[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটকবান্দরবানে রিপোর্টার্স ইউনিটির ভবন জোড়পূর্বক দখলের অভিযোগবান্দরবানের থানচিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশমানিকছড়িতে চাঁদাবাজি করতে এসে জনতার হাতে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকবরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগরাঙ্গামাটির লংগদুতে নৌকার কিছু নেতাকর্মী এখন ট্রাকে উঠে গেছেকাজে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-পার্বত্য উপদেষ্টাসড়ক দুর্ঘটনায় কাপ্তাই বিএফআইডিসি এলপিসি শাখার কর্মচারী নিহতমানিকছড়ির নবাগত ইউএনও’র সাথে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা বিনিময়খাগড়াছড়িতে বন্যাকবলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

বাবা মাকে মারধর করে ছেলে, লাঠি এনে দেয় পুত্রবধূ !

৪০

॥ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ॥

নিয়মিত বাবা মাকে মারধর করে সন্তান এবং তার এই নির্যাতনে সহায়তা করে পুত্রবধূ ও তার শশুড় বাড়ির লোকজন এমন অভিযোগ এনে ৪ জনকে আসামী করে লামা থানায় মামলা করেছে সজল কান্তি দাশ নামে এক অসহায় বাবা। বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে সন্তানের নির্যাতনের শিকার অসহায় বাবা সজল কান্তি দাশ (৭২) ও মা পূর্ণিমা দাশ (৫৫) বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান বিষয়টি।

এদিকে লামা থানা পুলিশ সন্তানের বিরুদ্ধে করা বাবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে অভিযুক্ত সন্তান রুবেল দাশকে আটক করে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠালে আদালত সংশোধনের সুযোগ দিয়ে তার জামিন মঞ্জুর করে। সজল কান্তি দাশ (৭২) লামা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাজার পাড়ার বাসিন্দা।

মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা হল, বাদীর সন্তান রুবেল দাশ (৩৫), পুত্রবধূ তন্দ্রা দাশ শিমু (৩০), রুবেল দাশের শশুড় সমির আইচ (৫৫) ও শ্যালক পলাশ আইচ (২৫)।
মামলার সূত্রে ও অসহায় বাবা সজল কান্তি দাশ বলেন, আমার ছেলে ও পুত্রবধূ দীর্ঘদিন যাবৎ আমাকে ও আমার স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। তাহাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে বিগত ২০১৩ সাল হইতে আমি ও আমার স্ত্রী আলাদাভাবে খাই এবং আমাদের কোন ভরণ-পোষণ তারা বহন করে না। বিগত দুই বছর যাবৎ আমার ছেলে তার শশুড় ও শ্যালক সহ বিবাদীগণ পরস্পর যোগসাজসে আমার ধন সম্পদের উপর লোভে আমাদের নিকট হইতে নগদ টাকা দাবী করে।

আমি আমার স্ত্রী ছেলে ও পুত্রবধূকে কোন প্রকার টাকা পয়সা দিতে পারবো না বলে সাফ জানাইয়া দিই। বিবাদীদ্বয় আমাদের ধনসম্পদ লিখে দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময়ে মারধর ও গালিগালাজ করিয়া আসিতেছে। কিন্তু পারিবারিক মানসম্মানের কারণে বিবাদীদের বিষয়ে কাহারো নিকট কোন প্রকার বিচার সালিশ দিই নাই। বিবাদীগণ এইটাকে দূর্বলতা মনে করে গত ১লা এপ্রিল ২০২১ইং সন্ধ্যা অনুমান ৭টা ২০ মিনিটে আমার ছেলে ও পুত্রবধূ আমার রুমে এসে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই অতর্কিতভাবে আমাকে লাথি মারে। আমি মাটিতে পড়ে গেলে আমাকে লাথি, কিল, ঘুষি মারিতে থাকিলে আমি চিৎকার করি। আমার চিৎকারে আমার স্ত্রী বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসলে বিবাদীদ্বয় আমার স্ত্রীকেও মারধর করে। এক পর্যায়ে তাহাদেরকে নগদ ৭৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে, অন্যথায় সমস্ত জায়গা-জমি তাদের নামে লিখে দিতে হবে বলিয়া হত্যার হুমকি দিয়া চলে যায়।
পরবর্তীতে আবার গত ৪ এপ্রিল ২০২১ইং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিবাদীদ্বয় পুনরায় আমাদের থাকার ঘরে আসিয়া আমাকে চড়-থাপ্পড় মারে এবং আমার স্ত্রীকেও কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে এবং ঘরে থাকা তালা দিয়ে আমাদেরকে রুমের ভিতরে আটকে রেখে বাহিরে তালা দিয়ে চলে যায়। এসময় বিবাদীদ্বয় আমাদেরকে হত্যার হুমকিসহ তাদেরকে নগদ ৭৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে বলিয়া জানায়। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবগত করলে তারা আমাকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।

সরজমিনে গেলে কথা হয় অভিযুক্ত রুবেল দাশের মা পূর্ণিমা দাশ (৫৫) এর সাথে। তিনি বলেন, পেটের সন্তান মেরেছে। এই বিচার কাকে দিব ? লজ্জায় কাউকে মুখ দেখাতে ইচ্ছে করে না। আমার সামনে আমার ছেলে তার বাবাকে মেরে চোখ মুখ ও হাটু ফাঁটিয়ে ফেলেছে।

এই বিষয়ে কথা হয়, অভিযুক্ত সন্তান রুবেল দাশের সাথে। তিনি তার বাবার অভিযোগ গুলো মিথ্যা উল্লেখ করে বলেন, লামা বাজারের সনাতনধর্মের সকল নেতারা বিষয়টি জানে। বরণ আমার বাবার পরামর্শে আমার বোন জামাই সাগর চৌধুরী লাথি দিয়ে আমার স্ত্রীর গর্ভের ৩ মাসের সন্তান নষ্ট করে। আমি এই বিষয়ে অভিযোগ করেছি।

বোন জামাই কর্তৃক সন্তান নষ্টের বিষয়টি মিথ্যা উল্লেখ করে পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা শম্ভু চক্রবর্তী এর স্ত্রী সীতা চক্রবর্তী বলেন, গত ২২ মার্চ পুত্রবধূ তন্দ্রা দাশ শিমু আমাকে বলে, তার ভুলের কারণে পেটের তিন মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। যে সন্তান গত ২২ মার্চের আগে নষ্ট হয়ে গেছে জানালো, সে গর্ভের সন্তান ৫ এপ্রিল ২০২১ইং কিভাবে নষ্ট হয় ?

লামা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুদ্দিন বলেন, বাবা সন্তানের বিরুদ্ধে ও সন্তান বাবার বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে মামলা করেছে। বিষয়টি যেহেতু আদালতে গড়িয়েছে আদালত এই বিষয়ে সমাধান দিবেন।