কোন মানুষ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য তাকে কাঁদে করে নিয়ে যেতে হয়
বান্দরবানের আলীকদমে গ্রামীণ সড়কের বেহাল অবস্থা, বাড়ছে ভোগান্তি
॥ সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাঁ,আলীকদম ॥
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ০৬ নং ওয়ার্ড তারাবুনিয়া চারাবতলী – আথুশে মার্মা (কাবারী)পাড়া, মংহ্লা পাড়া, সুরেজ কার্বারী পাড়া যাতায়াতের গ্রামীণ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। প্রতিনিয়ত ভারী যানবাহন চলাচল করার কারণে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে গ্রামীণ এই জনপদ । স্থানীয় পথচারী, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ স্থানীয় জনসাধরণ ককে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, শনিবার ( ৩ অক্টোবর ২০২০) উপজেলার ২ নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের আথুইশে কার্বারী পাড়া, কর্মকার পাড়া, মসুলিম পাড়া, মংহ্লা পাড়া, সুরেজ কার্বারী পাড়া, হামিদ মেম্বার পাড়াসহ এই বৃহত্তর এলাকার মানুষ গুলো এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন কিন্তুু দীর্ঘ ১ যুগ পূর্বে নির্মিত হওয়া গ্রামীণ সংযোগ সড়কটি সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেই সাথে ভারী বর্ষণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে বড় বড় গর্তের সৃষ্টির হয়। পাশাপাশি রাস্তার মধ্যে জমে থাকা পানিতে সড়কের অনেকাংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই সড়কটি আলীকদম সদর থেকে ৩ কিলো ৫০০ মিটার হওয়া শর্তেও সড়কটির বেহাল অবস্থা।
এছাড়াও উক্ত সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত এবিএম ব্রিক ফিল্ডের ১০/২০ টি ইট পরিবহনকারী ছোট বড় ট্রাক,ডাম্বার গাড়ী, কাট বোঝাই ও মাতামহুরী নদী থেকে অবৈধ বালি ভর্তি ডাম্পার চলাচল করায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে এ গ্রামীণ সড়ক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বলেন, আলীকদম চকরিয়া সড়ক থেকে আথুইশে কার্বারী পাড়া, মংহ্লা পাড়া এলাকার দুরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে এ যাতায়ত পথ দিয়ে গাড়ি যোগে স্কুলে পৌঁছতে সময় লাগতো ১০-১৫ মিনিট। বর্তমানে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সময় লাগে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা। এ অবস্থায় করোনায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। তিনি দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবী জানান।
উক্ত এলাকার গ্রাম প্রধান আথুশে মার্মা কার্বারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বৃহত্তর চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষি উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বাজারজাত করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এই এলাকায় বর্তমান সরকারের আমলে কোন ধরণের উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এই মার্মা গ্রামে। মার্মা পাড়া হইতে চারাবতলী -আলীকদম- চকরিয়া সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়া এবং অনুমতি বিহীন এবিএম ব্রিক ফিল্ডের ছোট বড় ট্রাক, ডাম্পার, অবৈধ কাঠ ভর্তি ট্রাক ও বালি ভর্তি ভারী যানবাহন চলাচল করার কারণে বর্তমানে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার ফলে উক্ত এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজত করতে নানানমুখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। বিগত সময়ে আমি সড়কটি সংস্কার করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি কিন্তুু সড়ক টি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
চারাবতলী এলাকার মোঃ আব্দুর রহিম ও মোঃ করিম উদ্দীন বলেন, গত ১০ বছর পূর্বে সড়কটি সংস্কার ১ বার সংস্কার করা হয়েছে, এখন এবিএম ব্রিক ফিল্ডের ভারী ট্রাক ও ডাম্পার, লাকড়ীর গাড়ী চলাচলের কারণে ব্যাপক ভাবে ক্ষতি গ্রস্হ হয়েছে এই সড়ক টি, সড়কটির অনেক ব্রিজ, কালবার্ট ভেঙ্গে গেছে, সড়কের উপর বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, যদি এই গুলো মেরামত করা না হয় তাহলে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ জাহের হোসেন মেম্বার বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে সড়কটির এ করুন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের সংস্কার কাজ করার জন্য এলজিডি কর্তৃপক্ষে অনুরোধ জানান।
সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান শফিউল আলম মেম্বার জানান, ব্রিক ফিল্ডের ডাম্পার গাড়ী, বালুর গাড়ী, লাকড়ী গাড়ী চলাচলের কারণে এই সড়কের এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আথুশে কার্বারী পাড়া, কর্মকার পাড়া হইতে চারাবতলী সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তায় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এবং হালকা বৃষ্টি হলে সড়কে পানি ঝমে থাকে, রাস্তায় অনেক অংশে ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেছে । তাই স্থানীয় প্রশাসনের নিকট দাবি করছি সড়কটি দ্রুত মেরামত করার উদ্যোগ নেয়ার জন্য।