॥ মোঃ ইসমাইল হোসেন, মানিকছড়ি ॥
মানিকছড়িতে অসহায়-হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বরাদ্ধকৃত ভিজিডি’র এপ্রিল মাসের ৪৩ মেট্রিক টন আতপ চাল কালোবাজারে বিক্রি করে ন্মিমানের পঁচা ও র্দুগন্ধযুক্ত সিদ্ধ চাল বিতরণ করা হচ্ছে! এসব পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল নিতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন উপকারভোগী।
সরজমিন ও বরাদ্দপত্র থেকে যানা যায়, সরকার দেশব্যাপি দুঃস্থ মহিলাদের উন্নয়নে (ভিজিডি) প্রতি মাসে ৩০ কেজি খাদ্যশস্য বিতরণ করে আসছে। আর এ সুযোগে খাদ্য গুদামের ওসিএলএসডি ও প্রকল্প চেয়ারম্যানগণ মিলে এসব অসহায় নারীদের খাদ্যশস্য নিয়ে নিয়মিত বাণিজ্য করে যাচ্ছে! উপজেলার চার ইউনিয়নে ১ হাজার ৪শ ৬৪ কার্ডধারী জন্য চলতি বছরের এপ্রিল মাসের বরাদ্দ গত ১১ এপ্রিল ছাড়পত্র ইস্যু করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জুলিয়াস চাকমা। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প চেয়ারম্যানগণ (ইউপি চেয়ারম্যান) তাদের বিশ্বস্থ সচিব এবং নিজে খাদ্যগুদাম থেকে ছাড়পত্র অনুযায়ী বরাদ্দকৃত চাল পরিষদে নিয়ে বিতরণের ব্যবস্থা করেন। এরই মধ্যে ১নং মানিকছড়ি ইউপিতে বিতরণ কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। অপরদিকে আগামীকাল ১৯ এপ্রিল থেকে অন্য সব ইউপিতে বিতরণ করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ছাড়পত্রে দেখা গেছে, বরাদ্দের সকল চাল আতপ। অথচ চার ইউনিয়নের জন্য আতপ চাল খাদ্যগুদাম থেকে উত্তোলন করার কথা থাকলেও সরজমিনে বিতরণ এবং ইউপি’র গুদামে সংরক্ষিত আছে সব সিদ্ধ চাল। যা অত্যান্ত নিন্মমানের পঁচা ও র্দূগন্ধযুক্ত।
প্রকল্পের সদস্য সচিব উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক জুলিয়াস চাকমা জানান, বরাদ্দ অনুযায়ী প্রতি মাসে ৩০ কেজি আতপ চালের বস্তার ছাড়পত্র ইস্যু করা হয়। চলতি এপ্রিল-২১ মাসের বরাদ্দ গত ১১ এপ্রিল রবিবার ছাড়পত্র ইস্যু করা হয়েছে এবং খাদ্য গুদামে দায়িত্বরত ওসিএলএসডি তা প্রকল্প চেয়ারম্যানদের বুঝিয়ে দেন। চাল উত্তোলনের পর প্রকল্প (ইউপি) চেয়ারম্যানগণ ছাড়পত্র অনুযায়ী চাল উত্তোলন করে তা বিতরণ করেন।
এদিকে ১৮ এপ্রিল সকালে ১নং মানিকছড়ি ইউপিতে গিয়ে দেখা গেছে, ইউপি সচিব মো. মোশাররফ হোসেন মজনু কার্ড দেখে দেখে ভিজিডির চাল বিতরণ করছেন এবং তা আগ্রহের সাথে গ্রহণ করছেন উপকারভোগীরা! গ্রহণকালে অনেকেই সচিবের সামনে বস্তা খুলে পঁচা, র্দুগন্ধ ও সিদ্ধ চাল দেখে প্রতিবাদ করেন। আর সচিব বলছেন সরকার যা দিয়েছে তা, আমার করার কিছু নেই!
এ সময় একজন ভিজিডি চাল গ্রহিতা বলছেন, এই রোজার মধ্যে পঁচা ও দুর্গন্ধ চাল কিভাবে খাবো! প্রতিবাদের এক পর্যায়ে সচিব ওই মহিলার পঁচা চাল পরিবর্তন করে সিদ্ধ চাল প্রদান করেন।
ইউপি সচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন জানান, খাদ্য গুদাম থেকে সিদ্ধ ও নিন্মানের এই চালই দেয়া হয়েছে অসহায়-হতদরিদ্র মহিলাদের মাঝে। অসহায় পরিবার হওয়ায় অনেকে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা। ২নং বাটনাতলী ইউপি সচিব মোঃ আবদুল হাকিম জানান, এখানে ২শত ৯০ বস্তা চালই সিদ্ধ! আগামীকাল ১৯ এপ্রিল বিতরণ করার করার কথা রয়েছে। এ ব্যাপারে ৩নং যোগ্যাছোলা ইউপি চেয়ারম্যান ক্যয়জরী মহাজন জানান, প্রতিবারই খাদ্য গুদাম থেকে এসব নিন্মানের চাল ছাড় করা হয়। প্রতিবাদ করলে বলে সরকার যা দিছে তাইতো। আমরা ভালো পাব কোথা থেকে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ জানান, উপজেলার দুঃস্থ মহিলাদের ভিজিডির আওতায় এনে তাদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতি কার্ডে ৩০ কেজি করে চাল প্রদান করা হচ্ছে। অথচ সেসব চাল যে এতটা নিন্মমানের আমার জানা ছিলনা। এ সময় দ্রুত তা খতিয়ে দেখারও আশ্বাস দেন তিনি।