প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান
সরকারি চাকুরিতে দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কোটা পূর্নবহাল দাবি
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
সরকারি ১ম ও ২য় শ্রেণীর চাকুরিতে দেশের ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর কোটা পূর্নবহাল এর দাবি জানিয়েছে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ ও বাংলাদেশ ইন্ডিজিনাস পিপলস্ নেটওয়ার্ক (বিপনেট)। ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি প্রদান উপলক্ষ্যে রবিবার (১৩জুন) সকালে শহরের রাজবাড়িস্থ সাবারাং রেষ্ট্রেরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর কোটা পূর্নবহাল এর দাবি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান, বিশিষ্ট লেখক প্রফেসর মংসানু চৌধুরী এবং সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা, সাধারণ সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম বন-ভুমি ও পরিবেশ রক্ষা অধিকার আন্দোলন।
কোটা পূর্নবহাল এর দাবি বিষয়ে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, স্বল্প জনসংখ্যার জাতিসত্তার নাগরিকদের মৌলিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করে বিগত ৪ আক্টোবর ২০১৮ তারিখে এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে একাধিক শ্রেণীর কোটাসহ ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর কোটা বিলøিুপ্ত করা হয়। এ কোটা প্রথার বিলুপ্তির কারনে দেশের স্বল্প জনসংখ্যার জাতিসত্তাসমূহের সদস্যগণ তাদের কর্মসংস্থানের ন্যায্য অধিকার ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, যা বৈষম্যমূলক। এ বৈষম্য স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অর্জনকে বাধাগ্রস্থ করবে। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, কোট পদ্ধতির বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদের সাবেক এক সচিব ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সংক্রান্ত কোটা বিলুপ্তির সুপারিশে বলা হয়েছিল যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষরা আর অনগ্রসর নেই। কিন্তু তাঁর এ উক্তি কোনভাবেই তথ্য-সমর্থিত নয়।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, সরকারের একাধিক নীতিমালা ও অন্যান্য সরকারি নথিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন-২০১০ এ অর্ন্তভুক্ত জাতিসত্তাসমূহকে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর অংশ এর আওতাভুক্ত মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়ও বাংলাদেশের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়ও (২০২০-২০২৫) উল্লেখ আছে যে, বাংলাদেশের স্বল্প জনসংখ্যার জনমানুষের অর্থনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও রজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং তাদের মধ্যে দীর্গস্থায়ী বৈষম্য শিক্ষার অভাব, ভুমিতে স্বল্প অভিগম্যতা ও কর্মস্থানের অভাবে দারিদ্রের মাত্রাকে বৃদ্ধি করেছে। এমতাবস্থায় স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্র ও ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কার্যক্ররভাবে পূরনের পক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর কোটা পূর্নবহাল করা অতি আবশ্যক এবং সরকারি কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার স্বপক্ষে সাংবিধানিক ও অন্যান্য আইনী বিধানের যথোপযুক্ত ও প্রত্যক্ষ সমর্থনও রয়েছে। জনমানুষের অধিকার রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ২২জুন ১৯৭২ তারিখে আই.এল.ও এর আদিবাসী ও ট্রাইবেল জনগোষ্ঠীর সংক্রান্ত ১০৭ নং কনভেনশন ও সরকারি চাকুরিতে বৈষম্য বিলোপ সংক্রান্ত ১১১নং কনভেনশন অনুমোন করায় আমরা চির কৃতজ্ঞ। এছাড়াও কোটা পদ্ধতির বিষয়ে পাশ্ববর্তীসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি সুযোগ সুবিধার যৌক্তিক তথ্যও উত্তাপন করা হয়।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় বলেন, চাকমা চীফ হিসেবে নয় একজন নাগরিক হিসেবেই দাবির বিষয়ে বলছি। প্রদানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আস্থা রয়েছে। তাই আগে যেভাবে এ কোটা বহাল ছিল তার পূর্নবহাল করা হোক।