[vc_row][vc_column css=”.vc_custom_1596871563159{margin-bottom: 0px !important;}”][vc_column_text css=”.vc_custom_1596874329023{padding-top: -30px !important;}”]

শিরোনাম
বান্দরবানের লামায় নামে-বেনামে অভিযোগে বেকায়দায় বন বিভাগসাংবাদিকদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা দেয়া জরুরিহালদা নদী বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণকাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট দিয়ে আবারো ছাড়া হচ্ছে পানিমানিকছড়িতে নৈতিকতার আলো শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিতরাঙ্গামাটিতে ৩৫ কাঠুরিয়া সহ পাহাড়ের সকল গণহত্যার বিচার দাবিরাঙ্গামাটির লংগদুতে ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার বিচারের দাবীতে আলোচনাসভাবাঘাইছড়িতে জেন্ডার ভিত্তিক জনসচেতনতা কার্যক্রম সভা অনুষ্ঠিতরাঙ্গামাটি ফাউন্ডেশন এর কাপ্তাইয়ে অবহিতকরণ সভারাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের ১ সদস্য সহ ৯জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা
[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]

চোখে মুখে হাসির ঝিলিক

পাহাড়ে জুমের ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত জুমিয়ারা

৬৮

॥ আকাশ মার্মা বান্দরবান ॥

বান্দরবান জেলার পাহাড় জুড়ে জুমের ধানে সবুজ পাহাড়,এখন সোনালি রুপ ধারণ করেছে। এর খুশিতে জুমচাষীরা আত্মহারা হয়ে তাদের চোখে মুখে বিরাজ করছে হাসির ঝিলিক। জুমের ফসল ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে জুমিয়ারা। শিশু কিশোরসহ পরিবারের কেউই বসে নেই ঘরে। পরিবারের সবাই জুমের ধান কাটতে নেমেছে পাহাড়ে।

জুমচাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাহাড়ীদের আদিপেশা জুম চাষ। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদমসহ ৭টি উপজেলায় বসবাসকারী পাহাড়ী পরিবারগুলো প্রায় সকলেই জুম চাষ করে থাকে। জেলার মারমা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, খুমী, লুসাই, পাংখো, বম, চাকসহ ১১টি সম্প্রদায়ের অধিকাংশরাই জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। জুমের উৎপাদিত ধান থেকে বছরের ১২ মাসের মধ্যে অন্তুত ৮ মাস তারা খাদ্যের জোগান মজুদ করেন জুমচাষীরা। পার্বত্য জেলার জুমচাষীরা প্রতিবছর জেলার বিভিন্ন এলাকায় শত শত পাহাড়ে জুম চাষ করে ,তবে ব্যতিক্রম হয়নি এবারও।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শেষের দিকে শুরু হয় জুমে ধান লাগানোর প্রক্রিয়া। প্রায় ৩-৪ মাস পরির্চযার পর সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিক থেকে পাহাড়ে জুমের ধান কাটা শুরু করে জুমিয়ারা। শেষ হয় অক্টোবর মাসে। তাই জুমের ফসল ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে জুমিয়ারা। শিশু কিশোরসহ পরিবারের কেউই বসে নেই ঘরে। পরিবারের সবাই জুমের ধান কাটতে নেমেছে পাহাড়ে। এছাড়াও জুমে ধানের পাশাপাশি ভূট্টা, মরিচ, যব, সরিষা, মিষ্টি ও চাল কুমড়া, চিনার, বেগুন, কাকন ধান, মারফা, তিল, পুঁইশাক ও টকপাতাসহ হরেক রকমের শাক সবজি চাষ করেছেন। পর্যাপ্ত বৃষ্টি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জুম চাষ হয়েছে।

বান্দরবানের সদরের বাঘমারা এলাকার জুম চাষী মং মারমা জানান, এবছর আবহাওয়া ভালো থাকায় জুমের ফসল ভাল হয়েছে। নিজেদের জন্য রেখে বাকী ধান বিক্রি করে ভাল টাকাও আয় করতে পারবেন।

চিম্বুক এলাকার জুম চাষী ম্যানলে ম্রো বলেন, জুমের ফলন ভাল হওয়ায় খুব খুশি লাগছে। তাদের পরিশ্রমও সার্থক হয়েছে। শান্তিতে চলবে সংসার।

বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক ড.একে এম নাজমুল হক বলেন, জুমে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতের ধানের ফলন বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষি অধিদপ্তর কাজ করছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিবছর জুম চাষ করা হলে সারা বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর র্মাচ-এপ্রিল মাসের দিকে জুম চাষের জন্য পাহাড়ে আগুন দেয় জুমিয়ারা। আর মে-জুন মাসের দিকে আগুনে পোড়ানো পাহাড়ে জুম চাষ শুরু করে। ১১ টি পাহাড়ী জনগোষ্টীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জুমচাষ করে ম্রো সম্প্রদায়। আর আদিকাল থেকে এখনো পর্যন্ত জুম চাষের মাধ্যমেই সারা বছরের জীবিকা সংগ্রহ করে ম্রো’রা। ফসল ঘরে তোলার আনন্দে পাহাড়ী পল্লীগুলোতে চলছে এখন নবান্ন উৎসবও। গোত্র ভেদে পাহাড়ীরা উৎপাদিত ফসল দেবতাকে উৎসর্গের মাধ্যমে এই নবান্ন উৎসব উদযাপন করে থাকে।