পাহাড়ী দাদুর দুরবীণ হইতে মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মা’র নিকট খোলা চিঠি-১৮

মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মা’ পত্রের শুরুতেই আমি পাহাড় চুড়া, টিলা-নালার অভাগা, পোড়াকপাইল্লা, অধম, বেকুব লাঠি দ্বারা চলিত পাহাড়ী দাদুর হাজার কুঠি আদাব, নমস্কার ও সালাম গ্রহন করিবেন। আশা করি মহান সৃষ্টি কর্তার অপার কৃপায় সোনার বাংলার প্রায় দেড় ডজন কুঠি মানুষ অ-মানুষ লইয়া আপনি কোন রকুম দিন যাপন করিতেছেন। আমিও তিন পাহাড়ী জেলার ষোল লাখের অধিক নর-নারী লইয়া পাহাড়ের তলায়, নালায়, চিপায়, কাপ্তাই হ্রদের ধারে, উপরে টং বানাইয়া, জানপরান হাতে লইয়া, মুক্তিপন আর চাঁন্দা দিয়া, মাথা ফাঠাইয়া, ব্রাশ ফায়ার খাইয়া, লুটপাঠ আর ঠেলা গুতোর পাহাড় পর্বতে গড়াগড়ি করিয়া, খাইয়া না খাইয়া কোন রকুমের বাঁচিয়া থাকিয়া এই পোড়াকপাইল্লা অধম, বেকুব পাহাড়ী দাদুর ভাঙ্গা দুরবীন হইতে আপনার দরবারে কিছু জানাইতে, পাহাড় পর্বত লইয়া ভাবিতে, ভাবাইতে, আগাইতে, ফাঁফিয়া, হাঁপিয়া, কাঁপিয়া, আইজ পর্যন্ত ১৯ নম্বর চিঠিখানা লিখিয়াছি। তয় মা’গো দয়া করিয়া পাহাড়ের এই অভাগা পোড়াকপাইল্লা, অধম, বেকুব দাদুর খোলা চিঠিখানা আপনি একটু সময় দিয়া পড়িবেন, ভালোমন্দ বিচার বিশ্লেষণ করিবেন, আগাইবেন, হ¹ল দিক ঠিক রাখিয়া সুচিন্তিত ব্যবস্থা লইবেন। যাউ¹া, এইবার পর আলোচনা হইলো…

মা’জননীগো করুণাময় সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় আপনিতো ভালো মন্দে আপনার উপদেষ্টা, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী আর উপমন্ত্রী লইয়া দেশ পরিচালনা করিয়া যাইতেছেন। তয় মা’গো আপনি উন্নয়ন দ্রুত গতিতে চালাইলেও দেশ গেরামের দাদু-দিদিরাতো রাক্ষস খোক্ষসের পল্লায় পড়িয়াছে। দেশে মানুষ সৃষ্ট অত্যাচার, নারী-নির্যাতন, ধর্ষন-হত্যা, দূর্নীতির ঘটনায় মনে হইতেছে জানোয়ারের বিচরণ বাড়িয়াছে। মাদক ইয়াবার মতন ধর্ষন ঘটনারও বিন্দু টলারেন্স ঘোষণা করেন। দূর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখেন। এইসব বধ্ করিতে আপনার মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, ডিসি, এসপি, আইনশৃংখলা বাহিনী, গুরিন্দা বাহিনীরে কড়া ওয়ার্ডার অব্যাহত রাখিবেন।

