স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি প্রতিবছর নতুন ভাবে মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে রাখে প্রামবাসীরাই। এই গ্রামের প্রায় ৯০ভাগ লোক কৃষি কাজের নির্ভরশীল, তাই জীবিকাও সেটা দিয়ে। ভোটের সময় রাতারাতি সব করে দেয়ার উছিলা দিলেও রাত পোহালেই যেন সবাই ভুলে বসেন। এভাবেই দীর্ঘ বছর ধরে নুও গ্রামের মানুষগুলো দিন, মাস কিংবা বছরও পার করছে। নুও পাড়ার চাকমা ও মারমা সম্প্রদায়ের ৭০-৮০ পরিবারের প্রায় ৩শতের অধিক মানুষ বসবাস করছেন।
সেখানের সচেতন মহল জানিয়েছেন, কৃষিকাজ করেই পরিবারগুলোর জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য বাজারে বিক্রি করেই তাদের জীবন জীবিকা। চলাচলের সু-ব্যবস্থা না থাকায় কৃষিজ পন্য বাজারে নিয়ে যাওয়া চরম ভোগান্তিতে পরতে হয়। এছাড়াও স্কুল, কলেজ এ পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে, গর্ভবতী মহিলা ও অসুস্থ রোগীদের হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও গ্রামবাসীদের পরতে হয় চরম ভোগান্তিতে। ২০১৬সালে গ্রামবাসীদের চলাচলের সুবিধার জন্য এলজিডি কর্তৃক একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছিল। কালভার্টটি তেমন কোনো কাজে আসেনি কারন এটি করার পরও প্রায় ৩শত ফুট বাঁশের সাঁকোতেই চেপে যোগাযোগ করতে হচ্ছে।
এলাকার স্থানীয় ভুক্তভোগী মংচিনু মারমা ও উগ্যজাই মারমা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত তাদের এই সমস্যা সমাধান করার জন্য তারা কয়েকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অবহিত করেছেন। কিন্তু আজো কোনো কাজ হয়নি। তিনি আরো বলেন, বর্ষাকালে বৃষ্টিপাতের সময় স্কুল পড়ুয়া ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও বয়স্ক লোকদের জন্য সাঁকোটি আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপদজনক হয়ে উঠে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত মাটি ভরাট করে দিয়ে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার দাবি জানান।
স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দোঅংপ্রুু মারমা রাস্তা পারাপারের সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, জমির উপর দিয়ে মাটি ভরাট করে রাস্তা সংষ্কার করতে হবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের উপরই নির্ভর করছে কখন সমাধান হবে।
এ বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তাটি সংষ্কারের জন্য খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে একটি প্রকল্প দেয়া হয়েছে। আশা করি প্রকল্পটি দ্রুুত অনুমোদন হলে নুওপাড়ার মানুষের কষ্ট দুর হবে।