পাহাড়ের ফুল ঝাড়ু কাটতে ব্যস্ত পাহাড়িরা
॥ আকাশ মার্মা মংসিং, বান্দরবান ॥
ঘর ঝাড়ু কিংবা পরিস্কার কাজের অন্যতম বস্তু ফুল ঝাড়ু। সেই ফুল ঝাড়ু সংগ্রহ করা হয় পাহাড় থেকে যেখানে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো হয় এই ঝাড়ু। শীত মৌসুমের শেষের দিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীরা পাহাড় থেকে ফুল ঝাড়ু সংগ্রহ করে তা শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করে।
প্রতিবছরের ন্যায় পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে ফোটা ফুল ঝাড়ু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটছে অনেক আদিবাসীর। ছোট্ট ছোট্ট আঁটি বেঁধে তা বাজারে বিক্রি করার প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, বছরে প্রতি মাঘ মাসে পাহাড়ে এই ফুল ঝাড়ুর ফুল ফোটে এবং পাহাড় চষে বেড়িয় তা সংগ্রহ করে পরে রোদে শুকিয়ে বাজার বিক্রি করা হয়। বান্দরবানের থানচি, রুমা, আলীকদম, রোয়াংছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের যেদিকে চোখ যায়, শুধু ঝাড়ফুলের সমারোহ। ফুল থাকবে চৈত্র মাস পর্যন্ত। শুধু স্থানীয় বাজারে নয়, সারা দেশেই রয়েছে এই ঝাড়ুর চাহিদা। তাই অনেকে বাড়তি আয়ের উপায় হিসেবে নেন ঝাড়ু বানানোকে।
ঝাড়ফুল সংগ্রহকারী আদিবাসী নারী মেনু প্রু মারমা জানান, গত বছর ঝাড়ু বিক্রি করে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। তার আশা, এ বছর ঝাড়ু থেকে আয় হবে প্রায় লাখ টাকা। ঝাড়ফুল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কিবরিয়া জানান, তিনি ১৭ বছর ধরে পাহাড়ের মানুষের কাছ থেকে পাইকারি দরে ঝাড়ু কেনেন। তারপর ট্রাকে করে চট্টগ্রাম-ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন। যা ঢাকার বাজারে ফুলঝাড়ু বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। তিনি বলেন, তাঁর অধীনে প্রায় ৯০জন নারী-পুরুষ ঝাড়ফুল রোদে শুকানো ও আঁটি বানানোর কাজ করেন। তিনি মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে পাহাড়ের মানুষের আর্থিক সংকট মেটাতে ফুলঝাড়ু শিল্প সহায়ক ভূমিকা রাখবে। ব্যবসায়ী মোহাম্মদ গফুরের ধারণা, এ বছর বান্দরবান থেকে ৮৫ ট্রাকের বেশি ঝাড়ফুল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে।
এ বিষয়ে বান্দরবান বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক রেজাউল আলম বলেন, যারা ঝাড়ফুল সংগ্রহ করেন, তাদের নিরুৎসাহিত না করে নিয়ম অনুযায়ী পারমিট দিয়েছি। বাণিজ্যিকভাবে বাগান করতে পারলে এটি একটি লাভজনক পেশা হতে পারে।