[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
কাপ্তাইয়ে পানি বন্ধি ৩৫ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণবান্দরবানের থানচিতে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিতআমাদের অস্তিত্ব, আত্মপরিচয়ে আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই: উষাতন তালুকদাররাঙ্গামাটিতে পানিবন্দী ২৫ হাজার মানুষ, দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছে প্রশাসনখাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সেনা অভিযানে ভারতীয় সিগারেট আটকরাষ্ট্র মেরামতের ৩১দফা লিফলেট বিতরণ কাপ্তাই বিএনপি’রসাংবাদিক তুহিন হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বাঘাইছড়ি মানবন্ধনমাটিরাঙ্গা সম্প্রীতি কাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন গোমতী ইউনিয়ন একাদশখাগড়াছড়ির রামগড়ে ফার্মেসীর মালিককে অর্ধলক্ষ টাকা জরিমানাকাপ্তাই উপজেলা জামায়াতের কর্মী শিক্ষা বৈঠক অনুষ্ঠিত
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

ম্যালেরিয়ার রেড জোন সাজেক

৬৩

॥ প্রীতিশ চাকমা, বাঘাইছড়ি ॥

জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা সাজেক ইউনিয়ন এ হঠাৎ করে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। বিশেষ করে দুর্গম সাজেক ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ত্রিপুরা পাড়া, বড়ইতলী পাড়া, শিব পাড়া, দেবাছড়া, নরেন্দ্র পাড়া, ১নংওয়ার্ডের মন্দির ছড়া, শিয়ালদহ, তুইচুই, বেটলিং এই সব এলাকায় ম্যালেরিয়া প্রকোপ বেশি দেখা দিয়েছে। সাজেকের ৭নং ওয়ার্ডের ত্রিপুরা পাড়ায় একই পরিবারের শুল্ক মহন ত্রিপুরা (৫৫) পুস্প ত্রিপুরা ( ২৭) মনিকা ত্রিপুরা তিনজনই ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান পুস্প ত্রিপুরা।

বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ইফেতেকার আহমদ জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছরে ম্যালেরিয়ারোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত বছর কড়াকড়ি লগডাউন থাকার কারনে কেউ জুম বা বাঁশ, গাছ, কাটতে জঙ্গলে না যাওয়ায় ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা কম ছিল। এনজিও সংস্থা ব্রাকের হিসাব মতে এ বছর ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত দশ হাজার মানুষের রক্ত পরিক্ষা করে ৬৭জন ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে এর মধ্যে জুন মাসেই ম্যালেরিয়া পজিটিভ আসে ৪৯ জনের। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুন মাসে ম্যালেরিয়ারোগীর সংখ্যা ২৯জন। দুর্গম সাজেক ইউনিয়ন কে আমরা ম্যালেরিয়ার রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ২০১৯ সালের ২৮হাজার রুগীর রক্ত পরিক্ষা করে ১ হাজার ৩০৬জনের পজিটিভ আসে এবং ২০২০সালে ২৮ হাজার ৬৬৭ জন রুগীর রক্ত পরিক্ষা করে ২৮৯জনই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। সাজেকে কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিক করার পরিকল্পনা আছে সেগুলো বাস্তবায়ন হলে সাজেকের জনগনকে খুব সহজে তাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যাবে। তবে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ইতিমধ্যে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং কক্সবাজারের রামু সহ ম্যালেরিয়া প্রবণ জেলাগুলোতে ‘মাইক্রো প্ল্যান’ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়ারোগী শুন্যোর কোঠায় নিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেনসন চাকমা জানান, সরকারি এবং বেসরকারি হিসাবের চেয়ে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি হবে। কারণ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ম্যালেরিয়া রোগীরা রক্ত পরীক্ষা করতে আসে না। জ্বরের লক্ষণ দেখে স্বজনেরা বাজারে এসে ফার্মেসী থেকে ঔষধ নিয়ে যায়। এবং তারা মশারি ব্যাবহার না করার কারনে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে তবে আমার ইউনিয়ন এর সদস্যদের জরুরি সভা করে জনসচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ সহ নিজে কাজ করে যাচ্ছি।

সাজেকের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য হীরা নন্দ্র ত্রিপুরা জানান, এর আগে সাজেকে মহামারী আকারে ডায়রিয়া এবং হাম (পোলিও) দেখা দিয়েছিল। তবে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় হ্যালিকপ্টারে করে নিয়ে গিয়ে অনেক মুমূর্ষু রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন তারা।

সচেতন মহল মনে করেন বাঘাইছড়িতে এ বছর একটানা বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মশার প্রজনন বেড়েছে। কারণ একটানা বৃষ্টিপাত না হলে পাহাড়ের বিভিন্ন গর্ত ও ছড়ায় পানি জমে মশার প্রজননে সুবিধা হয়। এ ছাড়া ভারতের মিজোরাম রাজ্যে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সেখান থেকেও ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মশারি ব্যবহার, আশপাশের ঝোপঝাড় ও নর্দমা পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দেন তারা। তারা আরো আশংকা করেন পর্যটন এলাকা হওয়ায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকলে এক সময় পর্যটকদের মাধ্যমে সারা দেশে ম্যালেরিয়ার জীবানু ছড়াতে পারে তাই ম্যালেরিয়া নির্মুলের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।