পরম শ্রদ্ধেয় মমতাময়ী, রাজনৈতিক বিজ্ঞ, অকুতোভয় শাসন কর্তা, বিশ^ নেতা মা’জননীগো এই পাহাড়ের চুড়ায় থাকিয়া পাহাড় সমতল হ¹ল কোনার খবরাখবর লইয়া আপনার দরবারে প্রতি এক পক্ষে লিখিয়া যাইতেছি, তয় মা’গো কোন কোন সময় চোখে ঝাপসাও দেখি। পার্বত্য চট্টগ্রামেও দূর্বৃত্তরা আধিপত্য, চাঁন্দাপথ্য, ঘায়েলপথ্য, দখলপথ্যসহ নানান অপকর্মপথ্যের বিস্তার লইয়া খালি ফটর ফটর করিয়া মানুষ মারিয়াই যাইতেছে। দুর্বৃত্তরাতো মাদার ডিস্ট্রিক্টের রাজস্থলীতে তিন জনকে খতম করিয়াছে। পাহাড়েতো জীবন সাঙ্গের গননায় খালি যোগই হইতেছে। মা’গো চরম নরম ভক্তের অধিকারী দূর্বৃত্তগোর লাগাতার অত্যাচারে পাহাড়ের অসহায় দাদু-দিদিরা আমস্বত্ত। অসহায়রা সৃষ্টিকর্তারে রাইত দিন জবিতে জবিতে জানপরান এই আছে এই নাই অবস্থা। দূর্বৃত্তরা পাহাড়কে যেইভাবে পিষ্ট করিতেছে দাদু-দিদিরা উপায়ান্তর না দেখিয়া চোখের জল ফালাইতে ফালাইতে, বুক চাপড়াইতে চাপড়াইতে উপরে করুনাময় সৃষ্টিকর্তারে, নীচে আপনি মমতাময়ী, রাজনৈতিক বিজ্ঞ, অকুতোভয় শাসন কর্তা, বিশ^ নেতা’র দরবারে দুইহাত তুলিয়া খালি মিনতি জানাইতেছে। দয়া করিয়া পাহাড় পর্বতের মানুষ বাঁচাইতে, আকামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা লইতে একটু সময় দেন, তিন পাহাড় পর্বত লইয়া ভাবেন, গবেষণা করেন, এইসবের কারন কি চিহ্নিত করেন।

মা’জননীগো তিন পাহাড়ে জেলা আমামীলীগের সম্মেলন লইয়াতো বহুত লুকোচুড়ি চলিতেছে। মাদার ডিস্ট্রেক্টের সম্মেলন লইয়া দলের বহুতে খুশি হইলোও পুরনোরাই আবরো থাকিতে তলে তলে কলকাঠি নাড়াইতেছে। ইস্যু খুঁজিতেছে সম্মেলন বন্ধ করিতে। মাওলা দাদুতো কহিলেন কেন্দ্রীয় সম্পাদক কর্তার আদেশ ক্রমে রাঙ্গামাটির সম্মেলন নাকি পিছানো হইয়াছে। মা’রে পিছানোর পিছনে শাসাঁনোর কাম চলিতেছে বলিয়া দলে বহুতের সন্দেহ। জেলা সেক্রেটারী মুছা দাদু নাকি সাবেক এমপি চিনু দিদির বিরুদ্ধে কতোয়ালীতে অভিযোগ দাখিল করিয়াছে। মাদার ডিস্ট্রিক্টের নের্তৃত্ব কিভাবে চলিতেছে, কে কারে মান্য করিতেছে এখন পুরিস্কার। অযোগ্যদের যখন যোগ্য বলিয়া চালানো হইলে দলের ভাবমূর্তি এইরকমই হয়। তয় মাদার ডিস্ট্রিক্টের নের্তৃত্ব যোগ্যদের দিয়াই চালাইতে ব্যবস্তা লইবেন।

দুর্নীতিতো ওষ্টে পিষ্টে লাগিয়া রহিয়াছে। সারা দেশের ন্যায় পাহাড় পর্বতেও উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা ললিপপের মতন চুষিয়া খাইয়াছে। আপনার দলের বহুত নেতা নেত্রীর নাকি এখন নিজের চাহিতে টাকার ওজনই বেশী হইয়া পড়িয়াছে। জেলা কমিটির কালাইয়া-সাদাইয়ারাতো শতউর্ধো কোটি টাকার মালিক বনিয়াছে। সংরক্ষিতের আমাগো সাবেক এমপি চিনু দিদির বহুত উন্নয়ন প্রকল্পতো নাই হইয়া গিয়াছে। তয় স্বতন্ত্র দাদুরও নাকি ঐ একই অবস্থা। মা’গো এরা হইলো চোরে চোরে মাসতুতো ভাই। তাইনেরা যেইভাবে উন্নয়ন দেখাইয়াছে তাহাতে পাহাড়ের মানুষ স্বর্ণে মোড়ানো পরিবেশে দিন পার করনের কথা। মাদার ডিষ্ট্রিক্টে আমামীলীগে লুটেরা, লুইচ্চাগোর হাতে নেতৃত্ব যাইয়া এখন দলের বারোটা বাজাইতেছে। দলের নেতৃত্ব কর্তৃত্ব আর উন্নয়ন এইসব রক্তচোষা জোঁকের দলের হাতেই বন্ধী। পাহাড়ে উন্নয়নের নামে ক্যাসিনোর মতন মহা কেলেংকারী রহিয়াছে। দলের এক দাদুতো কহিলেন দুদকের হাতে মাদার ডিষ্ট্রিক্টের নাকি দশ বারোজনের নাম জমা পড়িয়াছে। দয়া করিয়া লুটেরা এইসব রক্তচোষা জোঁকের দলের নেতা-নেত্রীগোরে টান দেন। দূনীতির বিরুদ্ধে তিন পাহাড়েও স্ট্রীম রোলার চালান দেখিবেন ফত ফত করিয়া বাহির হইবে। দাদুর এই পরামর্শখানা কাজে লাগাইবেন।

