চিকিৎসা সেবায় ২৪টি পদ শুন্য রয়েছে
বান্দরবানের থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটে স্বাস্থ্য সেবায় ভোগান্তি
॥ থানচি উপজেলা প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানের থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকট থাকায় উপজেলার মানুষ চরমভোগান্তিতে পড়েছে। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স এবং বিভিন্ন টেকনিশয়ান স্বল্পতার কারনে চিকিৎসা সেবায় এ ভোগান্তি। ইতিমধ্যেই চলছে করোনা-১৯ এ সংক্রমিত রোগি নিয়ে নানান চিন্তা, এসব মিলিয়ে উপজেলার মানুষ তাদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কষ্ট পাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সদর উপজেলার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হলে জনসাধারনের মধ্যে চিকিৎসা সেবা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা কেটে উঠেছিল। কিন্তু হাসপাতালে শয্যা বাড়লেও সে অনুযায়ী চিকিৎসক, নার্স এবং বিভিন্ন পদের টেকনিশিয়ান স্বল্পতার কারনে বর্তমানে হাসপাতালে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছে। চিকিৎসা সেবায় বিলম্ব হওয়ার কারনে অনেকেই কষ্ট পাচ্ছেন। বর্তমানে করোনা-১৯ তো রয়েছেই তারম্যধ্যে ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়াসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। স্থানীয়রা আরো জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি অবস্থায় একজন চিকিৎসক দিয়ে সকল রোগীদের দেখভাল করছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল কম থাকায় উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা পেতে চরম ভোগান্তির পড়তে হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যা এর হাসপাতালে কর্মকর্তাসহ ১৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা, কিন্তু ডাক্তার রয়েছেন ৪ জন, তার মধ্যে একজনকে চট্টগ্রামে প্রেষনে পাঠানো হয়। বর্তমানে ৯ জন চিকিৎসক শূন্য রয়েছে। সিনিয়র-জুনিয়র নার্স ১৪ জনের কর্মস্থলে রয়েছেন ৭জন, ল্যাব টেকনিশিয়ান ২ জনের মধ্যে ১জন, ফার্মাসিষ্ট ২জনের মধ্যে ১জন, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ষ্টোর কিপার ১ জন শূন্য ও রাঙ্গামাটিতে প্রেষণে আছে। স্বাস্থ্য সহকারী ১৩ জনের কর্মস্থলে ৮ জন, ৫ জন শূন্য, ক্যাশিয়ার ১জন শূন্য, ষ্টোর কিপার ২জন শূন্য। সর্বমোট ২৪টি পদ শুন্য রয়েছে বলে নিশ্চিৎ করেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে চিকিৎসক ডাঃ আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, কর্মকর্তাসহ চিকিৎসক ৪জনের মধ্যে চিকিৎসক ডাঃ মজ্ঞুরুল ইসলাম চট্টগ্রামে প্রেষনে আছেন। বর্তমানে দুইজন এক মাসে ১৫দিন করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি, কষ্ট হলেও কিছু করার নেই।
এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পদগুলি শূন্য থাকায় বিভিন্ন রোগের আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরেও সরকারী আদেশ মেনে উপজেলাবাসীদের স্বাস্থ্য সেবা দিতে সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে সরকার আমদানীকৃত চিনের করোনা ভ্যাকসিন এসেছে। কর্মস্থলে চিকিৎসক কম হওয়ায় করোনা, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া, ভাইরাস জ্বর, পেট ব্যাথা, কাঁশি, সর্দিসহ নানান রোগে চিকিৎসা সেবা দিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। এই ব্যাপারে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।