॥ চট্টগ্রাম ব্যুরো ॥
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলাস্থ আবুরখীল অমিতাভ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী ১১ বছরের শিশু ধর্ষণের মামলায় অবশেষে ধর্ষক সাধন বড়ুয়াকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কগনিজেন্স আদালতে হাজির করা হলে আদালত ধর্ষককে জেলা হাজতে প্রেরনের আদেশ দেন। এর আগে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) শাহাদাত হোসেন।
গত ৫ অক্টোবর সোমবার শিশু ধর্ষণের অভিযুক্ত সাধন বড়ুয়াকে রাউজান উপজেলার এক প্রভাবশালী ব্যাক্তির আশ্রয়স্থল থেকে র্যাব-৭ এর সিপিসি-২ হাটহাজারী ক্যাম্প এর সদস্যরা তাকে আটক করেন। গত শনিবার ৩ অক্টোবর বিকেলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে রবিবার ৪ অক্টোবর থানায় মামলা দায়ের করা হলেও রাউজান থানা পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন ঐ শিশুর পরিবার। পরে ৫ অক্টোবর র্যাবের অভিযানে ধর্ষক সাধন বড়ুয়াকে আটক করা হলে সন্ধ্যা ৭টায় শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে রাউজান থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। আটকের পরে রাত ১১টার দিকে ধর্ষক সাধন বড়ুয়াকে রাউজান থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে র্যাব।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ১১ বছরের মাতৃহারা শিশুটি তার পিসির বাড়ীতে পড়াশোনা করত। ঐ গ্রামেরই মৃত যামিনী বড়ুয়ার পুত্র সাধন বড়ুয়া মাতৃহারা শিশুটিকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষন করে আসছিলো। ৩ অক্টোবর শনিবার শিশুটিকে তাদের পুকুর পাড়ে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষন করে ৫ শত টাকার নোট ধরিয়ে দেয় ধর্ষক সাধন বড়ুয়া। ৫শত টাকার নোটটি শিশুটির হাতে দেখে তার পিসি জিজ্ঞাসাবাদ করলে শিশুটি সাধন বড়ুয়ার দ্বারা একাধিকবার ধর্ষনের শিকার হওয়ার কথা স্বীকার করে। পরে তার পিসি শিশু কণ্যা ধর্ষণের দায়ে ন্যায় বিচারের আশায় ৪ অক্টোবর রাউজান থানায় ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলেও নানা অজুহাতে পুলিশ মামলা নিতে বিলম্ব করেন। পরে র্যাব এর স্থানীয় ক্যাম্পে অভিযোগ করা হলে র্যাবের অভিযানে ধর্ষক সাধন বড়ুয়াকে আটক করা হয়। র্যাব এর চাপের মুখে গতকাল ৫ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে মামলা নেয় রাউজান থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে র্যাব-৭ সিপিসি-২ হাটহাজারী ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মুশফিক জানান, শিশু ধর্ষণের অভিযোগ পেয়ে র্যাব অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত সাধন বড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে রাউজান থানায় সোপর্দ করা হয়।
ধর্ষনের শিকার শিশুটির পিতা বলেন, এতবড় জঘন্য ঘটনার শিকার হয়েও এখন আসামীর মত জীবণযাপন করছি। প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। প্রভাবশালীরা যেকোন সময় তাদের উপর হামলা করতে পারে। তাই প্রশাসনের সহযোগিতা চান বলে ধর্ষিত শিশুটির পিতা জানান।
অপর দিকে শিশুটির জেঠু নির্মল বড়ুয়া মিলন বলেন, ৪ অক্টোবর রবিবার মামলা দায়ের করলেও কিন্তু রাউজান থানা পুলিশ এজাহার পরিবর্তন করে নতুন করে ৫ অক্টোবর মামলা রেকর্ড করেন। এই এজাহারে অভিযুক্ত সাধন বড়ুয়ার বয়স পরিবর্তন করে ৬০ বছরের স্থলে ৭৫ বছর করে এজাহার সংশোধন করেন। তিনি গ্রাম্য শালিসের নামে ভুক্তভোগীদের হয়রানীর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন শালিসকারীদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।