আমাগো মাইয়া নুসরাত হত্যার বিচার রায় উচ্চ আদালতেও বহাল রাখিতে অনুরোধ করিবেন। দেশের দাদু-দিদিরা ওসি মোয়াজ্জেম সাহেবদেরও খবর জানিতে অধির আগ্রহে রহিয়াছে। এখন তনু-মিতুসহ অসংখ্য মা বোনের কথাও মনে পড়িতেছে। সকল নারী নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষন ঘটনার বিচার এইভাবেই দ্রুত করেন। আইনের শাসন নিশ্চিত করিতে কঠোর হইবেন। দেশ ও জাতির উন্নয়নে হাইকোর্ট এর উপদেশ, আদেশ, নির্দেশ মানিয়া কাজ করিবেন। হুট করিয়া ঢাকা ও সাতক্ষীরায় ছয় জঙ্গির আটক ঘটনাতো চিন্তার বিষয়।

মা’গো রেল দূর্ঘটনার কান্ড লইয়া দেশের দাদু-দিরিাতো চিন্তিত। হাজার হাজার দাদু-দিদির পরান লইয়া যদি চালক ঘুমাই ঘুমাইয়াই গাড়ি চালায় রেল দাদুকেতো জবাব দিতেই হইবে। ভোলাকান্ডের যারা কলকাঠি নাড়াইয়াছে, পিছনের দরজায় কারা আছিল তাদের খবর কি। ভোলার মনপুরায় ধর্ষকদের তাড়াইয়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিজেই আবার গৃহবধুকে ধর্ষণ এর বিচারও দ্রুত করিবেন। লালমোহনে কূপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মোটর শ্রমিক জসিমকে প্রকাশে নিজ মেয়ের সামনে উলঙ্গ করিয়া পিটাইয়াছে একাধিক মামলার আসামী ভোলার আরেক বিষাক্ত ভোলা হাসান। এই বিষাক্ত হাসান ভোলাদের বিষ নামানো দরকার। বুয়েট ছাত্র আবার হত্যার চার্জশিটভুক্ত আসামীরা যাহাতে পার পাইয়া না যায় হেই দিক খেয়াল রাখিবেন। দেশেতো যেইভাবে নারী ধর্ষণ হইতেছে ঘটনার বিচার ৭২ ঘন্টার মইধ্যে শেষ করিতে দ্রুত উদ্যোগ লইবেন।

মা’জননীগো পেয়াঁজ লইয়া মহা দূর্নীতি ক্যাসিনোর ঘটনার মতন টান মারিলেই থলের বিড়াল নয় রীতিমতন বন বিড়ালও বাহির হইবে। ক্যাসিনোকান্ডেতো দুইশত জনের তালিকা এখন দুদকে। তয় ভাগের তালিকায় সাংবাদিকের নাম রহিয়াছে জাতির কাছে তাদের চেহারা তুলিয়া ধরনের দরকার। আমামীলীগের অনুপ্রবেশ লইয়া দলের যাহাতে কেউ তামাশা করিতে না পারে তার জন্য আমাগো সেতু দাদুরে সজাগ থাকিতে কহিবেন। মেনন দাদুর কথাবার্তায় বিজ্ঞ দাদুরাও মাথা চুলকাইতেছে। আমামীলীগ আকামকারীদের বটবৃক্ষ কি না দেশের বিজ্ঞ-অজ্ঞরা প্রশ্ন ছুঁড়িতেছে। হেই আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চরিত্র চেহারা আবারো পত্রপত্রিকায়। এই আজিজ ভাইদের ফাইজলামু কাইজ কাম তখনই বন্ধ করনের দরকার আছিল। ব্যারিস্টার তুরিন দিদির কাইজ কামতো মনে হইতেছে শষ্যের ভিতর ভুত।

