আদালতের আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
অন্ধের দৃষ্টি শক্তি না থাকাতে সে আলো বা অন্ধকারকে চিহ্নিত করতে পারে না, কিন্তু যারা অন্ধ নয় তারা যদি স্বার্থের মোহে অন্ধের মতো আচরণ করে তাহলে কি তাদের অন্ধ বলা যায়। সমাজের মানুষ ঐসব ছদ্মবেশী অন্ধদের কি ছাড় দেবে। অথচ ধুরন্ধর ছদ্মবেশী এইসব অন্ধরাই অর্থ, পেশী, রাজনৈতিক লুটেরা নেতা-কর্মীদের ব্যবহার করে তাদের শক্তি দিয়ে প্রশাসনিক নিয়ম, আইন আদালতকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছেন। আইন আদালতের আদেশকে পাত্তা দিচ্ছেননা স্বয়ং প্রশাসনকি পদস্থ কর্মকর্তাও। ঠিক সেভাবেই অর্থাৎ আদালতের আদেশকে পাত্তা না দিয়েই রাঙ্গামাটি শহরের চম্পক নগরস্থ অসহায় সঞ্জু বড়ুয়া’র পরিবারের জায়গাসহ বাসাবাড়ি জোরজবরদস্তী দখলে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে যেন আইন আদালতকে অসহায় ভাবা হচ্ছে।
আদালতের আদেশের সংক্ষিপ্ত এখানে উল্লেখ করে আদেশে বলা হয়েছে যে, বাদীগন জন্মের পর থেকে নালিশী ভুমি ভোগদখলে থাকা অবস্থায় বিগত ১৪/০৭/১১ তারিখে বন্দোবস্থ পাওয়ার আবেদন করেন। সঞ্জু বড়ুয়ার নামে ১৮/০৭/৯৩ তারিখ বিদ্যুৎ মিটার ও পানির লাইন সংযোগ করা হয়। বাদীগনের পিতার নামে বিশ বছর পূর্বে পাঁচ পরিবারকে ভাড়া দেন। ২০১৫ সালে ১নং বিবাদী (বিজয় মন্ডল)কে ১৩৮০ টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়। ১নং বিবাদী ভাড়া দিতে অস্বীকার করে এবং তখন থেকে বিবাদীগন ভাড়া না দিয়ে জবর দখলের চেষ্টা করে। আদালত বিবাদীগনের বিষয়ে আদেশে উল্লেখ করেন, বিবাদীগন নালিশী ভুমি নীহার কান্তি দাশ ও তুহিন দাশ এর মর্মে দাবী করলেও তাদের দাখিলকৃত কাগজপত্রেই নালিশী ভুমি কেবল তুষার কান্তি দাশের নামে দেখা যায়। আদালত উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিগত ৬/১০/১৯ইং তারিখ মোকদ্দমা চুড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নালিশী ভুমিতে কোন সংস্কার কাজ করা থেকে অস্থায়ীভাবে বিরতি করা হল অর্থাৎ সেখানে কেউ কোন কাজ করতে পারবেনা বলে আদেশ জারি করেন।
ভুক্তভোগী বাদী সঞ্জু বড়ুয়া অভিযোগ করেছেন আদালতের আদেশ অমান্য করে চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জ এলাকার জনৈক নীহার কান্তি দাশ ও তুহিন দাশ এর নির্দেশে বিজয় মন্ডল তার স্ত্রী বিনা মন্ডল, ছেলে শুভ মন্ডল ও শান্ত মন্ডল এসব করেছেন। বিদ্যুৎ বিভাগ সঞ্জু বড়ুয়ার ভাড়াটিয়া বিজয় মন্ডলের বাসায় গত ২২/৪/২১ইং তারিখ তুহিন দাশের নামে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছেন এবং গত ১/৫/২০২১ইং তারিখ জনস্বাস্থ্য বিভাগও পানির লাইনের সংযোগ দিয়েছেন। অর্থাৎ নীহার কান্তি দাশ ও তুহিন দাশ অর্থ, পেশী ও রাজনৈতিক লুটেরা নেতা-কর্মীদের শক্তি ব্যবহার করেই জোরজবরদস্তী এসব করছেন। সঞ্জু বড়ুয়া বিদ্যুৎ সংযোগের আপত্তি জানালে রাঙ্গামাটি বিদ্যুৎ বিভাগ (বিতরণ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার তার কর্ণপাতও করেননি উল্টো বলেছেন আদালততো বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে নিষেধ করেননি। তার মানে তিনি আদালতের আদেশের কিছু বোঝেননি অথবা বোঝার চেষ্টা করেননি কিংবা এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। অন্য দিকে রাঙ্গামাটি জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। অবশ্য আদালতের আদেশ আমান্য করায় সঞ্জু বড়ুয়ার ছোট ছেলে সজীব বড়ুয়া গত ৬মে বৃহস্পতিবার যুগ্ম জজ আদালতে মামলা করেছেন।
কথা হলো আইন আদালত মানুষেরই জন্যে কিন্তু, যখন এসবকে অমান্য করা হয় তখন স্বভাবতই দেশের প্রচলিত আইন, আদালত এবং সরকারের প্রশাসনিক শাসন ব্যবস্থাকেও আমান্য করা। নীহার কান্তি দাশ ও তুহিন দাশ এবং বিজয় মন্ডল তার স্ত্রী বিনা মন্ডল, ছেলে শুভ মন্ডল ও শান্ত মন্ডল এসব করেছেন সেই সাথে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে’ও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। কেননা তারা প্রজাতন্ত্রের বেতনভুক্ত পদস্ত কর্মকর্তা হয়েও সঠিক যাঁচাই না করে তাদের কাজ করেছেন। তাই এসবের কারনে অন্যরাও অন্যায় করতে উৎসাহী হবেন। এতে কারো না কারো ক্ষতিই হবে সেই সাথে আইন আদালতকে মানুষের কাছে অসহায় হিসেবে তুলে ধরা হবে। তাই আইন ও আদালতের প্রতি সকলেরই সম্মান দেয়া উচিৎ, কেননা এটি প্রজাতন্ত্রের শাসন ব্যবস্থার রক্ষা কবচ। এখানে যারা আইন আদালতের আদেশ অবমাননা করেছেন তাদের শাস্তিযোগ্য অপরাধ।