কাজুবাদামের পূর্ব পরিচিতিটাকে ব্যাপক পরিচিতি করা দরকার
পার্বত্য চট্টগ্রামের কাজু বাদাম দেশ বিদেশের মানুষের কাছে প্রিয় একটি খাদ্যপণ্য। এখানকার কাজু বাদামের চাহিদা সেই অনেক আগে থেকেই। পর্যটকরা আসলেই কিংবা আসার আগেই জানতে চাইতো কাজু বাদাম কি পাওয়া যাবে। অনেক পর্যটকদের দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে বেড়াতে এসে যাওয়ার সময় আর যাই ক্রয় করুক না কেন কাজু বাদামতো হাতে থাকবেই। তাই দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে কাজু বাদামের চাহিদা এবং এর পরিচিতি পূর্ব থেকেই রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ভুমিতে মিশ্র ফলের সাথে কাজু বাদাম চাষের উদ্যোগ নিলে সফলতা আসতে পারে। এখানে সরকারি বেসসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে আসতে পারে।
কৃষক সমাজ জানাচ্ছেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজু বাদাম চাষে ব্যাপক সফলতা আসবে। দেশে মানুষের চাহিদার পরে বিদেশের মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বহু স্থানে কাজু বাদাম চাষ হচ্ছে। কিন্তু এর ব্যাপক সফলতার জন্য প্রয়োজন কৃষি বিভাগ এবং কৃষক পরিবারের আলো ভালো উদ্যোগ। এছাড়াও ইতিমধ্যে কৃষক যারা কাজু বাদাম চাষ করে বাজার জাত করছেন তাদের সফলতা বা আরো ব্যাপকতার উপর খোঁজ রাখা এবং তাঁদের উৎসাহ প্রদান করা। জানতে পেরেছি কাজু বাদাম চাষ এবং এর সফলতা অর্জনে পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষির উন্নয়নে অন্যতম প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বিগত ৩৫ বছর আগেই পার্বত্য এলাকায় কাজু বাদাম চাষের জন্য কিছু কৃষক পরিবারে কাছে চারা বিতরণ করেছে। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে কাজু বাদাম চাষের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে কাজু বাদামের যেটুকুই চাষ হচ্ছে ধরে নেয়া যায় সেটিও উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত চারা এর ফলশ্রুতিতেই। কিন্তু তার হয়তো বেশী দুর এগুতে পারেনি পরিবেশ পরিস্থিতি এবং অর্থের কারনে। অথচ কাজু বাদাম চাষে যে প্রকৃতি ও পরিবেশ পার্বত্য চট্টগ্রামে রয়েছে তাতে এখানে সফলতা আসবে।
কাজু বাদাম পাহাড়ের পর্যটন শিল্পপণ্য হিসেবেও বেশ চাহিদা রয়েছে বলে উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ মনে করছেন। এখানের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিনামূল্যে কাজু বাদামের চারা, কফি চারা, মিশ্র ফলজ চারাসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ বিতরণ করেছেন এবং করছেন। এসব কৃষি উপকরণ যথাযথভাবে ব্যবহার এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন কৃষিজ চারাগুলো ধীরে ধীরে বড়ও হচ্ছে। কাজু বাদাম পর্যাপ্ত উৎপাদন হলে বাণ্যিজিকভাবে কাঁচামাল সরবরাহসহ দেশের-বিদেশে কাজু বাদামের চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকাও রাখবে। সর্বজন পরিচিত যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী মানুষগুলো খুবই পরিশ্রমী। তাঁদের কাজে লাগাতে পারলে এ অংশ থেকেও পাহাড়ী অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রান মান বৃদ্ধি পাবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন কৃষিখাতে সাফল্যের বিপ্লব ঘটছে। তবে সত্যি হলো যে একসময় ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন শহরগুলোতে আমের দোকানে রাজশাহী আমকে সবাই জানতো এবং তার কদরও ছিল সেভাবেই। এখন দেশের বিভিন্ন শহরে পার্বত্য চট্টগ্রামের আম্রপালি আমকেই জানছেন তার কদরও করছেন। এসবের সফলতাও কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূ-প্রকৃতির অপার সম্ভাবনার ফলে। ঠিক সবাই পরিশ্রম করলে কাজুবাদামের পূর্ব পরিচিতিটাকে ব্যাপক পরিচিতিও করা দরকার।