পৌরকর আত্মসাতের অভিযোগ
দুদকের মামলায় কারাগারে রাঙ্গামাটির সাবেক পৌর হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় রাঙ্গামাটি পৌরসভার সাবেক হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ সাকুর মিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলা জজ আদালত। বুধবার (২৮অক্টোবর) উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনের জন্য রাঙ্গামাটি জেলা দায়রা ও জজ আদালতে জজ নুরুল ইসলাম এর আদালতে আত্মসমপর্ণ করে জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাঙ্গামাটি জেলা দায়রা ও জজ আদালত সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রে আরো জানা গেছে, সাকুর মিয়ার বর্তমান কর্মস্থল চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভায় এবং মামলার অন্যতম আসামী সাবেক পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম ভূট্টো আগে থেকেই জামিনে রয়েছেন। মামলায় অন্য আসামীরা হলেন, রাঙ্গামাটি পৌরসভার কর আদায়কারী নির্মল কান্তি দাশ ও হিসাব সহকারী মোঃ নুরুল আমিন।
আদালতে দাখিল করা এই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে,সংশ্লিষ্টরা রাঙ্গামাটি পৌরসভায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে পরস্পর যোগসাজসে ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি পৌরসভার ভ্যাট ও আয়কর বাবদ মোট ১৯ লাখ ৮৮ হাজার ৮৪৭ টাকা ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলনপূর্বক টাকা চালানের মাধ্যমে সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান না করে আত্মসাত করে দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দূদকের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ভ্যাট ও আয়কর বাবদ উপরোল্লেখিত টাকা উত্তোলনের পর উক্ত টাকার মধ্য থেকে ৫টি চালানের মাধ্যমে মোট ৭.৩৮.৭৪১ টাকা সরকারী কোষাগারে নির্দিষ্ট কোডে জমা দেওয়ার জন্য চালানগুলোতে পৃষ্ঠাংকনকারী কর্মকর্তা হিসেবে তৎকালীন মেয়র মোঃ সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর তারিখ বিহীন স্বাক্ষর গ্রহণ করা হলেও আসামী হিসাররক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ সাকুর মিয়া উক্ত টাকা জমা প্রদান না করে তা আত্মসাত করেন। দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পর গত ১৬/০৭/২০১৭ তারিখে উক্ত ৫টি চালানে মেয়র সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর স্বাক্ষর কেটে দিয়ে তদস্থলে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সাকুর মিয়া নিজে স্বাক্ষর করে উক্ত পরিমাণ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে আত্মসাত করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এই বিষয়ে দুদক প্রধান কার্যালয় ঢাকার স্মারক নং০০.০১.৮৪০০.৬২৬.০১.১০৭.১৮/রাঙ্গামাটি/১৩৮৭৪/১ তারিখ: ১৪/০৭/২০২০ ইং মোতাবেক অনুমোদন রয়েছে। এব্যাপারে অন্যান্য অনুসন্ধান ও মামলা তদন্ত কার্যক্রমে আরো কারো সম্পৃক্ততা পেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে উক্ত মামলার এজাহারে।
এই মামলার বাদী জিএম আহসানুল কবীর কর্তৃক টাইপকৃত এজাহার গত ১২ তারিখ বিকেলে প্রাপ্ত হয়ে দুদক সমন্বিত কার্যালয় রাঙ্গামাটির মামলা নং-০২ তারিখ ১২/০৮/২০২০ইং ধারা দন্ডবিধি ৪০৯/১০৯তৎসহ ১৯৪৭ সালের দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় এই মামলা রুজু করেন সহকারী পরিচালক মোঃ আবুল বাশার।
দুদক রাঙ্গাামাটি সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন আহমেদ এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের গত ১৩ই আগষ্ট বৃহস্পতিবার এই মামলাটি দায়ের করেছেন রাঙ্গামাটি দুদক এর সহকারী পরিচালক মোঃ আবুল বাশার। মামলাটি গ্রহণ করেন রাঙ্গামাটির ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ এর দায়িত্বে থাকা যুগ্ম জেলা জজ সাইফুল এলাহি। মামলা নাম্বার ৪/২০, তারিখ:১৩/০৮/২০২০ইং।