[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বানর আর বাঁধ মিলিয়ে বান্দরবান

বান্দরবানের সেই বানর এখন বিলুপ্তির পথে

১১৩

।। আকাশ মার্মা মংসিং, বান্দরবান ।।

বান্দরবান জেলার নামকরণ নিয়ে একটি কিংবদন্তি কথিত রয়েছে। আছে প্রচলিত রূপকথায়, রয়েছে বান্দরবান শহর নিয়ে বিভিন্ন কথা আর সেই কথা ভিতরে বলা আছে কিভাবে বান্দরবান শহর গড়ে উঠেছিল । সেই বান্দরবানে এক সময় অসীমাহীন প্রানী বানর বসবাস করত । আর এই বানরগুলো দলবদ্ধসারি করে খাবার যোগাতে শহরের মুখে ছড়ার পাড়ে পাহাড়ে প্রতিনিয়ত লবণ খেতে আসত। আর সেই লবন খেয়ে জঙ্গলে চলে যেত প্রতিদিন । কোন এক সময় লবন খেয়ে আসলে অনবরত বৃষ্টির কারণে ছড়ার পানি বৃদ্ধি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে যায় বানর । ফলে নদীর পাড় হওয়া নিয়ে  চিন্তায় পড়ে যায় বানরের দল । সেই বানরের দল ছড়া পাড় হয়ে পাহাড়ে যেতে না পারায় একে অপরকে ধরে ধরে সারিবদ্ধভাবে ছড়া পানি মাঝখান দিয়ে পাড় হয়। সেই বানরের ছড়া পারাপারের এই দৃশ্য দেখা মিলে বান্দরবান জনপদের মানুষের।

সেই সময় হতে বান্দরবানে কথিত এই জায়গাটির পরিচিতি লাভ করে ম্যাঅক ছিঃ ছড়া নামে। অর্থাৎ মারমা ভাষায় ম্যঅক অর্থ বানর আর ছিঃ অর্থ বাঁধ। কালের প্রবাহে বাংলা ভাষাভাষির সাধারণ উচ্চারণে এই এলাকার নাম রুপ লাভ করে বান্দরবান নাম হিসাবে। বর্তমানে সরকারি দলিল পত্রে বান্দরবান হিসাবে এই জেলার নাম স্থায়ী রুপ লাভ করেছে। তবে মারমা ভাষায় বান্দরবানের প্রকৃত নাম চিল রদ ক্যাওচি চিম্রো। জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৬০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামকে জেলা ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন সময়ে বান্দরবান ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার অধীনে। তৎকালীন সময়ে বোমাং সার্কেলের অর্ন্তভুক্ত ছিল বান্দরবান। বোমাং সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এই জেলার আদি নাম ‘বোমাং থং’। ১৯৫১ সালে মহকুমা হিসেবে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয় বান্দরবানে। এটি ছিল রাঙামাটি জেলার প্রশাসনিক ইউনিট। ১৯৮১ সালের ১৮ এপ্রিল তৎকালীন লামা মহকুমার ভৌগোলিক ও প্রশাসনিক সীমানাসহ সাতটি উপজেলার সমন্বয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

এই দিকে পার্বত্য অঞ্চল বান্দরবান জেলায় এখন বিলুপ্তির পথে বানর, এক সময় বানরের অভয়ারণ্য থাকলেও তা এখন বিলুপ্তির পথে । খাবার ও আবাস এর সংকট আর প্রতিকূল পরিবেশের কারণে আশঙ্কাজনকভাবে কমছে এই প্রাণীর সংখ্যা। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে অবহেলা আর অনাদরে চলতে থাকলে এক সময় পাহাড় থেকে পুরোপুরি হারিয়ে যাবে এই প্রজাতি। বানর বলতেই আমরা বুঝি বুদ্ধিমান ও সামাজিক প্রাণী। বনে-বাদারে এবং লোকালয়ে- দু’জায়গাতেই তারা বসবাস করতে পারে স্বাচ্ছন্দে। বান্দরবান জেলায় বেশকিছু এলাকায় এক সময় ছিলো বানরের অভয়ারণ্য। কিন্তু দিনে দিনে লোকসংখ্যা বৃদ্ধিতে এই প্রাণীটির দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। আর এতে কমে গেছে বানরের সংখ্যা। বান্দরবান বানরের নিরাপদ আবাসস্থল এ জেলার অরণ্যে ঘেরা সবুজ পাহাড় হলেও বর্তমানে মানুষের অবাধ বিচরণ, বন উজার করার ফলে পাহাড় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বানর।

আদিকাবাসী উথোয়াই চিং(৭৬) বলেন, আগে অনেক বানর ছিল। বানরা মাঝে মাঝে এই শহরে আসত । হাজার হাজার বানর ছিল, পাহাড় ঝিড়িতে বানরের দল এপার ও পার আনাগোনা ছিল বলার বাইরে। আজ সেই বানর দেখা নাই,জঙ্গলে পর্যন্ত নাই আজ। বানর দেখলে শিকার করে নিয়ে যায়। এইভাবে হলে বান্দরবান সেই কথিত কথা আর থাকবে নাহ। বান্দরবানের মেঘলা কর্মরত সৌমিত তংচঙ্গ্যা জানান, বান্দরবানে এক সময় প্রচুর বানর ছিলো খাদ্য অভাবে ও সঠিক পরিচালনা না করায় বান্দরবানে বানর এখন বিলুপ্তির পথে, তিনি আরো বলেন, সদরের মেঘলা ও পার্বত্য জেলা পরিষদ ছাড়া আর কোথাও বানরের দেখা নেই । সব বিলুপ্তি হয়ে গেছে। বানর পাশাপাশি হরিণ, শেয়াল, ইত্যাদি আর দেখা ও শোনা যায় নাহ । শত বছরেরও বেশি সময় ধরে পাহাড়ে বেড়ে ওঠা বানরের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সরকারের নিকট আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবানের বন কর্মকর্তা ফরিদ মিয়া বলেন, ‘বর্তমানে বান্দরবানে কি পরিমান বানর আছে আমাদের কাছে সঠিক তথ্য নেই । কোন ভাবে বন্যপ্রাণী শিকার করা না হয়, শিকার ও পাচার করলে বন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।