[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
বান্দরবানের থানচিতে ১৩মাস পর পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহারজিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কাপ্তাইয়ে দুস্থদের মাঝে চাল বিতরণবান্দরবানে খুলে দেয়া হয়েছে লামা উপজেলার সকল রিসোর্টসীমান্তে পুশইন ও চোরাচালান ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বাঘাইহাট বিজিবিলংগদু উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবির টহল জোরদার: লে. কর্ণেল নাহিদ হাসানরাঙ্গামাটিতে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় যুবক আটকপুশইন ও চামড়া পাচার রোধে রামগড় ৪৩ বিজিবির নিরাপত্তা জোরদাররাজস্থলীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালনচামড়া পাচার ও সীমান্ত দিয়ে পুশইন ঠেকাতে বিজিবি টহল বাড়িয়েছেমাটিরাঙ্গা সেনা জোন কর্তৃক ঈদ উপহার ও মানবিক সহায়তা প্রদান
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

পার্বত্য মন্ত্রীকে এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের খোলা চিঠি

বান্দরবানের চিম্বুকে পাঁচতারা হোটেলসহ পার্ক নির্মাণ বন্ধের আহ্বান

৫৩

॥ আকাশ মার্মা মংসিং, বান্দরবান ॥

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এ্যামনেষ্টি ইন্টান্যশনাল বান্দরবানের চিম্বুকে ম্রো জাতি গোষ্টির চিরায়ত ভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে পাঁচতারা হোটেল ও পার্ক নির্মাণে উদ্বেগ প্রকাশ করে ম্রো আদিবাসীদের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং, এমপি’র খোলা চিঠিও দিয়েছেন।

সুত্রে জানা যায়, গত ২২ নভেম্বর (রবিবার) সংগঠনটির দক্ষিণ এশিয়া শাখার প্রধান ওমর ওয়ারাইচ স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানে চিম্বুকে ফাইভ স্টার হোটেল নির্মাণ ম্রো আদিবাসীদের চিরায়ত ভূমি থেকে থেকে উচ্ছেদ করবে। চিম্বুক ও থানচির রাস্তার ধারে নির্মিত হতে যাওয়া বিলাসবহুল এ ফাইভ স্টার হোটেল ম্রো আদিবাসীদের গ্রামগুলি নিশ্চিহ্ন করে দেবে। হাজার হাজার ম্রো উচ্ছেদ হবে এবং ম্রো আদিবাসীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক কাঠামোগুলোকেও ধ্বংস করে দেবে। হোটেলটি নির্মাণের ফলে এই অঞ্চলের ম্রো এবং অন্যান্য আদিবাসীদের পবিত্র স্থান, বন, জঙ্গলের সম্পদ এবং জীববৈচিত্র্যের চরম ক্ষতি হবে বলেও সংস্থাটি উদ্বেগ জানিয়েছন। এই পরিস্থিতিতে আদিবাসীদের অধিকার সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা, তাদের নিজস্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের পরিবর্তে পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ সরকারের দায়িত্ব এবং প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন বলেও মনে করে সংগঠনটি।

উক্ত চিঠিতে আরও বলা হয়, হোটেল এবং পর্যটন স্থাপনার সাথে যুক্ত প্রকল্পগুলি ম্রো আদিবাসীদের প্রথাগত আইন-কানুন লঙ্ঘন করে শেষ পর্যন্ত কমপক্ষে ৮০০ একর জমি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দখল করতে পারে। এই পদক্ষেপ আইএলও আদিবাসী কনভেনশন, ১৯৫৭ এর আওতাধীন এই জনগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি, সম্পত্তি এবং শ্রম রক্ষার বাংলাদেশের যে প্রতিশ্রুতি তাও লঙ্ঘন করে। এই কনভেনশনের ১১ অনুচ্ছেদে আরও বলা হয়েছে যে, এইসব জনগোষ্ঠীসমূহ ঐতিহ্যগতভাবে ভোগদখল করে থাকেন এমন ভূমির উপর সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর সদস্যদের মালিকানার অধিকার, সমষ্টিগত বা ব্যক্তিগত অধিকার এর স্বীকৃতি দেওয়া হবে, এবং ধারা ১৩ (২) এর বিধানে রয়েছে যে, এরূপ জনগোষ্ঠীর সদস্যদের মালিকানাধীন ভূমির মালিকানা অথবা ব্যবহার সুরক্ষিত করার জন্য এই জনগোষ্ঠীর সদস্যদের পক্ষে এইসব প্রথার অথবা আইন-কানুন বোঝার অভাবের সুযোগ গ্রহণ থেকে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর সদস্য নয় এমন ব্যক্তিদের রোধ করার ব্যবস্থা করা হবে।

‘তদুপরি আদিবাসীদের মালিকানাধীন ভূমির উপর হোটেল নির্মাণের উদ্যোগ বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশ এর প্রতি বাংলাদেশের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে লংঘন করবে।

তাই অবিলম্বে চিম্বুক-থানচি এলাকায় বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণ পরিত্যাগ করা এবং ম্রো আদিবাসীদের জমিতে কোনো নির্মাণ বা স্থাপনা তৈরী বা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আদিবাসীদের স্বাধীন ও পূর্বঅবহিত সম্মতির প্রতি সম্মান জানানো নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার আইনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি অনুসারে আদিবাসীদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা ও বিকাশ করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়।

 

এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় ম্রো জাতি গোষ্টিসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতি গোষ্টি প্রতিবাদসহ সমাবেশ করেছেন। সেই সাথে রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ ও পাঁতারা হোটেল এবং পার্ক নির্মাণ বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অপর দিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল এর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, এমপিকে দেয়া খোলা ঠিঠি ম্রো তথা অন্যান্য জাতিগোষ্টির উন্নয়ন এবং তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং তার বিকাশে বলিষ্ট ভুমিকা রাখবে। এখানকার জাতীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং প্রগতিশীল সমাজ এ চিঠিকে বাস্তবতার পক্ষে বস্তুনিষ্ট যৌক্তিক বলে মনে করছেন। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্রো তথা অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্টির অধিকার প্রতিষ্টায় সরকার অবশ্যই সুনজর দেবে বলে আশা প্রকাশ করছেন।