মা’গো চাইলের ব্যবসায়ীরাও তলে তলে মহালুট চালাইয়া যাইতেছে। লবন লইয়া জালিয়াতি শুরু হইয়াছে। পেঁয়াজ জালিয়াতি সিনিন্ডকেটের সনাক্ত ১৬ ব্যবসায়ীকে জেল জরিমানা করিতে আদেশ করেন। সরকারের দেয়া চাইলের ডিও বিক্রি করিলে পাইতেছে ১৭/১৮ টাকা অথচ সেই চাইল কিনিতে গেলে ৪০/৪২ টাকা। চড়া দামের চাইল কিনিয়া দেশের দাদু-দিদিরাতো ভাতের মন্ড হইতেছে। চাইল লইয়া মহালুটের বিষয় খানা তদারক করিতে খাদ্য মন্ত্রীকে কড়া আদেশ করিবেন। দেশের বিশ^ বিদ্যালয়গুলোতে মনে হইতেছে ছাড়পোকার বিস্তার বাড়িয়াছে। শিক্ষকদের দলে বলে থাকনের দরকার কি তাইনেরাতো পড়ালেখার দলে থাকিবে। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের দোহা হলে ছাত্রলীগের আরেক টর্চারসেল কক্ষ ২৫৪ তাইজ্জব কান্ড। দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লইয়া হ¹ল তামাশা বন্ধ করিতে ওয়ার্ডার করেন।

আমাগো চট্টগ্রাম মহানগরীর বহুত স্থানে অবৈধ গ্যাস লাইন। এইসব লাইনতো বোমায় পরিনত হইয়াছে। নগরীর পাথর ঘাটার ঘটনার মতন আরো ঘটনা ঘটিয়া যাইবে। গ্যাস বিতরণ কুম্পানির ভিতরে চোর ডাকাতের সংখ্যা বাড়িয়াছে। ছাত্রলীগ নেতা সোহেল হত্যা নাকি পূর্বপরিকল্পিত। তয় এই হত্যাকান্ড লইয়া ঘুঁটা দেওনের দরকার। বাঁশখালীতে একই পরিবারের ১১জনকে পুড়িয়ে হত্যার বিচার ১৬ বছরেও শেষ হইলোনা কেন। লোমহর্ষক এই ঘটনার বিচার দ্রুত শেষ করিতে ওয়ার্ডার করেন। সেতু দাদুর হুশিয়ারীতে লুটেরা দূর্নীতিবাজরা সাবধান হইলে মানের উন্নয়ন ঘটিবে। কর্ণফুলীকে বাঁচাইতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ লইয়া কোন আপস নয়। পটিয়ায় পুলিশের রোহিঙ্গা বাবুচি সেবা করিবে না এক্কেবারে শেষ করিবে সন্দেহের বিষয়। মা’গো যারে একবার কুমিরে খায় সে ঢেঁকি দেখিয়াও ভয় পায়।

মা’গো জাতির অন্যতম অভিভাবক জেল হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্রের হোতাদেরও বিচার শুরু করনের দরকার। জাতি এই দায় হইতে মুক্তি চায়। মা’জননীগো তলে বলে শত্রুরা উঁকি ঝুঁকি মারিতেছে। আপনার মতন বিজ্ঞ মা’রে জ্ঞান দেয়া আমার মতন লাঠি দ্ধারা চলিত পাহাড়ী দাদুর জ্ঞান কতঠুকুই বা কাজে লাগিবে, তয় আপনার সবদিকেতো শত্রু আর শত্রু। হজাগ থাকিবেন, মানবতাবিরোধীদের ঘায়েল করিতে হার্ট লাইনে যাইবেন। মা’রে আইজও আর বেশী লম্বা করিতে চাহি না। পাহাড় চুড়া লইয়া এই অভাগার বুকের পাঁজরে বহুত ক্ষোভ, দুঃখ বেদনা জন্মিয়া রহিয়াছে, খোলাসা করিয়া আপনার দরবারে দু-চার কলম লেখিয়া পাবলিকের উপকার করিতে পারিলে জীবনের পরপারে যাইয়াও শান্তি। আইজ যা লিখিয়াছি কোন ভুলভ্রান্তি হইলে মনে কষ্ট দিলে এই অভাগা পোড়াকপাইল্লা, অধম, বেকুবরে ক্ষমা করিবেন। মা’রে প্রতি এক পক্ষে আপনার নিকট লিখা এই বেকুবের খোলা চিঠিখানা একটু সময় হাতে লইয়া পড়িবেন। আপনি ও দেশের ১৭ কুঠি দাদু-দিদির জইন্য আর্শিবাদ, দোয়া রইল, ভালো থাকিবেন, সব দিকে নিজের খেয়াল রাখিবেন।

ইতি, আপনারই কুঠি কুঠি মানুষের পোড়াকোপাইল্লা, অধম, বেকুব
পাহাড়ী দাদু
গ্রন্থনাঃ এস.এস.বি.এম, তারিখ- ২৪ নভেম্বর-২০১৯খ্রীঃ