আলীকদম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি
চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলার জনসাধারণ
॥ আলীকদম উপজেলা প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা সেবার যন্ত্রপাতি থাকলেও দক্ষ জনবলের অভাবে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি। উপজেলার মানুষ স্বাস্থ্য এ কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসলে ফিরে যেতে হচ্ছে। ফলে সাধারন মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে নিত্য অভিযোগ করেই আসছে জনসাধারণ।
চিকিৎসা বঞ্চিতরা জানান, হাসপাতালে যন্ত্র থাকলেও দক্ষ জনবল নেই। অযত্ন ও অবহেলায় বছরের পর বছর পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে ইসিজি,আলট্রাসনোগ্রামের মত স্বাস্থ্যসেবার সরঞ্জামগুলো। এক্স-রে মেশিন ও টেকনিশিয়ান থাকলেও রুম সংস্কার না হওয়ায় অচল অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়রা বঞ্চিত হচ্ছে পরীক্ষাসহ নানা সু-যোগ সুবিধা থেকে। চিকিৎসা নিতে দীর্ঘ ৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সাতকানিয়ার চকরিয়ায় গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা করাতে হচ্ছে রোগীদের। এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ভালো উদ্যোগও নিচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, তিনি ফুটবল খেলার সময় পায়ে আঘাত পেয়েছিল কিন্তু এক্স-রে করতে চকরিয়া যেতে হয়েছে। আহত অবস্থায় গাড়ীতে করে চকরিয়া যাওয়া, আসা ও পরীক্ষা করতে একটি দিন চলে গেছে। পায়ের ব্যথা নিয়ে খুবই কষ্ট পেয়েছি। এক্স-রে টা যদি এখানে করতে পারতাম এত দূর্ভোগ ও যন্ত্রণা পেতে হতনা। আনোয়ারা বেগম বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হলেও বেশী টাকা দিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা করতে হয় বাইরে গিয়ে।
গত সোমবার সরেজমিনে গিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, একটি কক্ষে আলট্রাসনোগ্রাম যন্ত্রটি পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে, পাশে দন্তচিকিৎসার একটি চেয়ার অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ইসিজি ও এক্স-রে রুমে তালা ও অপারেশ কক্ষটি নানান সরঞ্জামের গুদামঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১৬ সালে একটি আলট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র এর পরে ২০১৭ সালের দিকে একটি ইসিজি, পুরাতন এক্স-রে মেশিনের পাশাপাশি নতুন এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ দেয় কিন্তু এক্স-রে মেশিন চালনায় এক টেকনিশিয়ান ছাড়া বাকী যন্ত্রগুলো চালানোর মত দক্ষ কোন টেকনিশিয়ান নেই।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রেডিওগ্রাফি জহিরুল হক বলেন, ইসিজি ও আলট্রাসনোগ্রাম চালানোর মত লোক নেই। এক্স-রে মেশিন পুরাতনের পাশাপাশি আরেকটি আনা হয়েছে। পুরাতন রুমে বৃষ্টির পানি পড়ায় চালু করা যাচ্ছে না। নতুন ভবনে স্থাপন করে চালু করা হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ডেল্টাল সার্জন থাকলেও প্রেষণে অন্যত্র চলে গেছে কিন্তু কিছু ডেন্টাল সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়ে গেছে। সার্জন না থাকায় এখন সেগুলো অকেজো হয়ে পড়ে থাকবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী জানান, ইসিজি ও আলট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র চানানোর জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান প্রয়োজন। দক্ষ লোকবল বেশী প্রয়োজন, যেসব মেশিন আছে সেগুলো চালানোর জন্য লোকবল প্রয়োজন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেকনিশিয়ানসহ বিভিন্ন পদে লোকবল চেয়ে চাহিদা পত্র দেওয়া হয়েছে।