বছর না যেতেই রাঙ্গামাটি সড়কে ধ্বস, দুদক এর অভিযান
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটির ঘাগড়া-চন্দ্রঘোনা-বান্দরবান সড়কে চারটি স্থানে ভাঙ্গনরোধে বর্ষা মৌসুমের আগে জরুরি মেরামতের নামে কোটি টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগ উঠেছে, ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদ আমিনুল হক (প্রাঃ) লিমিটেডের বিরুদ্ধে। এ সড়কের চারটি স্থানে ভাঙ্গন ঠেকাতে ব্যবহার করা হয়েছে লোহার পাইপ। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে লোহার পাইপগুলো ধসে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (১৩জানুয়ারি) সকালে ঐ চারটি স্থানের কাজের মান পরিদর্শনে যান রাঙ্গামাটি জেলার দুর্নীতি দমন কমিশন এর সহকারী উপ-পরিচালক জিএম আহসানুল কবির এর নেতৃত্বে একটি টিম। এসময় স্থানগুলো পরিদর্শনে সত্যতাও মিলেছে বলে জানা গেছে দুদুক সূত্রে। পরিদর্শন কালে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী শেখ ফতে এলাহী, মোঃ আরিফুর রহমান এবং ঠিকাদারের প্রতিনিধি মোঃ মাসুদ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুকিমারা চেকপোষ্টের সামনের সড়কেই নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা ড্রেনসহ সড়কের উপরের অংশে বেশ লম্বা ফাটল ধরেছে। মুরালী পাড়া এলাকায় স্থাপনের কিছুদিনের মধ্যেই হেলে পড়েছে এমএস পাইপ প্যালাসাইডিং। এই অংশটির নীচে বসবাসকরা দুইটি পরিবার যেকোনো সময় ঘুমের মধ্যেই চাপা পড়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। ঘাগড়া-বড়ইছড়ি সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে এই ধরনের কাজ করা হলেও একটি বছর এখনো শেষ না হওয়ার আগেই সেগুলো ধ্বসে পড়ছে। স্থানীয়রা বলছেন সরকারি টাকা অপচয় ছাড়া এই কাজগুলো সড়ক রক্ষায় কোনো কাজেই আসেনি।
কাপ্তাইয়ের কুকিমারা, মুরালিপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লোহার ৬ইঞ্চি মোটা পাইপগুলো কোনো রকম দাঁড় করিয়ে ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ কাজ হয়ে গেছে বলে চলে যান। বর্ষামৌসুমে প্রচুর বৃষ্টিপাত না হওয়ার পরেও লোহার পাইপগুলো ধ্বসে পড়ে । এতে করে সড়কের পাশ্ববর্তী নিচু এলাকা বসবাস করা বাসিন্দারা বড় ধরনের মাটি চাপার আশঙ্কায় রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের উদ্যোগে ইজিপি টেন্ডারের মাধ্যমে রাঙ্গামাটির ঘাগড়া-চন্দ্রঘোনা-বাঙ্গালহালিয়া-বান্দরবান সড়কে কয়েকটি স্থানে এমএস পাইপ প্যালাসাইডিং, বেম্বো প্যালাসাইডিং, আর্থ ফিলিং, সেন্ড ব্যাগ লায়িং কাজের লক্ষ্যে ইজিপি আইডি নং-৪০২৭৯৪, ৪০২৮১০, ৪৩৬৩৭০, ৩৯২৪৫১ এই চারটি কাজের বিপরীতে ২৭০৮৫৫২.৩৯, ৬০১০৫৫৯.৯১, ১১৫৯৭১৬.১৮ ও ৩৭২৯১১৬.৭৩ টাকাসহ সর্বমোট প্রায় ১ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকার প্রদান করা হয় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মি. মোহাম্মদ আমিনুল হক (প্রাঃ) লিমিটেডকে।